সিলেটে ইতিহাস গড়ে টেস্ট জিতল বাংলাদেশ

খেলা ডেস্ক


ডিসেম্বর ০২, ২০২৩
১১:০৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ০২, ২০২৩
১২:৩১ অপরাহ্ন



সিলেটে ইতিহাস গড়ে টেস্ট জিতল বাংলাদেশ

জয়ের মঞ্চ আগের দিনই তৈরি করে রেখেছিল বাংলাদেশ। আজ বলা যায়, ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতা। সেটাও সেরে ফেলল স্বাগতিকরা। তাইজুল ইসলামের অসাধারণ বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে অবিস্মরণীয় এক জয় তুলে নিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫০ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। কিউইদের সঙ্গে ঘরের মাঠে সাদা বলের ক্রিকেটে অনেক সাফল্য থাকলেও এই প্রথম টেস্ট জিতল স্বাগতিকরা।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র জয় দিয়ে শুরু করল বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এখন ১-০তে এগিয়ে আছে তারা। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু আগামী ৬ ডিসেম্বর, মিরপুরে।

বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর অসাধারণ এই জয়ের ম্যাচে শুরু থেকেই বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছিল। টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে ৩১০ রান করা স্বাগতিকরা কিউইদের থামিয়ে দিয়েছিল ৩১৭ রানে। পরে শান্তর চমৎকার সেঞ্চুরির সুবাদে দ্বিতীয়ভাগে ৩৩৮ রান করে বাংলাদেশ। ৩৩২ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়ে প্রতিপক্ষকে তারা গুটিয়ে দেয় স্রেফ ১৮১ রানে।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮ টেস্ট খেলে স্রেফ দুটিতে জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। আগের জয় ছিল প্রতিপক্ষের ডেরায়। গত বছর মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে কিউইদের ৮ উইকেটে হারিয়েছিল মুমিনুল হকের দল।

সব মিলিয়ে ১৩৯ টেস্টে বাংলাদেশের জয়ের সংখ্যা বেড়ে হলো ১৯টি। আর দেশের মাটিতে ৭৪ টেস্টে এটি তাদের ত্রয়োদশ জয়। ঘরের মাঠে সপ্তম প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টেস্ট জিতল টাইগাররা। এর আগে জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় ছিল তাদের। 

টেস্টে বাংলাদেশের একাধিক জয় ছিল কেবল দুটি দেশ- জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলো নিউ জিল‍্যান্ডের নাম। এই তিন দেশের বিপক্ষে ঘরে ও প্রতিপক্ষের মাটিতে জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ।

সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে টেস্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করেন শান্ত। মাশরাফি, সাকিব ও লিটনের পর দেশের চতুর্থ অধিনায়ক হিসেবে গড়েন নেতৃত্বের অভিষেকে টেস্ট জয়ের কীর্তি।

সিলেটে এই জয়ের পথে শান্তর অবদান অনেক। দ্বিতীয় ইনিংসে তার রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতেই বড় পুঁজি গড়তে পারে বাংলাদেশ। তবে সবচেয়ে বড় অবদান তাইজুলের। ম্যাচে একাই তিনি নেন ১০ উইকেট। এনিয়ে দ্বিতীয়বার এই কীর্তি গড়লেন বাঁহাতি এই স্পিনার।

প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়া তাইজুল দ্বিতীয়ভাগে ধরেন ৬ শিকার, ৭৫ রান দিয়ে। টেস্ট ক্যারিয়ারে যা তার দ্বাদশ পাঁচ উইকেট।

জয়ের সুবাস আগের দিন থেকেই পাওয়া শুরু করে বাংলাদেশ। পঞ্চম ও শেষ দিনে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছাতে তাদের প্রয়োজন ছিল কেবল ৩ উইকেট। প্রথম সেশনেই নিজেদের লক্ষ্য পূরণ করে জয়ের উল্লাসে মাতে তারা।

৭ উইকেটে ১১৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল যতটা সম্ভব লড়াই করে যাওয়া। ড্যারিল মিচেল ও ইশ সোধির ভালোই খেলছিলেন। কিন্তু তাদের প্রতিরোধ ভেঙে দেন নাঈম হাসান। এই অফ স্পিনারকে সুইপ করে ক্যাচ তুলে দেন ৫৮ রান করা মিচেল।

এরপর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান বাড়ানোর চেষ্টা চালান টিম সাউদি। তাইজুলের বলে বড় শটের চেষ্টায় মিডউইকেটে ধরা পড়েন সাউদি। এরপর সোধিকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে চমৎকার এক জয় এনে দেন তাইজুল। এমন পারফরম্যান্সের পর ম্যাচ সেরা তিনি ছাড়া আর কে!

আরসি-০৪