সিলেট মিরর ডেস্ক
মে ২৯, ২০২৫
০৭:৫৮ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ২৯, ২০২৫
০৭:৫৮ অপরাহ্ন
আগামী মাসে বাংলাদেশে লেনদেন শুরু করতে যাচ্ছে গুগল পে। প্রাথমিক পর্যায়ে সিটি ব্যাংকের গ্রাহকরা তাঁদের ভিসা ও মাস্টারকার্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায়) গুগল ওয়ালেটের সঙ্গে যুক্ত করতে পারবেন এবং যেকোনো এনএফসি (নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন)-সাপোর্টেড টার্মিনালে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। তবে ধাপে ধাপে দেশের অন্যান্য ব্যাংকও এই সেবায় যুক্ত হবে।
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এখন পর্যন্ত দেশের ব্যাংকিং অবকাঠামোর সঙ্গে গুগল ওয়ালেটের সমন্বয় না থাকায় বাংলাদেশে এই সেবা চালু করা সম্ভব হয়নি।
তবে প্রযুক্তিপ্রেমী শহুরে ব্যবহারকারীদের মধ্যে এনএফসি পেমেন্টের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই উদ্যোগ দেশের আর্থিক লেনদেনের খাতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। আগামী এক মাসের মধ্যে এই সেবা চালু হতে পারে।
জানা গেছে, সিটি ব্যাংক ও গুগল একসঙ্গে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়েছে।
চালু হলে ব্যবহারকারীরা কন্টাক্টলেস পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) টার্মিনালে সহজেই ‘ট্যাপ অ্যান্ড গো’ পেমেন্ট করতে পারবেন, যা তাঁদের কেনাকাটাকে করবে আরো দ্রুত, নিরাপদ ও আধুনিক।
সম্প্রতি ১২ মার্চ থেকে পাকিস্তানেও গুগল পে চালু হয়েছে। এ ছাড়া গুগল পে দক্ষিণ এশিয়ার বাইরেও সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং মালয়েশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও ব্যবহৃত হচ্ছে।
ডিজিটাল কন্টাক্টলেস পেমেন্টের ক্ষেত্রে বেশ এগিয়ে আছে ভারত।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দেশটির মোট ডিজিটাল লেনদেনের ৯৩ শতাংশ এবং লেনদেনের মূল্যের ৯২ শতাংশই ইউপিআইয়ের (ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস) মাধ্যমে হয়েছে। এর মধ্যে গুগল পে একাই লেনদেনের মোট অর্থের ৫১ শতাংশ এবং মোট লেনদেনের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি (৩৭ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ করেছে।
ডিজিটাল ওয়ালেট সেবাগুলো সাধারণত স্পর্শকাতর আর্থিক তথ্য ও লেনদেন পরিচালনা করে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, গুগল ওয়েলেট ব্যবহারকারীর তথ্য সংরক্ষণ করবে না। তাই অ্যাপ চালুর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সরাসরি অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।
ব্যবহারকারীরা শুধু নিজেদের ব্যাংক কার্ড অ্যাপে যুক্ত করবেন, আর সব লেনদেন তাঁদের নিজ নিজ ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। তবে ডিজিটাল ওয়ালেটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন ব্যাংকগুলোকে সেবা চালুর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে হবে।
গুগল ওয়ালেট সাধারণত ব্যবহারকারীদের কেনাকাটা, অনলাইন পেমেন্ট বা ‘পিয়ার-টু-পিয়ার’ (ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি) ট্রান্সফারের মতো লেনদেনে কোনো চার্জ করে না, যদি তাঁরা নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেন।
তবে কার্ডধারীর ব্যাংক তাদের নিজস্ব নীতিমালা, কার্ডের ধরন এবং লেনদেনের প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে ফি ধার্য করতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ যদি লেনদেনটি আন্তর্জাতিক গেটওয়ের মাধ্যমে হয় অথবা বিদেশি মুদ্রা জড়িত থাকে, তাহলে ব্যাংকগুলো সাধারণত ১ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি লেনদেন ফি দিতে পারে। বাংলাদেশে যেসব লেনদেন স্থানীয়, অর্থাৎ দেশের ভেতরে হয়, সেখানে সাধারণত কোনো অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয় না।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যদি গুগল কোনো কারণে এই স্থানীয় লেনদেনটি আন্তর্জাতিক সার্ভারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণ করে, তখন হয়তো ফি লাগতে পারে।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিকাশ, রকেট, উপায়সহ বিভিন্ন স্থানীয় মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্ল্যাটফর্ম ব্যাপক জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য। এ ছাড়া ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডও ডিজিটাল লেনদেনের জন্য সাধারণত ব্যবহৃত হয়।
তবে মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রদানকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। অপারেটররা জানায়, তাদের কাজের ক্ষেত্রে স্পষ্ট নিয়ম-নীতি রয়েছে, যা ঠিক করে দেয় তারা কী করতে পারবে এবং কী করতে পারবে না।
এএফ/০৩