ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো সুযোগ নেই: তুরাব প্রসঙ্গে আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক


ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
১১:৫৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
১১:৫৫ পূর্বাহ্ন



ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো সুযোগ নেই: তুরাব প্রসঙ্গে আইজিপি


ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক তুরাব নিহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ‘সাংবাদিক তুরাব পেশাগত দায়িত্ব পালনে আমাদেরই গুলিতে মারা গেছেন। তাকে তো আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। আমাদের ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কোনো সুযোগ নেই।’ পুলিশ ফোর্সকে জাগিয়ে তোলাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মন্তব্য করে এসময় তিনি বলেন, ‘ বর্তমানে পুলিশ মনভাঙা অবস্থায় আছে। ভয়ে-আতঙ্কে তাদের মন ভেঙে গেছে।’

আজ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট মহানগর পুলিশের হেডকোয়ার্টাসের সম্মেলন কক্ষে সিলেট বিভাগের সকল ইউনিটে কর্মরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম। 

পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, ‘তুরাব হত্যা মামলায় পুলিশ কমিশনার গুরুত্ব সহকারে কাজ করে যাবেন। সাংবাদিক তুরাব পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আমাদেরই গুলিতে মারা গেছেন। তাকে তো আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। আমাদের ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কোনো সুযোগ নেই।’ এসময় তুরাব হত্যাকান্ডের বিচার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনারকে অনুরোধ করেন আইজিপি।

পুলিশ ফোর্সকে জাগিয়ে তোলা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পুলিশ মনভাঙা অবস্থায় আছে। ভয়ে-আতঙ্কে তাদের মন ভেঙে গেছে। গণঅভ্যুত্থানে সিনিয়র পুলিশ সদ্যরা জুনিয়রদের হুকুম দিয়ে তাদেরকে অনিরাপদ রেখে পালিয়ে গেছেন। এখন পুলিশ ফোর্সকে জাগিয়ে তুলা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’ 

আইজিপিবলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুলিশের ওপর রাজনীতিবিদদের কুপ্রভাব ছিল। বিগত ১৫ বছরে এমন কোনো অন্যায় কাজ নাই যা পুলিশকে দিয়ে করানো হয়নি। সেজন্য পুলিশ প্রশাসন দুঃখিত ও লজ্জিত।’

এসময় পুলিশ প্রধান বলেন, ‘পুলিশকে রিফর্ম করতে কাজ করছে সংস্কার কমিশন। কমিশনে শিক্ষক, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্ররা ও সংশ্লিষ্ট অনেকেই আছেন। তারা সরকারকে সংস্কারের বিষয়ে সুপারিশ করবে।’

৫ আগস্টে সারা দেশের বিভিন্ন থানা, ফাঁড়ি থেকে প্রায় ৬ হাজার অস্ত্র লুট হয়েছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দেড় হাজার অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এসব অস্ত্র উদ্ধারে চেষ্টা চলছে। মাটি খুঁড়ে অস্ত্র বের করা কঠিন।’ তাই খোয়া যাওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে সমাজের সকল নাগরিকের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন আইজিপি।

মতবিনিময় সভায় পুলিশপ্রধান আরো বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে নিহতের ঘটনায় দেশজুড়ে ভুয়া মামলা হচ্ছে। এতে নিরীহ মানুষদের আসামি করে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া আছে যেন নিরপরাধ মানুষদের গ্রেপ্তার না করা হয়।’ নিরীহ মানুষেরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য সঠিকভাবে তদন্ত করবে পুলিশ বলেও জানান পুলিশপ্রধান বাহারুল আলম।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সিলেট বিভাগের পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন এসএমপি কমিশনার রেজাউল করিম।

এছাড়া অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে সিলেটের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরাও এতে অংশ নেন।