‘রয়েল মার্ক আন্তর্জাতিকমানের হোটেল হয়ে উঠবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ১৬, ২০২৫
০৯:৫৫ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ১৬, ২০২৫
০৯:৫৫ অপরাহ্ন



‘রয়েল মার্ক আন্তর্জাতিকমানের হোটেল হয়ে উঠবে’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রত্যাশা মুশফিকুল ফজল আনসারীর


সিলেট নগরের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে হোটেল রয়েল মার্কের যাত্রা শুরুলগ্নে রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এই হোটেল একটি আন্তর্জাতিকমানের হোটেল হবে, এখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ব্যক্তিত্বরা আসবেন এমনটা আমাদের প্রত্যাশা।

শুক্রবার (১৬ মে) দুপুর ১২টায় নগরের মিরবক্সটুলায় হোটেল রয়েল মার্কের উদ্বোধনী অণুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত (সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা) মুশফিকুল ফজল আনসারি এসব কথা বলেছেন।


রয়েল মার্ক হোটেলের চেয়ারম্যান ফয়সল আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারি বলেন, ‘এই হোটেল যারা করেছে তারা সিলেটের ব্যবসাবাণিজ্যে মোটামুটি জায়ান্ট। তাদের পাওয়ার সেক্টর, হসপিট্যালসহ বিভিন্নখাতে বিনিয়োগ রয়েছে। এটাও একটা সেবা খাতের প্রতিষ্ঠান।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আশা করি এই হোটেল একটি আন্তর্জাতিক মানের হোটেল হবে এবং এখানে অনেক আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব আসবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি রয়েল মার্ক আন্তর্জাতিকমানের হোটেল। এটা খুব আধুনিকমানের হোটেল এবং ৫০টি রুম রয়েছে, সেখানে দুটি বল রুম রয়েছে, ‘ক্রিমজ’ কফি লাউঞ্জ, ‘সুফরা’ রেস্টুরেন্ট এবং রুফটপ রেস্টুরেন্ট। আমি বলব- হোটেলের মানের দিকে যেনও ঠিক থাকে, এতে করে ব্যবসা আর উন্নতি এবং সমৃদ্ধি হবে।’

এসময় স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘যখন আমরা ছোট ছিলাম তখন সিলেটে একটাই হোটেল ছিল-হিলটাউন। সেখানে ম্যাডামও (খালেদা জিয়া) এসে উঠেছেন। এখন তো সিলেটে অনেক হোটেল।’ দশ-এগারো বছরে সিলেটে অনেক পরিবর্তন হয়েছে  মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দশ-এগারো বছর আগে রাষ্ট্রদ্রোহী ছিলাম, রাষ্ট্রের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিল না। যেহেতু এখন সেই তকমা লাঘব হয়েছে। এখন এই শহরে আসার পর দেখতে পাচ্ছি-অনেক উন্নতি হয়েছে।’ বেসরকারি পর্যায়ে উন্নতি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই উন্নতিগুলো বেসরকারি উদ্যোগে হয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে উন্নয়ন। আমি বলছি না যে সরকার করেছে, বা অন্য একটা সরকার করেছে।’ 

সিলেটকে নান্দনিক একটি শহর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কেউ একজন বলেছিলেন, সিলেট নাকি বাংলাদেশের দ্বিতীয় পরিচ্ছন্ন নগর। যেটা যদিও যাচাই করা হয়ে উঠেনি। যদি এটা সত্যি হয় তার কৃতিত্ব আরিফ ভাইকে (আরিফুল হক চৌধুরী) দিতেই হবে। তিনি মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙেটেঙে যেভাবে রাস্তাঘাট বড় করেছেন। অবশ্যই উনার সঙ্গে কাউন্সিলরা যারা ছিলেন-তার একটি ভালো টিম ছিল বলে তিনি এটা করতে পেরেছেন।’ সিলেটবাসীর মূল্যবান জমি ছেড়ে দেওয়াকে বিরল ঘটনা আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা বিরল ঘটনা। কারণ সিলেটের বাইরে আপনাকে যদি এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে হয়, যথাযথ মূল্য পরিশোধ করে সেটা নিতে হবে। বিনা পয়সায় জায়গা ছেড়ে দিয়েনেছ এটা ব্যতিক্রমী-সে বিষয়টি অন্যান্য অঞ্চলের অনেকে বলেন। তাদের মতে, সিলেট কিছুটা ব্যতিক্রমী। এখানকার একটা হারমনি আছে, আমরা হিংসাকাতর নই, কারো অনিষ্ট কামনা করি না।’

