সিলেট মিরর ডেস্ক
জুন ১৩, ২০২৫
০২:৪৯ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুন ১৩, ২০২৫
১১:৪৯ অপরাহ্ন
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবীর সঙ্গে সিলেট প্রেসক্লাবের প্রতিনিধিত্বশীল সাংবাদিকদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত সভায় সাংবাদিক নেতারা সিলেটে ভুঁইফোঁড় সাংবাদিক সংগঠনের অপতৎপরতা বৃদ্ধি ও তাদের অপসাংবাদিকতার বিষয়ে তাকে অবহিত করেন।
এই সময় সাংবাদিক নেতারা বলেন, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে ওঠছে। মূলত এসব সংগঠনের নাম ব্যবহার করে কিছু সুযোগসন্ধানী লোক অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের চেষ্টায় লিপ্ত। এই অশুভ চক্র সাংবাদিকতার নাম ব্যবহার করে নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। ফলে সুস্থ ও পেশাদার সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই চর্চা বন্ধে এখনই সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিক নেতারা আরও বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে নয়, অনেক সংগঠন গড়ে ওঠেছিল ফ্যাসিবাদকে শক্তিশালী করার জন্য। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায় থেকে ফ্যাসিবাদকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকতার মানদণ্ড ও পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় তারা আধিপত্য গড়ে তুলেছে। এরা এখনও বহাল তবিয়তে আছে এবং অপেশাদার আচরণ করছে।
সিলেট প্রেসক্লাব নেতারা এসব ভুঁইফোঁড় ও অপেশাদার সাংবাদিক সংগঠনের ব্যাপারে প্রশাসনকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান। তারা এই ব্যাপারে প্রশাসনের কার্যকর সহযোগিতা কামনা করে বলেন, অপসাংবাদিকতা ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের চিহ্নিত করা না গেলে মূলধারার সাংবাদিকতার পাশাপাশ রাষ্ট্র ও সমাজ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই, এসব অপকর্মকারীদের এখনই রুখতে হবে।
জবাবে বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবীর বলেন, বিগত ১৮ বছর ফ্যাসিবাদকে শক্তিশালী করতে নীতি ও নৈতিকতার বাইরে গিয়ে অনেকে সাংবাদিকতা করেছেন। অন্যায়কে যেখানে প্রতিহত করার কথা সেখানে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। আমরা এমনটা আর চাই না। পেশাদারিত্বের মানদণ্ড বজায় রেখে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে সাংবাদিকতা করতে হবে।
তিনি বলেন, বিগত দিনে ফ্যাসিবাদ জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছিল। এর জন্য অনেকের দায় আছে। অনেকে চাকরি হারানোর ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেননি। কিন্তু কেউ কেউ একনায়কতান্ত্রিক সরকারকে প্রমোট করেছেন, শক্তি জুগিয়েছেন। এদের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।
তিনি সিলেট প্রেসক্লাব নেতাদের বক্তব্য ধৈর্য্যসহকারে শুনেন এবং তাদের উদ্বেগের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে আশ^স্ত করেন।
সভায় বক্তব্য দেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক জালালাবাদ সম্পাদক মুকতাবিস-উন-নূর, সাবেক সভাপতি ও দ্য ফিনান্সিয়্যাল এক্সপ্রেস এর সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি ইকবাল সিদ্দিকী, সাবেক সভাপতি ও দৈনিক সিলেট মিরর সম্পাদক আহমেদ নূর, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও দৈনিক সিলেটের ডাক’র প্রধান বার্তা সম্পাদক এনামুল হক জুবের, সাবেক সহসভাপতি ও দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট ব্যুরো প্রধান আবদুল কাদের তাপাদার, সাবেক সহসভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাকের সিলেট ব্যুরো প্রধান হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী, বর্তমান সিনিয়র সহসভাপতি ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সিলেট ব্যুরো প্রধান খালেদ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা ট্রিবিউনের সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক প্রভাতবেলা সম্পাদক কবীর আহমদ সোহেল, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর সিলেট ব্যুরো প্রধান সেলিম আউয়াল, সিনিয়র সাংবাদিক ও আরটিভির সিলেট ব্যুরো প্রধান কামকামুররাজ্জাক রুনু, বতর্মান কোষাধ্যক্ষ ও এনটিভির স্টাফ ক্যামেরাপার্সন আনিস রহমান, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সিলেট ব্যুরো প্রধান ইয়াহইয়া ফজল, বর্তমান সহসাধারণ সম্পাদক ও বাসসের জেলা প্রতিনিধি শুয়াইবুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক, দৈনিক সংগ্রামের সিলেট ব্যুরো প্রধান কবির আহমদ, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশকার ইবনে আমিন লস্কর রাব্বী, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (ইমজা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ও একাত্তর টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার সাকিব আহমদ মিঠু, সাবেক পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক, দেশটিভির সিলেট ব্যুরো প্রধান খালেদ আহমদ, দৈনিক প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি মানাউবী সিংহ শুভ প্রমুখ।