কবির আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ
এপ্রিল ০৮, ২০২২
০৪:০১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ০৮, ২০২২
০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন
সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর উজানে ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্টে অবস্থিত ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রে প্রধান আকর্ষণ সাদা পাথর চুরি হচ্ছে। সম্প্রতি রজমান মাসে পর্যটক কম থাকার সুবাদে রাতের আঁধারে চুরি হচ্ছে সাদা পাথর। এতে সৌন্দর্য হারাচ্ছে দেশের অন্যতম প্রকৃতিকন্যা ভোলাগঞ্জ পর্যটন কেন্দ্র। পাথর চুরির ঘটনায় গতকাল বুধবার পুলিশ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার ভোর রাতে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা ও পুলিশের একজন লাইন ম্যানকে চাঁদা দিয়ে ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রের পূর্ব পাড় থেকে পাথর চুরি করে উপজেলার কালাইরাগ ও কলাবাড়ীর এলাকায় ক্রাশার মিলে বিক্রি করা হয়। চুরি করে পাথর বিক্রির বিষয়ে একাধিক অডিও এবং ভিডিও প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
পর্যটন কেন্দ্রের পাথর চুরি ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে কোম্পানীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার সুকমল ভট্টাচার্যের। প্রশাসনের একাধিক ব্যক্তি ও স্থানীয়রা বলছেন, কয়েক দিন ধরে ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর চুরি হচ্ছে এবং এ ব্যাপারে থানার এসআই সুকমল ভট্টাচার্য অবগত আছেন। তিনি সুযোগ দিয়েছেন বলেই অপরাধীরা সরকারি সম্পত্তি চুরি করতে পেরেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রটি ভারত সীমান্তবর্তী। দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যদের সহযোগিতা ছাড়া এখান থেকে পাথর চুরি করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
পর্যটন কেন্দ্রের পাথর চুরি ঘটনা স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা জানতে পারায় তড়িঘড়ি করে পুলিশ চোরাইকৃত পাথরের একটি ট্রাক্টরসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছেন।
তথ্য অনুযায়ী সরেজমিন কলাবাড়ী এলাকায় অবস্থিত ক্রাশার মিলে গেলে দেখা যায়, পাথরবাহী একাধিক ট্রাক্টর দিয়ে পাথর পরিবহন করে মিলে রাখা হয়েছে।
নামপ্রকাশে অনুচ্ছিক সাদা পাথর পর্যটন স্পট এলাকার বাসিন্দা জানান, ইদানিং রাতের আঁধারে পর্যটন স্পটের পাথর চুরি করে একটি প্রভাবশালী মহল পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। এভাবে যদি সাদা পাথর চুরি করা হয় তাহলে কয়েক মাসের মধ্যে পর্যটন কেন্দ্রের সব পাথর শেষ হয়ে যাবে। এতে করে ভ্রমণ পিপাসুরা এখানে আসার আগ্রহ হারাবেন। পর্যটন সংশ্লিষ্ট কর্মজীবীরাও বেকার হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।
থানার সেকেন্ড অফিসার সুকমল ভট্টাচার্য ভোলাগঞ্জ পর্যটন কেন্দ্র থেকে পাথর চুরির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাতের আঁধারে পাথর চুরি খবর পেয়ে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাথর পরিবহনের গাড়িসহ সংশ্লিষ্ট আসামিদের আটক করেছে এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে।’ অপরাধীদের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী সিলেট মিররকে বলেন, পাথর চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনাই হচ্ছে পুলিশের কাজ। কেউ যদি অপরাধীদের সহযোগিতা করে তাহলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং জানান, পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা ও রক্ষা করা প্রশাসনের কাজ। পর্যটন স্পটের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসনের সকল দপ্তর সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) লুৎফুর রহমান বলেন, পাথর চুরির ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পুলিশের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএম-০৫