ভারতকে উড়িয়ে সাফ অনূর্ধ্ব ১৬ শিরোপা বাংলাদেশের

খেলা ডেস্ক


মার্চ ১০, ২০২৪
০৪:৩১ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ১১, ২০২৪
০৫:২৫ অপরাহ্ন



ভারতকে উড়িয়ে সাফ অনূর্ধ্ব ১৬ শিরোপা বাংলাদেশের


প্রথমার্ধে খুঁজেই পাওয়া গেলো না বাংলাদেশকে। বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে হাই-প্রেসিং ফুটবলে বাংলাদেশকে শুরুতেই এলমেলো করে দেয় বদলে যাওয়া ভারত। চতুর্থ মিনিটে লিডও নিয়ে নেয় তারা। পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল না, এই ম্যাচে তারা ফিরতে পারবে।

তবে ৭০ মিনিটে মরিয়ম বিনতে আন্নার সুযোগ সন্ধানী গোলে সমতায় ফিরে বাংলাদেশ। ফলে নেপালের কাঠমান্ডুতে আনফা কমপ্লেক্সে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। ভাগ্য পরীক্ষায় বাংলাদেশ কিপার ইয়ারজান বেগমের বীরত্বে শিরোপা ঘরে তুলেছে বাংলাদেশ। টাইব্রেকারে ভারতের তিনটি শট রুখে দিয়ে জয়ের নায়ক বনে যান ইয়ারজান।

অথচ টাইব্রেকারের প্রথম শট জালে জড়াতে ব্যর্থ হয়েছিলেন পুরো টুর্নামেন্ট বাংলাদেশের হয়ে জ্বলে ওঠা সুরভী আখন্দ প্রীতি। শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগ মুহূর্তে মাঠে এসেই প্রীতির শট রুখে দেন বদলী গোলকিপার সুরজমুনি কুমারী। এরপর ভারতের অধিনায়ক শ্বেতা রানী গোল করে ভারতকে এগিয়ে নেন। বাংলাদেশ অবশ্য পরের দুই শটে গোল পায়। গোল করেন মরিয়ম ও থুইনুই মারমা। অন্যদিকে অ্যালেনা ও বনিবিলিয়ার শট রুখে দেন ইয়ারজান। বাংলাদেশে চতুর্থ শটটা অবশ্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আলপি আক্তার।

অন্যদিকে ভারতের অনিতা গোল করে ২-২ করে ফেলেন। বাংলাদেশের পঞ্চম শট ঠিকঠাক জালে রাখেন সাথী মান্ডা। তবে ভারতের দেবযানীর শট রুখে দিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করেন ইয়ারজান। প্রথমবারের তো সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ আসরে শিরোপা জিতে বাংলাদেশ নাম লিখায় ইতিহাসের পাতায়। 

এর আগের নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ভারত প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেছিল। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবলে বাংলাদেশকে এলমেলো করে দেয় তারা। সুবাদে চতুর্থ মিনিটে লিড পায় লিগপর্বে বাংলাদেশের কাছে ৩-১ গোলে হারা ভারত। দলটির ফরোয়ার্ড আনুশকা কুমারী নিজেদের অর্ধ থেকে সতীর্থ বনিফিলিয়া সুল্লাহর লম্বা বল অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে দূরের পোস্টে জমা করেন। বলের দিকে ঝাঁপিয়েও তার নাগাল পাননি বাংলাদেশ কিপার ইয়ারজান। গোল খাওয়ার পর আরও ছন্নছাড়া মনে হয়েছে বাংলাদেশকে। তারা বল ও মাঠের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেছিল। ভাগ্য ভালো প্রথমার্ধে আর তাদের গোল হজম করতে হয়নি। ৪৩ মিনিটে অবশ্য প্রথম কর্নারের সুযোগ থেকে গোল পেতে পারতো বাংলাদেশ। ফাতেমার কর্নার অবশ্য প্রথমে গোললাইন থেকে ফিস্ট করেন ভারত কিপার মুন্নি। পরে পাঞ্চ করে ক্লিয়ার করেন।

বিরতি থেকে ফিরেও বাংলাদেশের খেলায় পরিকল্পনার ছাঁপ মিলেনি। তবে ভারতও সেভাবে চড়াও হতে পারেনি। ৭০ মিনিটে সেট পিছের সুযোগ কাজে লাগিয়ে সমতায় ফিরে বাংলাদেশ। অনন্য মুরমুর কর্নার ভারতীয় কিপার ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ফিরতি বলে মরিয়ম বিনতে আন্নার চিপ জালে জড়ালে বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরে। পরের ২০ মিনিট অবশ্য বাংলাদেশ চেঁপে ধরেছিল ভারতকে। বারবার আক্রমণে উঠেছে তারা দুই অর্ধ্ব কাজে লাগিয়ে। তবে গোলের মুখ আর খুলতে পারেনি। তাতে ম্যাচ গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। সেই ভাগ্য পরীক্ষায় চমক দেখিয়ে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন ইয়ারজান।

গত মাসে ঢাকায় এই দু'দল ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে। ঘটনাবহুল সেই ফাইনালটা শেষ হয়েছিল কলঙ্কজনক এক অধ্যায়ের জন্ম দিয়ে। শ্রীলঙ্কান ম্যাচ কমিশনারের শিশুতোষ ভুলে শিরোপা ভাগাভাগি করে নিতে হয় দু'দলকে। এবারও ফাইনালের ভাগ্য গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে। তবে ইয়ারজান দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে এবার আর বাংলাদেশকে হতাশ হতে হয়নি। হিমালয়ের দেশ থেকে তারা শিরোপা নিয়েই দেশে ফিরবে ষোলর মেয়েরা ঠিক ২০২২ সিনিয়র সাফজয়ী পূর্বসুরীদের মতো।


এএফ/০৭