নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ০১, ২০২২
০৭:৪১ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ০১, ২০২২
০৭:৫০ অপরাহ্ন
সাবেক অর্থমন্ত্রী, সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিতের শেষ জানাজায় সিলেটে শোকার্ত মানুষের ঢল নেমেছিল। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী আলীয়া মাদ্রাসার বিশাল মাঠে কয়েক হাজার মানুষ জানাজায় অংশ নেন।
আজ রবিবার (১ মে) বেলা ২ টা ১৮ মিনিটে অনুষ্ঠিত জানাজায় ইমামতি করেন সিলেটের খ্যাতিমান আলেমে দ্বীন আল্লামা মুহিবুল হক গাছবাড়ি। পরে দোয়া ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান, সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদার, সিলেট কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
জানাজা শেষে নগরের রায়নগরের বিখ্যাত ডেপুটি বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে বাবা মরহুম অ্যাডভোকেট আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ এবং মা সৈয়দ শাহার বানু চৌধুরীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন বাংলাদেশের অর্থনীতিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া বহুমাত্রিক এই মানুষটি।
আবুল মাল আবদুল মুহিত গত শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। ঢাকায় শ্রদ্ধা নিবেদন এবং জানাজা শেষে গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তাঁর মরদেহ সড়কপথে সিলেট এসে পৌঁছায়।
এদিকে সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিতের মৃত্যুতে দুই দিনের শোক ঘোষণা করেছে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। এ সময় দলীয় অস্থায়ী কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলনসহ নেতাকর্মীরা কালো ব্যাচ ধারণ করবেন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সিলেট শহরের
ধোপাদীঘিরপাড়ে জন্মগ্রহণ করেন। তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের কর্ণধার আবু আহমদ আবদুল হাফিজ ও সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরীর ১৪ সন্তানের মধ্যে তৃতীয় সন্তান মুহিত। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে উচ্চতর ডিগ্রি নেন আবদুল মুহিত। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন তিনি। পরের বছর একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন। ছাত্রজীবনে তিনি সলিমুল্লাহ হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৫৬ সালে যোগ দেন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে (সিএসপি)। সিএসপিতে যোগ দিয়ে তিনি ওয়াশিংটন দূতাবাসে পাকিস্তানের কূটনীতিকের দায়িত্ব নেন এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের জুন মাসে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার তাঁকে ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করে।
এএফ/০২