টিপু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজন আটক

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ২৭, ২০২২
০৩:৫৪ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ২৭, ২০২২
০৩:৫৪ অপরাহ্ন



টিপু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজন আটক

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে পুলিশ ধারণা করছে।

শনিবার বিকেলে তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ মিলেছে, আটক তরুণের গুলিতে টিপু নিহত হন। আরো দুজনকে ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ। তাঁরা ঘটনার মূল পরিকল্পনায় ছিলেন। পেশাদার একটি ‘কিলার’ গ্রুপ এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। সবাইকে আটকের পর সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আটক ওই তরুণ মূলত ভাড়াটে খুনি। মতিঝিল এলাকার বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার ঘনিষ্ঠ এই তরুণসহ অন্তত পাঁচ থেকে সাতজন এই হত্যাকাণ্ডে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকতে পারেন। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্ব শুরু হলে তাঁদের টাকার বিনিময়ে ভাড়া করা হয়।

তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানতে পেরেছেন, এঁরা শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিকের ঘনিষ্ঠ এবং শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ক্যাডার বাহিনীর সদস্য। এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে এঁদের ব্যবহার করা হয়। মতিঝিল এলাকায় এঁদের মতো অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী রয়েছে। এর আগে এঁদের হাতে আরো অনেকে খুন হন।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আটক যুবক ২০১৬ সালে মতিঝিল এলাকায় যুবলীগ নেতা রিজভী হাসান বাবু ওরফে বোঁচা বাবু হত্যাকাণ্ডেও জড়িত ছিলেন। বোঁচা বাবু হত্যা মামলায় এই যুবকসহ ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়। বোঁচা বাবুর বাবা টিপুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। সম্প্রতি ওই মামলা নিয়ে নতুন করে টিপুর সঙ্গে একজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার কিছু বিরোধ তৈরি হয়। তিনি ওই মামলার এক আসামির নাম বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেন। এতে বাধা দেন টিপু। বিষয়টি নিয়ে ওই নেতা শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিকের সঙ্গে কথা বলেন। এই শীর্ষ সন্ত্রাসীরা টিপুকে ফোন করে ওই নেতার নাম বাদ দিতে বললেও টিপু রাজি হননি। তিনি মামলা চালাতে বোঁচা বাবুর পরিবারকে সহযোগিতা করেন। এসবই টিপুর জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।

সূত্র জানায়, মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে বোঁচা বাবু হত্যা মামলা নিয়ে আসামিদের সঙ্গে আপস না করায় স্থানীয় রাজনীতিবিদদের একটি অংশের সঙ্গে সম্প্রতি টিপুর চরম বিরোধ তৈরি হয়।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ধারণা, টিপু হত্যাকাণ্ডে আরো কিছু কারণ থাকতে পারে। ২০১৩ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক মিল্কি হত্যা, ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ে বিরোধ, তিনটি বাজারকেন্দ্রিক চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে বাধা, এলাকার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব, এজিবি কলোনিতে দলীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধে টিপুকে হত্যা করা হতে পারে।

সূত্র জানায়, মতিঝিল এলাকার বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে এরই মধ্যে র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরো বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে।

আরসি-০৮