গোলাপগঞ্জ সংবাদদাতা
জানুয়ারি ১৯, ২০২৪
০৮:০৮ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ১৯, ২০২৪
০৮:০৮ পূর্বাহ্ন
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের কদুপুর গ্রামে কুশিয়ারা নদীর দক্ষিণ পাড়ে চেয়ারম্যানের ঘাট-এ নির্মিত সিড়ি ভাঙার অভিযোগ উঠেছে। জনৈক ব্যক্তি ঘাটের সিড়ি ভেঙে নিজের নাম প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা করছেন। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বা প্রশাসন কেউ কিছু জানে না। এ ঘটনায় গতকাল উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে একটি অভিযোগও দেওয়া হয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে সিড়ি ভাঙার কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, শরীফগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান এম এ মুছাব্বিরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কদুপুর ও বসন্তপুর গ্রামের মাঝখানে কুশিয়ারা নদীর দক্ষিণপাড়ে কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন রোধে প্রায় ৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এই প্রকল্পের আওতায় ব্লক দিয়ে ভাঙন রোধের পাশাপাশি চেয়ারম্যানের ঘাটে নদীতে সিড়ি তৈরি করে। নৌপথে আসা যাত্রীদের উঠা-নামায় এই সিড়ি ব্যবহৃত হয়। যুগ যুগ ধরে মানুষ এ ঘাট দিয়ে চলাফেরা করছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে শওকত আলী নামে এক ব্যক্তি উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে বলেন, ‘কয়েক বছর পর নদীর স্রোতে ব্লক দ্বারা নির্মিত এই ঘাট ধসে পড়লে চেয়ারম্যান এম এ মুছাব্বির নিজের ব্যক্তিগত অর্থে প্রায় ৮৬ হাজার টাকা ব্যয় করে ঘাটটি পুনঃনির্মাণ করে স্থানীয় সরকারের অনুকূলে যাবতীয় স্থাপনা স্থায়ীভাবে দান করে দেন। কিন্তু সম্প্রতি বসন্তপুরের জনৈক ব্যক্তি ব্লক ও ঘাট ভেঙে সেখানে নিজের নাম প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা করছেন।’ এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে লিখিত অভিযোগপত্রে।
প্রসঙ্গত এই সিঁড়ি সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম এম এ মুছাব্বিরের ‘চেয়ারম্যানের ঘাট’ নামে পরিচিত।
ঘটনাস্থলে গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, চেয়ারম্যানের ঘাটের সিঁড়ির পাশে কিছু অংশ ভাঙা হয়েছে। সিঁড়ির দুই পাশে কিছুটা ভেঙে খুঁটির জন্য গর্ত খোড়া হয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় এক প্রবাসী সিড়ির ওপর যাত্রী ছাউনি নির্মাণের জন্য সিঁড়ি ভাঙার কাজ শুরু করেন। তবে বিষয়টি তিনি ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্ট কাউকে অবগত না করে কাজ শুরু করায় এ নিয়ে কথা উঠে। পরে প্রশাসনের নির্দেশে কাজ বন্ধ রাখা হয়।
সিঁড়ি ভাঙার উদ্যোগের বিষয় সম্পর্কে কিছু জানেন না জানিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কাদির মিয়া বলেন, ‘সিঁড়ি ভাঙা হচ্ছে কি-না আমি জানি না। কেউ এ বিষয়ে আমাকে কিছু বলেনি। তবে শুনেছি এখানে একটি যাত্রী ছাউনি করা হবে। আমি বিষয়টি পুরোপুরি জেনে এরপর বলতে পারব।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে ভাঙার একটি তথ্য এসেছিল। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে দিয়ে কাজ বন্ধ করিয়ে রেখেছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগ দিতে আসার কথাও শুনেছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দিতে আসেননি।’