চাঁদার দাবিতে শ্রীমঙ্গলে রাস্তা বন্ধ, পাঁচ পরিবার অবরুদ্ধ!

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি


ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২২
০৮:০৭ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২২
০৮:০৭ অপরাহ্ন



চাঁদার দাবিতে শ্রীমঙ্গলে রাস্তা বন্ধ, পাঁচ পরিবার অবরুদ্ধ!

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শত বছর ধরে চলাচলের একটি সড়ক লোহার গেট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের লইয়ারকুল গ্রামের ৫টি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

অবরুদ্ধ পরিবারের এক জ্যৈষ্ঠ সদস্য গত শুক্রবার সকালে গুরুত্বর অসুস্থ হলে শ্রীমঙ্গল হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজনে গেটটি সড়িয়ে রোগীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এনিয়ে উভয় পক্ষ থেকে শ্রীমঙ্গল থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়েরের ঘটনা ঘটে।

অবরুদ্ধ হওয়া পরিবারের সদস্য মো. দুলাল মিয়া বলেন, বাপ দাদার পূর্ব পুরুষের আমল থেকে আমরা এই রাস্তা দিয়ে সাতগাঁও বাজার ও উপজেলা শহরে যাতায়াত করে আসছি। আব্দুর রহিম এর বাড়ির পাশ দিয়ে চলা রাস্তাটি প্রথমে মৌরসী সম্পত্তি ছিল। পরে তিনি রাস্তাটি রেকর্ড করে নেন। বন্দি হওয়া পরিবারগুলোর যাতায়াতের এ রাস্তাটি ছাড়া বাহিরে যাবার আর কোন বিকল্প রাস্তা নেই।

তিনি বলেন, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আব্দুর রহিম তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে চলায় রাস্তাটি তার মালিকানাধিন বলে দাবী করে চলাচলে বাধা দিয়ে আসছে। দুলাল মিয়া জানান, ২০১৮ সালের আগষ্ট মাসে ভাতিজির বিয়ের জন্য রাস্তায় বিয়ের গেট ও আলোক সজ্জা করলে তারা গেট ভেঙ্গে আলোক বাতি খুলে নিয়ে যায়। এনিয়ে থানায় অভিযোগ ও গ্রাম্য শালিস হয়। 

পরিবারের আরেক সদস্য বিলাল আহমদ জানান, বিবাদমান রাস্তার মাথায় লইয়ারগাং ললপতি ছড়ার পাশ দিয়ে একটি মেঠো রাস্তা সাতগাঁও বাজারে গেছে। এই ছড়ার পাশে আব্দুর রহিমের বাড়ির দেয়াল রয়েছে। পানির শ্রোতে দেয়ালটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে প্রায় সময় ছড়ার পাড় বাধার জন্য আমাদের কাছ থেকে দফায় দফায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা নেয়। সর্বশেষ কয়েকদিন আগে আব্দুর রহিম ছড়া পাড় বাঁধানো জন্য ৫ লাখ টাকা লাগবে বলে আমাদের কাছে ৭০ হাজার টাকা দাবী করে। আমরা দরিদ্র কৃষক। ফলে এই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আব্দুর রহিম রাস্তার মাঝামাঝিতে বাঁশের সাথে একটি লোহার গেট ঝুলিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়।

তিনি বলেন, আমরা পাঞ্চায়েত এর পরামর্শ ছাড়া গেট বন্ধ না করতে অনুরোধ করলে আব্দুর রহিম ও তার সহযোগী আব্দুল মুহিত (ফুল মিয়া মাষ্টার), মোখলেছুর রহমান হুমকি দিয়ে বলে গেট তালাবদ্ধ থাকবে। টাকা না দিলে এই গেট খোলা হবে না। এ অবস্থায় শুক্রবার আমার জ্যৈষ্ঠ ভাই ৫৬ বছর বয়সী আব্দুল কুদ্দুস হার্টের অসুখে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে গেট তালাবন্ধ থাকায় হাসপাতালে নেওয়া যাচ্ছিল না।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাবি চেয়ে পাঠালো আব্দুর রহিম জানায় সে গেটের চাবি নিয়ে শ্রীমঙ্গলের বাসায় অবস্থান করছে। এসময় রুগীর অবস্থা অবনতি হলে আমরা বাঁশের সাথে ঝুঁলানো গেটটি সড়িয়ে পাশের পুকুরের পাড়ে রেখে দেই। পরে রোগীকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। তিনি বলেন, সময়মতো রোগীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে দেরি হলে রোগীকে বাঁচানো যেত না।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল থানার এসআই নুরুল ইসলাম বলেন, রবিবার এ নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ। বিরোধ মেটাতে সন্ধ্যায় উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে।

আরসি-১৩