দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক


জানুয়ারি ০৭, ২০২৪
১০:১০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ০৭, ২০২৪
১০:১০ পূর্বাহ্ন



দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট আজ। সকাল ৮টা থেকে সিলেটের ৬টি আসনের ১ হাজার ১৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়েছে। টানা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

সকাল থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হলেও শুরুতেই ভোটারদের উপস্থিতি তেমন দেখা যায়নি। সকাল ৮টায় সিলেটের বিভিন্ন কেন্দ্রে দেখা গেছে ভোটার উপস্থিতি নেই। শীত সকালে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এ নির্বাচনে সিলেটের ১৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০৫ প্রার্থী। জেলায় ৩৫ জন। বিএনপি না থাকায় এসব আসনের  বেশিরভাগে নিজেদের মধ্যে লড়াই বেশি হবে নৌকার প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্রদের মধ্যে। 

সিলেটে ভোটগ্রহণ নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠু করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনী মাঠে রয়েছে। এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের অধীনস্থ স্ট্রাইকিং টিমও মাঠে কাজ করছে।

এবারের সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ছয়টি আসনে মোট ২৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৩১ ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ লাখ ৯২ হাজার ৩৯৫ ও মহিলা ভোটার রয়েছেন ১৩ লাখ ২২ হাজার ৯২৬ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১০ জন। 

ভোটকেন্দ্র রয়েছে এক হাজার ১৩টি ও ভোট কক্ষ রয়েছে ছয় হাজার ছয়টি।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সিলেট জেলার ছয়টি সংসদীয় এলাকায় মোতায়েন রয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর ২৭ প্লাটুন সদস্য। এর বাইরে বিজিবি সদস্য ১ হাজার ৪০০ জন, ৬ হাজার ২১৯ জন পুলিশ সদস্য, র‌্যাব সদস্য ১১৪ জন ও ১২ হাজার ২৮৬ জন আনসার সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোট ২২ হাজার সদস্য সার্বক্ষণিক মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। সিলেট মহানগর এলাকায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মোতায়েন থাকবে।

জেলার মোট ভোটকেন্দ্রের মধ্যে সিলেট মহানগর এলাকায় ২০৬টি ও জেলার মধ্যে ৪৪৭ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষায় এসব কেন্দ্রকে বলা হয় অতিগুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্র। ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ-আনসার মিলে ১৮ জন আর সাধারণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ-আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৭ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে থাকবেন পুলিশ ২ জন, আনসার (পিসি) ১ জন, আনসার (এপিসি) ১ জন, পুরুষ আনসার ৬ জন ও ৪ জন মহিলা আনসার।

সিলেট জেলা পুলিশের মধ্যথেকে জেলার ৭১৯টি ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ৪৩৮ জন, ৯৬টি মোবাইল টিমে রয়েছেন ৪৮০ জন, স্ট্রাইকিং টিমে ৪৪ জন, নির্বাচনী অফিস ডিউটি টিমে ৪৪ জন, উপজেলা কন্ট্রোল রুমে ১১ জন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ৪০ জনসহ মোট ২ হাজার ১৬৯ জন পুলিশ সদস্য মাঠে নিয়োজিত রয়েছেন।

আর সিলেট মহানগর পুলিশের জনবলের মধ্যে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২৬৪ জন, গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ৮২৪ জন, মোবাইল টিমে ৩৬০ জনসহ মোট ২ হাজার ৫০ জন সদস্য মাঠে মোতায়েন আছেন।

আনসার ও ভিডিপির মধ্যে আনসার পিসি ১ হাজার ১৩ জন, এপিসি আনসার ১ হাজার ১৩ জন, পুরুষ আনসার ৬ হাজার ৭৬ জন, মহিলা আনসার ৪ হাজার ৫২ জন, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ১৩০ জনসহ মোট ১২ হাজার ২৮৬ জন। এছাড়াও মোতায়েন রয়েছে ব্যাটালিয়ন আনসারও।

জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসান সিলেটভিউ-কে বলেন- সিলেটের ৬টি আসনে ভোটগ্রহণ অবাধ, নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠু করতে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হবে। আশা করি বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন। 

গত ১৫ নভেম্বর ঘোষিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল। সিলেট জেলার ৬টি আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৫৮ জন। পরে জমা দেন ৪৭ জন। যাচাই-বাছাই শেষে ৩৩ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে উচ্চ আদালতে আপিল করে আরও দুজন প্রার্থিতা ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। এ দুজনসহ সিলেটের ৬টি আসনে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ জনে। তবে ৩ জানুয়ারি সিলেট-৫ আসনের জাতীয় পার্টিার প্রার্থী সাব্বির আহমদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো এবং সিলেট-৩ আসনের ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থী ক্বারি মাওলানা মইনুল ইসলাম আশরাফী ওই আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় লড়াইয়ের তালিকায় নাম অবশিষ্ট থাকলে ৩৩ জন।

তারা হলেন- সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন (নৌকা), সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের প্রার্থী আব্দুল বাসিত (ছড়ি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি)-এর প্রার্থী ইউসুফ আহমদ (আম), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী ফয়জুল হক (মিনার) এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. সোহেল আহমদ চৌধুরী (প্রতীক)।

সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী (নৌকা), গণফোরামের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), বিশ্বনাথ পৌরমেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান (ট্রাক), জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুর রব (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী মো. জহির (ডাব) এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী মো. মনোয়ার হোসাইন (আম)।

 সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান (লাঙল), বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশ (বিএমএ)-এর মহাসচিব- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল (ট্রাক), বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম (মোমবাতি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী আনোয়ার হোসেন আফরোজ (আম) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম  (ঈগল)। 

সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি ইমরান আহমদ (নৌকা), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মো. নাজিম উদ্দিন কামরান (মিনার) এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল হোসেন (সোনালী আঁশ)।

সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ (নৌকা), বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী (কেতলি), স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ আল কবির (ট্রাক), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী কুতুব উদ্দীন আহমদ শিকদার (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. বদরুল আলম (ডাব) এবং  বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) প্রার্থী মো. খায়রুল ইসলাম (হাত-পাঞ্জা)।

 সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ নুরুল ইসলাম নাহিদ (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন (ঈগল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের প্রার্থী আতাউর রহমান আতা (ছড়ি), জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম উদ্দিন (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী শমসের মবিন চৌধুরী (সোনালী আঁশ) এবং ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী সাদিকুর রহমান (মিনার)।



এএফ/০৩