‘ইলেকশন অফিসে আইয়া জানলাম আমি নাকি জীবিত নাই, মইরা গেছি’

শামীম আহমেদ, ধর্শপাশা প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩
১০:০৩ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩
১০:০৫ অপরাহ্ন



‘ইলেকশন অফিসে আইয়া জানলাম আমি নাকি জীবিত নাই, মইরা গেছি’
জীবিত বাবা কাগজপত্রে মৃত, উপবৃত্তি বঞ্চিত সন্তান


হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের বীর দক্ষিণ পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা দিন মজুর মো. ইয়াসিন (৫৩) মৃত। অথচ তিনি দিব্যি বেঁচে আছেন। কিন্তু ভোটার তালিকায় মৃত হওয়ায় তাঁর দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়ুয়া ছেলে হুমায়ুন মিয়া সরকারি উপবৃত্তি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

আজ রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে ভোটার তালিকায় তাকে মৃত দেখানোর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। 

জানা গেছে, উপজেলার সেলবরষ  ইউনিয়নের সেলবরষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২২সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদানের জন্য অনলাইনে তথ্য নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয় এবং তা ২২সেপ্টেম্বর শেষ হয়। বিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্র ছাত্রীদের  অনলাইনে ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রম যথারীতি সম্পন্ন করা হলেও ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র হুমায়ূন মিয়ার বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল থাকায় ওই ছাত্রের অনলাইনে ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় হুমায়ূন মিয়া উপবৃত্তি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে। 

ভূক্তভোগী মো. ইয়াসিন বলেন, আমার পাঁচ সদস্যের সংসার। কাম  গেলে খাওন জুডে, আর না হয় উবাস থাহন লাগে। রবিবার দুপুরও উপজেলা ইলেকশন অফিসও আইয়া জানতাম হারছি আমি নাকি জীবিত নাই ,মইরা গেছি । যারা এই কামডা করছে তারা ঠিক করছে না। হেরার ভুলে আমার পোলাডা গত বছরও উপবৃত্তির টেহা পায় নাই।  আমি  এই ঘটনার জড়িতরার শাস্তি চাই।

উপজেলার সেলবরষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাধবী রাণী দে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শাহানূর আলম ছাত্র ছাত্রীদের উপবৃত্তির ডাটা এন্ট্রির কার্ডযক্রমের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। আমি কিছুদিন হলো  এই বিদ্যালয়ে এসেছি। সবাইকে আমি চিনিনা। 

সেলবরষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাালয়ের  সহকারি  শিক্ষক শাহানূর আলম বলেন, উপবৃত্তি পাওয়ার জন্য ছাত্র ছাত্রীর অনলাইনে ডাটা এন্ট্রি করতে হয়।  আর এ জন্য ছাত্র ছাত্রীর বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র, ছাত্র ছাত্রীর জন্মনিবন্ধন ও অভিভাবকের মোবাইল নম্বরের প্রয়োজন পড়ে। আমাদের বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র হুমায়ুন মিয়ার বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রে সমস্যা থাকায় এই ছাত্রের অনলাইনে এন্ট্রি দেওয়া যাচেছ না। এ জন্য ওই ছাত্র প্রথম শ্রেণি পড়ার সময়ও উপবৃত্তির টাকা পায়নি। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে ওই ছাত্রের বাবাকে যোগাযোগ করতে বলেছি।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঞ্জুরুল  হক বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময়  অথবা সার্ভারজনিত সমস্যার কারণেও এমনটি হতে পারে। আমি এখন দাপ্তরিক কাজে  এলাকার বাইরে আছি। এ সংক্রান্ত আবেদন পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা সংশোধন করে দেওয়া হবে।


এসএ-০১/ এএফ-০৪