সিলেট মিরর ডেস্ক
মে ১৫, ২০২৩
০৫:৩৭ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ১৫, ২০২৩
০৫:৪০ অপরাহ্ন
থিয়েটারে রাষ্ট্রশক্তির আধিপত্যবাদ তুলে ধরা নতুন বিষয় নয়। যুগে যুগে, কালে কালে তা হয়ে এসেছে। চার দশক আগে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লেখা নাটককে ভারতীয় মোড়ক দেওয়া সাম্প্রতিক সময়ে বিরল। সেটাই দেখিয়েছে কলকাতার নাট্যদল ‘ইচ্ছেমতো।’
কিংবদন্তী নাট্যকার সেলিম আল দীন। তাঁর লেখা ‘কিত্তনখোলা’কে ভারতীয় প্রেক্ষাপটে রূপ দিয়েছেন নাট্য পরিচালক সৌরভ পালোধী। তার চেয়েও বড় কথা হল, গোটা নাটকটাই মিউজিক্যাল।সৌরভ বলেন, ‘প্রেম, ধর্ম, ভেদাভেদ আর রাষ্ট্রের আধিপত্যবাদ—মূল এই চারটি জিনিসকে ধরার চেষ্টা হয়েছে। নাটকের কথাকে অবিকৃত রেখেই গান তৈরি হয়েছে ভারতের বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে।’
সৌরভ যোগ করেন, ‘রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে যে চরিত্র এখানে রয়েছে, সেই ইদু কন্ডাক্টরকে হনুমানের মুখোশ পরানো হয়েছে।’
গত ১০ মে ‘কিত্তনখোলা’ প্রথমবার মঞ্চস্থ হয়। গতকাল মধুসূদন মঞ্চে ছিল দ্বিতীয় প্রদর্শনী। যা দেখে অভিভূত হয়েছেন দর্শকরা।
মিউজিক্যাল নাটকটির সংগীত পরিচালনায় ছিলেন দেবদীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, একটা বা দু’টো গান ফিরে ফিরে আসবে। কিন্তু গল্প যেভাবে এগিয়েছে তাতে পরিকল্পনা বদল করতে হয়। বাংলা ভাষাতেই দেশের নানান প্রান্তের সুরকে ব্যবহার করা হয়েছে। কখনও রাজস্থানী ফোক, কখনও সাঁওতাল পরগনার সুর।’
এই নাটকেই অভিনয় করছেন অনুজয় চট্টোপাধ্যায়। চাঁপদানির জুটমিল মহল্লায় বড় হওয়া অনুজয় এই সময়ের বলিষ্ঠ থিয়েটার অভিনেতাও বটে। তিনিও বলেন, ‘প্রেম আর রাজনীতিটাকে যেভাবে পরিচালক সৌরভ তুলে ধরেছেন তা অনবদ্য।’
অভিনেতা শঙ্কর দেবনাথ করছেন ইদু কন্ডাক্টরের চরিত্র। তিনি বলেছেন, ‘এই নাটকটা হচ্ছে নাটকের প্রয়োজনে। এটা কোনো প্রজেক্ট নয়। এটা সময়ের চাহিদা অনুযায়ী একটা নাটক। তাই সৌরভ আমায় যখনই সেলিম আল দীনের এই নাটকের কথা বলেন, আমি রাজি হয়ে যাই।’
নাটকটি দেখে মুগ্ধ হয়েছেন দর্শকরাও। শুভদীপ নামে এক দর্শক বলেছেন, 'ইচ্ছেমতোর পরিবেশনাটা এমন ছিল যেন মনে হয়েছে আমি চলে গিয়েছিলাম কির্ত্তনখোলা গ্রামে। পালা গান আর মেলার গল্পে কী করে যে তিনটে ঘণ্টা কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না। অসাধারণ উপস্থাপনা, গান , আলো , মঞ্চ শিল্প, সবই যেন নিখুঁত কাজ। সঙ্গে মা ছিলেন। তিনি খুব মজা পেয়েছেন। মা দিবস দারুণ কেটেছে।'
এএফ/০১