নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ২০, ২০২২
০২:২০ পূর্বাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ২০, ২০২২
০২:২২ পূর্বাহ্ন
খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট লক্ষ্য (এসজিডি) অর্জনে এবং কৃষি উদ্ভাবনকে কার্যকরভাবে ব্যবহারে প্রান্তিক কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রমাণ-ভিত্তিক কৃষি সংবাদ প্রচারে সিলেট বিভাগের গণমাধ্যমকর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) নগরের একটি অভিযাত হোটেলে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।। অনুষ্ঠানে সিলেট বিভাগের ২৭টি সংবাদমাধ্যমের ৩০ জন সাংবাদিক অংশ নেন।
‘কৃষি বিষয়ক সংবাদ পরিবেশনে সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি’ শিরোনামের প্রশিক্ষণে কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন যেমন, কৃষিতে জীব প্রযুক্তি ব্যাবহার, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সম্ভাবনা, কৃষি প্রযুক্তির উপর বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রতিবেদন তৈরিতে গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রশিক্ষণের বিভিন্ন সেশনে জীবপ্রযুক্তি, বায়োসেফটি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, আধুনিক কৃষি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের বিশিষ্ট সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন সেশনের আলোচকরা অংশগ্রহণকারীদের কৃষিতে জীবপ্রযুক্তি, খাদ্য নিরাপত্তা, জিনোম সম্পাদনা, বিজ্ঞান-ভিত্তিক উদ্ভাবন এবং কৃষিশিক্ষার অন্যান্য দিক সম্পর্কে অবহিত করেন।
ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশ এর সিইও এবং নির্বাহী পরিচালক মো. আরিফ হোসেন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, ‘গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকগণ আধুনিক কৃষি-প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের তথ্য প্রচার এবং সম্প্রসারণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং পরিপূরক ভূমিকা পালন করে। গণমাধ্যম, গণযোগাযোগ কর্মী, এবং সাংবাদিক এই সবার মধ্যে একটি সেতু বন্ধন তৈরি করা যেতে পারে, যার মাধ্যমে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রসার নিশ্চিত করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিজ্ঞানভিত্তিক ও তথ্য নির্ভর প্রতিবেদন কৃষক এবং ভোক্তাদের জন্য উপকারী হতে পারে। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য সক্ষম পরিবেশ উন্নত করতে আমাদের সবার একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম কৃষি উন্নয়নের আলোকে সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রচার এবং ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব এড়ানোর উপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘জীবপ্রযুক্তির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে, এবং এই সংক্রান্ত গবেষণা এবং উদ্ভাবনে আরও বেশি বিনিয়োগ করা উচিত, যাতে আমরা ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের নিজস্ব সক্ষমতার বিকাশ করতে পারি।’
ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘সাংবাদিকরা কৃষির অগ্রগতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। দায়িত্বশীল রিপোর্টিং একটি নিত্যদিনের কাজের মধ্যে পড়ে, যা অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। এছাড়া বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে আরও সতর্ক এবং যত্নবান হতে হবে। গণমাধ্যমকে কৃষির উত্তোরতর উদ্ভাবনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।’
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এর সিনিয়র কমিউনিকেশন অফিসার এম. আব্দুল মমিন প্রশিক্ষণে পুষ্টি সমৃদ্ধ ধানের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আধুনিক জিব প্রযুক্তি ফসলকে তার পুষ্টির মান অক্ষুন্ন রেখে মানুষের পুষ্টিমান উন্নয়ন করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ফিলিপাইনের পর গোল্ডেন রাইসের বাণিজ্যিক মুক্তি বাংলাদেশের জন্য ভিটামিন ‘এ’-এর অভাব পূরণে আশার কারণ হতে পারে।’
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকরা তাদের অভিজ্ঞতা বিনিয়ময় করেন এবং মফস্বল সাংবাদিকতার নানান সমস্যা তুলে ধরেন। তারা তথ্য-ভিত্তিক প্রতিবেদনের তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা উপর আলোচনা করেন এবং তাদের প্রতিবেদনগুলো আরো তথ্য-নির্ভর করবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এনএইচ-০১/এএফ-০১