সময় ফুরিয়ে আসছে, ‘জীবিতদের প্রাধান্য দিয়ে’ চলছে উদ্ধার কাজ

সিলেট মিরর ডেস্ক


ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩
০২:০০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩
০২:০০ পূর্বাহ্ন



সময় ফুরিয়ে আসছে, ‘জীবিতদের প্রাধান্য দিয়ে’ চলছে উদ্ধার কাজ
তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প


তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে আটকেপড়াদের বেঁচে থাকার সময় ফুরিয়ে আসছে। ফলে ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকেপড়াদের মধ্যে জীবিতদের প্রাধান্য দিয়ে উদ্ধারকাজ চলছে। সবশেষ মঙ্গলবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ সাত হাজার ২০০ জনের বেশি মৃত্যুর তথ্য জানা গেছে। খবর: রয়টার্, বিবিসি, ও ডয়চে ভেলে’র।

তুরস্কে এ পর্যন্ত মৃত্যু পাঁচ হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে এবং সিরিয়ায় এক হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে। শুধু তুরস্কেই ধসে পড়েছে প্রায় ছয় হাজার ভবন। ১৬ হাজারের বেশি কর্মী তুরস্কে উদ্ধার অভিযানে রাতদিন একাকার করে কাজ করছেন।

তুরস্কের হাতায় প্রদেশের আনতাকিয়া শহরে হাতুড়ি হাতে এক ব্যক্তি বিবিসির সংবাদদাতাকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলছিলেন, ‘মিনিট দশেক আগে আমি একজনের আওয়াজ পেয়েছি। ধ্বংসস্তুপ কাটার পাশাপাশি একটু পরপর পথচারী ও অন্যান্যদের নীরবতার অনুরোধ করছেন তিনি, যাতে জীবিত আটকেপড়াদের আওয়াজ শোনা যায়।

হাতুড়ি হাতে ওই ব্যক্তি উদ্ধারকারী কর্তৃপক্ষের লোকজনকে জানালে তারা এসে বলেন, ‘এরা এরই মধ্যে মারা গেছেন। আমাদের এখন জীবিতদের প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতে হবে।’ কিন্তু ওই ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের লোকজনের কথা না শুনে অবশ্য নিজের মতো করে চেষ্টা চালাতে থাকেন।

উদ্ধার তৎপরতায় অপ্রতুলতার কারণে লোকজনের মধ্যে ক্ষোভও দেখা গেছে। এক নারী সেখানে বলছিলেন, ‘লোকজন আসছে ছবি তুলে চলে যাচ্ছে, উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করছে না সবাই।’ ওই নারীর ছেলেবন্ধুর একটি ভবনে ১১ জন আটকে পড়েছেন। কয়েক ঘণ্টা ধরে তিনি তাদের আওয়াজ পেয়েছেন। কিন্তু এখন আর পাচ্ছেন না। ভবনটির ধ্বংসস্তুপের নিচে শুধুই নীরবতা।

আর কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রথম ভূমিকম্পের ৪৮ ঘণ্টা পার হতে যাচ্ছে। ফলে প্রতি ঘণ্টায় যেন আটকেপড়াদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছে। সূর্যাস্তের পর আনতাকিয়া শহরজুড়ে যেন শুধু হাতুড়ি-শাবলের শব্দ। বিনাবিরতিতে কাজ করে চলেছেন উদ্ধারকারীরা।

ইস্তাম্বুল থেকে আসা কয়েকজন উদ্ধারকাজে ব্যস্ত। তারা নিজেদের নামপরিচয় বলতে চান না। তারা জানান, তাদের আত্মীয়-স্বজন আনতাকিয়ার ভবনটির বাসিন্দা, তারা এর নিচে আটকা পড়ে আছে। তারা কিছু যন্ত্রপাতি সঙ্গে করে এনেছেন। সেগুলো দিয়ে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর মাত্র ১১ মিনিট পরই ৭ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ২০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এ ঘটনায় দুই দেশের আরও কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছে।

শক্তিশালী এ ভূমিকম্পের আঘাতে পার্শ্ববর্তী সিরিয়ায়ও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সিরিয়া অংশে ১ হাজার ৮০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

এদিকে এখনও ধ্বংসস্তূপে কয়েক হাজার মানুষ আটকা পড়ে আছে। সব মিলিয়ে প্রায় ছয় হাজার ভবন ধসে পড়েছে। তুষারপাতের কারণে উদ্ধার কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।


এএফ/০৩