সজীব দেবরায়, কমলগঞ্জ
ডিসেম্বর ১২, ২০২১
০৪:৩৯ অপরাহ্ন
আপডেট : ডিসেম্বর ১২, ২০২১
০৪:৩৯ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে জরাজীর্ণ ভবনে ইউএনওসহ উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তাদের জন্য নির্মিত সরকারি আবাসিক ভবনও বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সাতটি ভবনের চারটিই জরাজীর্ণ। এর মধ্যে দুটি ভবন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৪ সালে উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন ও ১৯৮৪ সালে উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য বনবীথি, গেজেটেড কোয়ার্টার, কৃষ্ণকলি, কনকচাঁপা, কামিনী, ক্যামেলিয়া কোয়ার্টারসহ সাতটি ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবন।
এসব ভবনের দেয়ালে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও পলেস্তারা খসে পড়েছে। জরাজীর্ণ ভবনগুলোর পাশে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমেছে। অল্প বৃষ্টি হলেই কোনো কোনো ভবনের দেয়াল ও ছাদ চুইয়ে ভেতরে পানি পড়ে। কোয়ার্টারগুলোর ছাদের ঢালাই ভেঙে রড বের হয়ে গেছে। এমনকি দরজা-জানালাও ভেঙে গেছে। ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ এসব ভবনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বসবাস করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবার।
এসব ভবনে বসবাসকারীরা জানান, মৃদু ভ‚মিকম্পেও ভবনগুলো কেঁপে ওঠে। এসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেক কর্মকর্তা পরিবার নিয়ে বাইরে ভাড়া বাসায় থাকেন। আবার অনেকে পরিবার গ্রামের বাড়িতে রেখে মেসে থাকেন। এসব ভবন অপসারণ করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বসবাসকারীরা।
উপজেলা এলজিইডি অফিসের অফিস সহায়ক মো. শহীদ উল্লাহ বলেন, ‘ফ্লাড সেন্টারে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। আমাদের কোয়ার্টারে গ্যাস ও পানি নেই। জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে থাকতে হচ্ছে।
গেজেটেড কোয়ার্টারের বাসিন্দা উপজেলা এলজিইডি উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাকিব ও উপজেলা বিআরডিবি প্রকল্প কর্মকর্তা (পজিপ) মোর্শেদা খানম বলেন, ‘বৃষ্টি হলে ছাদ থেকে পানি পড়ে। দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে ফাটলও ধরেছে। ভেতরের অবস্থা এতটাই নাজুক, যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কোয়ার্টার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় আপাতত এটি নতুন করে নির্মাণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, ‘ভবনগুলো পর্যায়ক্রমে টেন্ডারের মাধ্যমে ভেঙে নতুন করে তৈরি করতে হবে। এগুলো মেরামত করলে হবে না। আমি থাকা অবস্থায় ভবনগুলো করে যাব। আমার থাকার বাসভবনটি ১৯৬৪ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল; বর্তমানে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এটি।’
কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রফিকুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের বড় ধরনের কাজগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে করা হয়। আমরা উপজেলা পরিষদ থেকে সর্বোচ্চ সাত লাখ টাকার কাজ করাতে পারি। এ ছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকেও কিছু ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।’
আরসি-০১