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে রয়েল মার্ক হোটেলের চেয়ারম্যান ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, আপনারা জানের উপরে আমাদের একটা লাইভ রুফটপ কিচেন আছে। আপনারা যে কোনো সময় আমাদের কিচেন পরিদর্শন করতে পারবেন। আমরা ফুল হাইজিন মেন্টইন করে ভালো ফুড সরবরাহ করব।’ 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য সিটি করপোরেশন সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেটে থ্রী স্টার মানের মর্যদায় ‘রয়েল মার্ক’ হোটেলটি ওপেনিং হতে যাচ্ছে। প্রোগ্রামের সময় যা যা বলেছেন, শেষদিন পর্যন্ত যেন সেটা বজায় থাকে। এই হোটেল আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাক সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত রইল।’ 

এ সময় রয়েল মার্ক হোটেলের ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা থ্রি স্টার মানের একটি হোটেল করেছি ও হোটেলে সামগ্রী পর্যটন পরিচালনা করতে আপনার সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা আশা করি আগামীদিনের এই সিলেটে পর্যটক বলেন আর বিদেশি বলেন আর দেশের বিভিন্ন প্রান্তর থেকে আসা সিলেটকে দেখার জন্য জানার জন্য বা সিলেটের যেকোনো কাজে যারা আসবেন, তা আমাদের সিলেটে আবাসন সমস্যা রয়েছে। আবাসন সমস্যা সমাধন লক্ষে আমরা এই হোটেলের যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি। এই যাত্রাকল্পে আমরা আপনার সহযোগিতা কমনা করছি।’ 

মহানগর বিএনপি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদি বলেন, আমি এই প্রতিষ্ঠানে সাফল্য কামনা করছি। এবং যে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে সিলেট একটি পর্যটন নগর সেটি আমরা সবাই বলি। যারা এই প্রতিষ্ঠানটি করেছেন অথবা সিলেটে এই মানের যে হোটেলগুলো আছে সেই হোটেলগুলোতে যাতে আমাদের পর্যটকরা নিরাপদে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ থাকতে পারেন এই পরিবেশ যাতে এনসিওর করা হয় এই বিষয়ে প্রতি আমি কর্তৃপক্ষের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। 

তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় যেটি হচ্ছে আমরা এই নগরকে সবার বাসযোগ্য একটি নগর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিষয়টি সব দিক থেকে গুরুত্ববহন করে, সেটি হচ্ছে পর্যটকরা যখন আসবেন সিলেটে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে আসবেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাদের নিরাপদে চলাচল নিশ্চিত করা এই বিষয়ে আমাদের সজাগ দৃষ্টি দেওয়া উচিত।’

সাধারণ সম্পাদক মহানগর বিএনপি এমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘রয়েল মার্ক’ হোটেলের সাফল্য কামনা করি। এবং যারা এই রয়েল মার্কসহ এই গ্রুপটি যেভাবে দেশের মানুষের কাজ করছে অর্থাৎ দেশের কর্মস্থান হবে দেশের রেভিনিউ আর্নিং হবে। সেহেতু আমি তাদেরকে তাদের এই অগ্রযাত্রা শুরু হোটেল নয় আমি আশা রাখি এই সিলেটে তাদের মাধ্যমে একটি ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠবে। যেখানে  সিলেটের বেকার যুবকরা যারা লেখাপড়া করে  গ্রাজুয়েশন করে তারা কাজ পাচ্ছে না তাদের জন্য একটি কর্মস্থানের চিন্তা করে হোটেলে বাইরে যাতে এখানে বড় ধরনের ইন্ডাস্ট্রি করা যায়। যে ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে দেশের রেভিনিউ কালেকশন হবে। ইতোমধ্যে এখন থেকে কার্গোও শুরু হয়েছে সে ধরনের কিছু চিন্তা ভাবনা আমি উনাদের কাছ থেকে আসবে আশা প্রত্যাশা করি।’ 

এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ফয়েজ হাসান ফেরদৌস, হোসেন সিলেট মেট্রপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাওলানা খাইরুল, পরিচালক ফাহিম আহমদ চৌধুরী, সিলেট ক্লাব লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বারাকা গ্রুপের পরিচালক আফজাল রশিদ চৌধুরী, পরিচালক বারাকা গ্রুপ নাঈম আহমদ চৌধুরী।

অনুষ্ঠানের পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হুজাইফা তারিক। এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান জনাব মিজানুর রহমান চৌধুরী। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট চেম্বারের সাবেক প্রেসিডেন্ট খন্দকার সিপার আহমদ, বিএনপি নেতা বদরুজ্জামান সেলিম, নাসিম হোসেইন, আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকি, ব্যবসায়ী নেতা এহতেশামুল হক, আলীমুল এহসান, জিয়াউল হক, মুজিবুর রহমান মিন্টু, সায়েম আহমদ, সিলেট মেট্রেপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি ফেরদৌস আহমদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ছিলেন রোহেনা সুলতানা। 


এএফ/০২