কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ রফা ৫০ হাজার টাকায়

সিলেট মিরর ডেস্ক


সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
১০:৩১ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
১০:৩১ অপরাহ্ন



কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ রফা ৫০ হাজার টাকায়
পুলিশের উপস্থিতিতে ওয়ার্ড মেম্বারের বাড়িতে সালিশ


পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে বিয়ের প্রলোভনে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আইনের মাধ্যমে অভিযুক্ত যুবকের শাস্তি দাবি করে মামলার উদ্যোগ নেয় মেয়ের পরিবার। তাদের নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে ঠেকান স্থানীয় মাতুবররা। সালিশ-বৈঠকে ডেকে ভুক্তভোগীর বাবার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ৫০ হাজার টাকা। একই সঙ্গে শাসিয়ে দেওয়া হয় ঘটনার কথা কাউকে না জানাতে।

বৃহস্পতিবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভবানীপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেনের বাড়িতে এক পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে বৈঠকটি হলেও তা প্রকাশ হয়েছে রবিবার।

এলাকাবাসী জানান, সপ্তাহখানেক আগে দক্ষিণ ভবানীপুরের ছিদ্দিকুর রহমান সরদারের ছেলে আবদুর রহিম সরদার একই গ্রামের এক কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বেড়াতে নিয়ে যায়। একটি নির্জন এলাকায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে সে। বিষয়টি বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কাছে জানায় ওই কিশোরী। তার বাবা থানায় যাওয়ার সময় বাধা দেন স্থানীয় মাতুবররা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, ‘আমি কিছু বলতে পারব না।’ এই বলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

সালিশের বিষয়ে কথা বলতে পার্শ্ববর্তী গ্রাম ধেবসাবুনিয়ার মাতুবর বাহাদুর খানকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বাড়িতে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

ইউপি সদস্য জাকির বলেন, কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় মামলার ঝামেলা এড়াতে স্থানীয়ভাবে দেন-দরবার করা হয়েছে। এতে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তের পরিবার সন্তুষ্ট। সালিশ-বৈঠকে স্থানীয়রা কিশোরীর বাবাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে দেন। এ সময় উপস্থিত মাতুবর ও থানা পুলিশের খরচা বাবদ আরও ৩০ হাজার টাকা দেয় আবদুর রহিম সরদারের পরিবার।

ধর্ষণের অভিযোগে সালিশ-বৈঠকে মীমাংসা করা যায় কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এবার নতুন মেম্বার হয়েছি। এতকিছু জানি না।

ইন্দুরকানী থানার ওসি আল মামুন বলেন, কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় কোনো অভিযোগ পাইনি। আপনার কাছে শুনলাম। ঘটনা এই থানা এলাকার মধ্যে হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে সালিশ-বৈঠকে ধর্ষণের অভিযোগ রফার বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাইলে তিনি আবারও বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিই না। এমন কিছু হলে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।


এএফ/১০