হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
নভেম্বর ১৭, ২০২১
১১:৪৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ১৭, ২০২১
১১:৪৫ পূর্বাহ্ন
হবিগঞ্জে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ইটভাটা। চলছে ইট পোড়ানোর কাজ। এতে ভয়াবহ দূষণের শিকার হচ্ছে পরিবেশ, বাড়ছে রোগ-বালাই। পাশাপাশি বিনষ্ট হচ্ছে সরকারী রাস্তা, উর্বরতা হারাচ্ছে কৃষি জমি, নিধন হচ্ছে বৃক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মনে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ বিরাজ করলেও রহস্যজনক কারণে নির্বিকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, হবিগঞ্জ জেলায় গড়ে উঠেছে ১২০ ইটভাটা। এদের অধিকাংশেরই নেই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। বিশেষ করে জেলার বাহুবল ও চুনারুঘাট উপজেলায় ইটভাটার প্রায় সংখ্যা ৬৫। লোকালয়ের আশপাশে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে এলাকার পরিবেশ, বাড়ছে রোগ-বালাই। শুধু তাই নয়, এসব ইটভাটার মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের কারণে ধ্বংস হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারী রাস্তা।
আরও ভয়াবহ হলো, ইটের ভাটাতে ফসলি জমির মাটি ব্যবহারের কারণে উর্বরতা হারাচ্ছে হাজার হাজার হেক্টর কৃষি জমি। এ ছাড়া ইটভাটা গুলোতে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করায় উজাড় হচ্ছে এলাকার গাছগাছালি ও পাহাড়ি বনাঞ্চল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী, জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে অথবা নদীতীরে পতিত ভূমিতে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। জনচলাচলের রাস্তা তথা সরকারি সড়ক দিয়ে নয়, বরং ইটভাটার নিজস্ব রাস্তা দিয়ে চলবে মাটি বহনকারী ট্রাক্টর। সেসঙ্গে ইটভাটাতে খনন করতে হবে পুকুর। অথচ বাস্তবতা হলো, এর তেমন কোনো কিছুই মানছেন না প্রায় ভাটা মালিকরাই। মাটি বহনের ট্রাক্টরগুলো অনেক সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পর্যন্ত চলাচল করে। এতে জনসাধারণসহ যানবাহন চলাচলে সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা।
হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, হবিগঞ্জ জেলায় রয়েছে ৯৯টি ইটভাটা। তবে বেসরকারী হিসাবে, জেলায় ইটভাটার সংখ্যা ১২০টি।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলায় তালিকাভুক্ত ৯৯টি ইটভাটা রয়েছে। এর বাইরে অবৈধ ইটভাটা আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন- নিময়নীতি মেনে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। এখানে অনেকেই নিজেদের সুবিধামতে ইটভাটা নির্মাণ করে ব্যবসা করছেন। এ কারণে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ।
পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন- ইটভাটাতে যারা কাঠ পোড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আরসি-১৪