দুই বছর পূর্ণ করল ট্রিপল-এ

নিজস্ব প্রতিবেদক


মার্চ ১৯, ২০২৫
১১:১৩ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ১৯, ২০২৫
১১:১৩ অপরাহ্ন



দুই বছর পূর্ণ করল ট্রিপল-এ
রবীন্দ্রমুর্চ্ছনায় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা


সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গালের ট্রিপল-এ এর ত্রিতলার নিচের বারান্দা। দুদিকে দাঁড়িয়ে খুদে ইয়োগা ও মেডিটেশন অনুশীলনের শিশুরা। শুভ্রবসনে সবাই। হাততালিতে মুখরিত প্রাঙ্গন। নেপথ্যে বাজছিল রবীন্দ্রনাথের বসন্তের গান। হঠাৎ লোডশেডিং। আর তখনই জ্বলে উঠে মোমবাতি।

ধীর পায়ে হেঁটে এলেন মানস কুমার মুস্তাফী। সেকেন্ড সেক্রেটারি, ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন, সিলেট। সঙ্গে পা মেলালেন উপস্থিত অতিথিরা। ত্রিপল-এ-এর পরিচালক পদ্মশ্রী দে স্বাগত জানান। ফুলের পাপড়ি শোভিত পথে সিঁড়ি মাড়িয়ে ট্্িরপল-এ প্রশিক্ষণ কক্ষে আসতেই বরণ করা হলো ফুল ও উত্তরীয় পরিয়ে। সংগীতশিল্পী রানা কুমার সিনহা ও তাঁর দল একে একে  গেয়ে উঠেন বসন্তের গান-‘প্রাণো ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে মোরে আরো আরো আরো দাও প্রাণ, ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালো, ওরে গৃহবাসী খোলো দ্বার খোলো, ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান।’ 

এ সময় অতিথিরা মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। শিক্ষার্থীরা অতিথিদের সঙ্গে কেক কেটে সবাইকে চিড়া-মুড়ি নাড়ু ও মিষ্টি মুখ করান। ইয়োগা ও মেডিটেশন অনুশীলন ও ইমেজ ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান ট্রিপল-এ-এরএমন আয়োজন, দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে। গত ১৫ মার্চ শনিবার ছিল অনুষ্ঠানটি। বিকেল সাড়ে ছ’টায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। 

স্বাগত কথা বলেন, লেখক ও প্রামাণ্যকার নিরঞ্জন দে। অতঃপর একে একে অল্প বাক্যে কথার ইন্দ্রজাল তৈরি করেন অতিথি গুণীজনরা।

প্রধান অতিথি মানস কুমার মুস্তাফী তাঁর বক্তব্যে বলেন, মানুষের জন্য প্রয়োজন সুস্থ দেহ সুস্থ প্রাণ। এই সুস্থতার জন্য দরকার বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে যোগ-ব্যায়াম। মনোরোগ শুধু ওষুধে সারে না। প্রয়োজন মনোসংযোগ ও মেডিটেশন। বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে পদ্মশ্রী দে সিলেটে এরকম একটি প্রতিষ্ঠান করায় এ অঞ্চলের মানুষের অনেক উপকার হলো। প্রত্যাশা করি, ট্রিপল-এ আগামীদিনে যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন অনুশীলনে সবার আস্থা অর্জন করে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। বক্তব্য শেষে তিনি রবীন্দ্রসংগীতও পরিবেশন করেন।

কথা, আবৃত্তি ও গানের এমন চমৎকার আয়োজনে বক্তব্য রাখেন-শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর রায়, বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সিদ্ধার্থ পাল, সিলেট এমএজি ওসমানী  মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান ডা. শংকর কুমার রায়, বই পড়া আন্দোলন ইনোভেটর-এর পরিচালক অধ্যাপক প্রণবকান্তি দেব, লেখক ও শিক্ষক সঞ্জয় কুমার নাথ, শাবিপ্রবির পরিচালক (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) পূরবী চ্যাটার্জি। প্রশিক্ষানার্থীর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ডা. নন্দিতা পাল ও সিলেট মদন  মোহন কলেজের সাবেক অধ্যাপক জয়ন্ত দাশ।

সাংস্কৃতিক পর্বে বিশিষ্ট আবৃত্তিকার জ্যোতি ভট্টাচার্যের পরিচালনায় আবৃত্তি পরিবেশন করে আবৃত্তি সংগঠন চারুবাকের শিক্ষার্থীরা। সম্মেলক ও একক রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন-আনন্দলোক সিলেটের পরিচালক রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রানা কুমার সিনহা ও গীতবিতান বাংলাদেশ এর পরিচালক রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী অনিমেষ বিজয় চৌধুরী। সংগীত পরিবেশন করেন আনন্দলোক ও বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা সিলেটের শিল্পীবৃন্দ। লোকগান পরিবেশন করেন শিল্পী আশরাফুল ইসলাম অনি। শেষ পর্বে ছিল আবীররাঙা হয়ে গানে গানে বসন্তকে আবাহন।

সমাপনী বক্তব্যে ট্রিপল-এ-এর পরিচালক পদ্মশ্রী দে বলেন, আধুনিক জীবন ক্রমেই জটিল হচ্ছে। ইয়োগা ও মেডিটেশন জীবনে প্রশান্তি এনে দেয়। গত দুই বছরে দেশ ও বিদেশ থেকে নানা পেশা ও বিভিন্ন বয়সী মানুষ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এই যাত্রা অব্যাহত রাখতে আমি কাজ করে যাচ্ছি।


এএফ/০৩