ভারতে অনুমোদন পাচ্ছে মুখে খাওয়ার করোনা পিল

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ১১, ২০২১
০৩:৪৪ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ১১, ২০২১
০৩:৪৪ অপরাহ্ন



ভারতে অনুমোদন পাচ্ছে মুখে খাওয়ার করোনা পিল

মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতে অনুমোদন পেতে যাচ্ছে করোনাভাইরাসের মুখে খাওয়ার পিল মলনুপিরাভির। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এই অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধটিকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিতে যাচ্ছে দেশটি। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

মূলত করোনায় আক্রান্ত হয়ে হালকা থেকে মাঝারি অসুস্থ এবং যেসব প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির কোভিডের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, তাদের জন্য এই ওষুধ অনুমোদন দেওয়া হবে। এই ওষুধ ব্যবহারে রোগীর হাসপাতালে যাওয়া আটাকানো যাবে বলেও আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা।

মার্কিন ওষুধপ্রস্তুতকারক কোম্পানি মের্ক অ্যান্ড রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিকসের উদ্ভাবিত করোনা পিল মলনুপিরাভিরের উৎপাদন হবে ভারতেই। মলনুপিরাভির পিলকে কেবল জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে বলে বুধবার এনডিটিভিকে জানিয়েছেন ভারতের কোভিড স্ট্র্যাটেজি গ্রুপ সিএসআইআর’র চেয়ারম্যান ড. রাম বিশ্বকর্মা।

একইসঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ফাইজারও একই ধরনের একটি মুখে অ্যান্টি-ভাইরাল পিল আনছে। প্যাক্সলোভিড নামে সেই ওষুধ বাজারে আসতে এখনও কিছুটা সময় নেবে। মলনুপিরাভির ও প্যাক্সলোভিড করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এমনকি মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে করোনা টিকার চেয়েও এই দু’টি ওষুধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত ড. রাম বিশ্বকর্মার।

ভারতের কোভিড স্ট্র্যাটেজি গ্রুপের এই প্রধানের ভাষায়, যেহেতু করোনা পরিস্থিতি মহামারির পর্যায় থেকে ধীরে ধীরে নিচের স্তরে নেমে যাচ্ছে, ফলে টিকাদানের চেয়েও মুখে খাওয়ার এই ওষুধ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। মলনুপিরাভির ও প্যাক্সলোভিড ওষুধ দু’টিকে তিনি করোনাভাইরাসের ‘কফিনে শেষ পেরেক’ বলেও উল্লেখ করেছেন। 

ড. রাম বিশ্বকর্মা জানান, ভারতের ৫টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মলনুপিরাভির তৈরির অপেক্ষায় রয়েছে। যেকোনো দিন এই ওষুধের ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে। আর ছাড়পত্র পেলেই শুরু হয়ে যাবে ওষুধ উৎপাদনের কাজ।

এর আগে যুক্তরাজ্যের ওষুধ এবং স্বাস্থ্যসেবা পণ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এমএইচআরএ) করোনার ‘গেম চেঞ্জার’ ওষুধ মলনুপিরাভিরের ব্যবহার শুরুর সুপারিশ করেছে। সংস্থাটি বলেছে, করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় পজিটিভ ফল এবং উপসর্গগুলো প্রকাশিত হওয়ার পাঁচদিনের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ওষুধের ব্যবহার করতে হবে।

বিশ্বের প্রথম করোনার মুখে খাওয়ার অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ মলনুপিরাভির; যা যুক্তরাজ্যে ইতোমধ্যেই অনুমোদন পেয়েছে। মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এই ওষুধটির অনুমোদনের সবুজ সংকেত দিয়েছে।

করোনায় আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর সক্ষমতা মলনুপিরাভিরের রয়েছে বলেও জানিয়েছেন কোম্পানির কর্মকর্তারা। অন্যদিকে নিজেদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য সামনে এনে ফাইজার জানিয়েছে, তাদের প্যাক্সলোভিড ওষুধটি ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি বা মৃত্যুর আশঙ্কা ৮৯ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে।

সংবামাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, মলনুপিরাভির পিলটি প্রাথমিকভাবে ৭৭৫ জনের ওপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল। যেখানে দেখা গেছে, এই ওষুধটি সেবন করার পাঁচদিনের মধ্যে তাদের শরীরে করোনার উপসর্গ কমে অর্ধেক হয়েছে এবং হাসপাতালে ভর্তি ও করোনায় মৃত্যু কমেছে।

বি এন-০৩