১৭ বছরের ঈদ উদযাপনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা

সিলেট মিরর ডেস্ক


এপ্রিল ০৬, ২০২৫
০৫:৩৯ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ০৬, ২০২৫
০৫:৩৯ অপরাহ্ন



১৭ বছরের ঈদ উদযাপনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা
# ছাত্রদলের ঈদ পুনর্মিলনীতে সাবেক ও বর্তমান ছাত্রনেতাদের মিলনমেলা # দেড়যুগ পর পরিবারের সঙ্গে স্বস্তির ঈদ উদযাপন


সিলেটে ব্যতিক্রমি এক ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করলো সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল। শনিবার (৫ এপ্রিল) রাতে দক্ষিণ সুরমা সিলাম পশ্চিম পাড়ায় সেই আয়োজনে সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদল নেতাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

দীর্ঘ ১৭ বছর বহু অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে এবার স্বস্তির ঈদ উদযাপন করেছেন নেতাকর্মীরা। বিগত দিনগুলোর পরিবার বিহীন ঈদ উদযাপনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ১৭ বছর পর আনন্দগণময় ভাবে পরিবারের সঙ্গে এবার ঈদ উদযাপন করতে পারছেন বলে তারা আনন্দিত ও উল্লাসিত।

দলের নেতাকর্মীরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরো রমজান এবং ঈদ উপলক্ষে মানুষের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণসহ বিভিন্ন ভাবে দলের নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে অশ্রু চোখে বিগত দেড়যুগের আন্দোলনে শহীদের কথা স্মরণ করেন নেতাকর্মীরা। অনেকেই বিগত দিনগুলোর স্মৃতি তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ছাত্রদলের এই আয়োজনে উপস্থিত হয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ‘ছাত্রদল প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ ও জাতির প্রয়োজনের কাজ করে যাচ্ছে। বছরের পর বছর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পালিয়ে ছিলেন, নিজের পরিবারকে সময় দিতে পারেননি। আপনি যদি ছাত্রদলের ইতিহাস দেখেন তা হলে দেখবেন এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে রাজনীতির মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যাননি ছাত্রদল নেতারা। ত্যাগ ও বির্সজনের মধ্যে দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ছাত্রদলের।’

গত ১৭ বছর বিভিন্ন কৌশলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রতিহত করার চেষ্ঠা অব্যাহত ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিগত বছর গুলোতে দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের ব্যানারে মিছিল করার সুযোগ পায় নি, এমনকি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠানও করতে পারে নি ছাত্রদল, তা থেকে প্রমাণিত পরিকল্পিতভাবে ছাত্রদলের নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজ বাধাগ্রস্থ করে রেখে ছিলো। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার তারপরও বিগত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ‘

তিনি বলেন, ‘বিএনপির উপর মানুষের এত প্রত্যাশা কারণ হচ্ছে দেশটিকে তলাবিহিন জুড়ি থেকে অল্প দিনের মধ্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমান একটি সফল কার্যক্রর রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে ছিলেন। শহীদ জিয়ার অল্প দিনের সেই নজির দেখে দেশের মানুষ বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন করেছে তার অনুসারিদের পক্ষেই সম্ভব এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৩ বার এই দেশের রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করেছেন। গত ১৭ বছরের এই দেশের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠান গুলোকে যে ভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে। সেগুলো ফিরিয়ে আনাই হচ্ছে বিএনপির কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’

অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলে ঈদ ছিল নিরানন্দ। ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে এবারের ঈদ জনগণের মাঝে আনন্দের সুবাতাস ছড়িয়ে দিয়েছে। এ আনন্দ টেকসই ও অর্থবহ করতে দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার কায়েম ও তাদের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ঘটাতে হবে।’

জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুবের আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দিলোয়ার হোসেন দিনার এবং মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসানের যৌথ পরিচালনায় বিগত ১৭ বছরের ঈদের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম, সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, মহানগর বিএনপির বিগত কাউন্সিলে নির্বাচিত সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ফয়সল আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি জিয়াউল গণি আরেফিন জিল্লুর, সাদিকুর রহমান সাদিক, মহানগর বিএনপির প্রথম যুগ্ম সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা কামরুল হাসান শাহীন, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার রিয়াশাদ আজিম হক, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট হাসান আহমেদ পাটোয়ারী রিপন, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সাবেক মাহবুব, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন, তাজরুল ইসলাম তাজুল, আনোয়ার হোসেন মানিক, শাহ সাইদুর রহমান হিরু, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, বিমানবন্দর বিএনপির আবায়ক আব্দুল কাদির সমসু, জেলা যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মোমিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন বেলাল, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় সংসদের অন্যতম সদস্য এ জে লিমন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাকিল মোর্শেদ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আফসর খান, বিমানবন্দর থানা বিএনপির সদস্য সচিব সারোয়ার রেজা, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসরুর রাসেল, মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি তোফায়েল আহমদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা সিলেট ছাত্রদলের এই ব্যতিক্রমী আয়োজনের জন্য নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং দিনটিকে একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে আখ্যায়িত করেন।-বিজ্ঞপ্তি


এএফ/০৩