শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২
১২:১২ অপরাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২
১২:১২ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জে পুলিশের নির্যাতনের ঘটনায় নিহত উজির মিয়ার বাড়িতে সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব বিজয় তালুকদার।
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪ টায় পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের বাগেরকোনা শত্রুমর্দন গ্রামে নিহত উজিরের বাড়িতে গিয়ে উজির মিয়া গ্রেপ্তারের সময় প্রত্যক্ষদর্শী মা, স্ত্রী, শিশু মেয়ে ও চাচাত বোনের সঙ্গে একান্তে দীর্ঘ সময় কথা বলেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাতক থানার সার্কেল বিল্লাল হোসেন, পশ্চিম পাগলা ইউপি চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার, শান্তিগঞ্জ থানার ওসি কাজী মুক্তাদীর হোসেনসহ পুলিশ সদস্যবৃন্দ।
পরিদর্শন পরবর্তী উজির মিয়ার চাচাত ভাই গোলাম মোস্তফার সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, পুলিশি নির্যাতনে উজিরের মৃত্যুুর পর গতকাল শুক্রবার পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি উজিরের বাড়িতে এসে নিহতের ঘটনার খোঁজখবর নিয়ে গেছেন এবং প্রতিবেদনের আলোকে সবোর্চচ্ ন্যায় বিচারের আশ্বাস দিয়ে গেছেন। শনিবার বিকেলে অতিরিক্ত ডিআইজি উজিরের বাড়ীতে এসে তাহার পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে একান্তে আলাপ করে যাওয়ার সময় তিনি বলে গিয়েছেন উজিরকে পুলিশের গ্রেপ্তার থেকে শুরু করে থানা, হাসপাতাল বিজ্ঞ আদালত সবকিছু সমন্বয় করে মূল বিষয় উদঘাটন করে তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্ছ আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বিগত ১০ থেকে ১২দিন আগে একই উপজেলার দরগাপাশা এলাকা থেকে একটি গরু চুরি হযছিল। এতে পুলিশ এই চুরির অভিযোগে পাগলা এলাকার শত্রুমর্দন বাগেরকোনা গ্রামের উজির মিযাকে ০৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে শান্তিগঞ্জ থানার এস আই দেবাশীষ, এস আই পার্ডন কুমার সিংহ ও এস আই আক্তারুজ্জামান তাকে নিজ বাসা থেকে সন্দেহ মূলক আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
থানায় এনে তাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় শরীরের বিভিন্নস্থানে মারধর করে পুলিশ এবং পরের দিন বুধবার (১০ফেব্রুয়ারি) তাকে সুনামগঞ্জ আদালতে নিয়ে যাওয়া হলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে গুরুতর আহত উজির মিয়াকে প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর একসপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর আতœীয় স্বজনকে দেখানোর জন্য উজির মিয়াকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বাড়িতে নিয়ে আসার পর অবস্থার অবনতি হলে সোমবার সকালে স্থানীয় কৈতক হাসপাতালে নিয়ে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
মৃতের খবর পেয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারী তাৎক্ষনিকভাবে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজারে রাস্তার মধ্যে নিহত উজির মিয়ার লাশ রেখে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সুনামগঞ্জ সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক ৩ ঘন্টা অবরোধ করে রেখেছিলেন এলাকাবাসী।
পরে বিকালে সুনামগঞ্জের জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আনোয়ারুল হালিম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবু সাঈদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদেরকে আইনের আওতায় সর্বোচ্ছ বিচারের আশ^াস দিলে অবরোধ ভাঙ্গেন এলাকাবাসী।
বর্তমানে জেলা প্রশাসক কর্তৃক ৩ সদস্য বিশিষ্ট পৃথক ২ টি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে উজির মিয়ার নিহতের ঘটনার তদন্ত চলছে।
আরসি-১২