জৈন্তাপুরে বালুমহালে দা উঁচিয়ে চাঁদাবাজি

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি


জুন ১৮, ২০২৫
০৬:৫৯ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ১৯, ২০২৫
০৬:০৯ অপরাহ্ন



জৈন্তাপুরে বালুমহালে দা উঁচিয়ে চাঁদাবাজি


সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সরকারের বৈধ ইজারাকৃত বড়গাং নদী হতে বালু আহরণ করতে চাঁদাবাজদের হামলায় গুরুত্বর আহত হয়েছেন এক বারকী শ্রমিক। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে এক হাতে দা উঁচিয়ে বুক সমান পানি ঠেলে পানিতে নেমে আসেন এক চাদাবাজ। তাকে বাধা দেওয়ায় একজন বারকি শ্রমিককে দা দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যান। দা উঁচিয়ে চাঁদাবাজ পালানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ইজারাকৃত বড়গাং নদীর বালুমহালের। দা হাতে নিয়ে চাঁদাবাজি করা লোকটি হচ্ছেন জৈন্তাপুরের মাঝের বিল গ্রামের মো. খোকন মিয়া (২৮)। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় খোকন দা দিয়ে আঘাত করে সন্তোষ কুমার (৩৫) নামে এক বারকি শ্রমিককে আহত করেছেন। স্থানীয় লোকজন আহত শ্রমিককে বালুমহাল থেকে উদ্ধার করে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়েছেন।

জানা গেছে, গত ১লা বৈশাখ হতে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার বড়গাং নদীর ইজারা গ্রহণ করেন সনি সোহা এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার চন্দন তালুকদার। সরকারের সকল নীতিমালা মেনে তারা বারকী শ্রমিকদের মাধ্যমে বালু আহরণ করে আসছে। সম্প্রতি একটি চক্র ইজারাদারের বৈধ ভাবে বড়গাং নদী হতে বালু আহরণ কালে রূপচেং মাঝের বিল এলাকার মৃত শমসুর উদ্দিন এর ছেলে জাটকা জামাল (৩২), করিম আলীর ছেলে মজিদ (৫০), নিজপাট ইউপির সাবেক মেম্বার আ. নূর মেম্বার (৫০), মোজন আলীর ছেলে আলাই মিয়া (৪৫) মজর আলীর ছেলে জমির উদ্দিন ওরফে কলা জমির (৪৫), তসির আলীর ছেলে আবুল (৩৫), আম্বুলার ছেলে আব্দুল জলিল (৪২) সহ বাবুল মিয়া (৪৫), ইসলাম মিয়া (৩৮) এর নেতৃত্বে রূপচেং মাঝেল বিল এলাকায় বারকী শ্রমিকদের গতিরোধ করে নৌকা প্রতি ৩শত/ ৫শত এবং ৮শত টাকা করে দাবী করে। এছাড়া কিছু শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মুজিদ মিয়া বলেন, আপনারা যার সাথে বুঝার তার সাথে বুঝেন (ইউএনও, এসিল্যান্ড, পুলিশ ও সেনাবাহিনী) সাথে বুঝেন তবুও আমাদেরকে টাকা দিতে হবে। নতুবা ঝামেলায় পড়তে হবে। শ্রমিকা ইজারাকৃত নদী হতে বালু আনতে টাকা দিতে অস্বীকার করলে মাঝের বিল গ্রামের মখলিছ মিয়ার ছেলে মো. খোকন মিয়া (২৮) বারকী শ্রমিকদের উপর দেশিয় খাঁসিয়া দা নিয়ে অর্তকিত ভাবে হামলা হামলা চালায়। হামলায় উপজেলার গাতিগ্রামের বাবুল নাথ এর ছেলে সন্তোয় কুমার (৩৫) আহত হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন। 

এদিকে ইজারাদারের বৈধ কোয়ারী হতে বালু আহরনে স্থানীয় প্রভাবশালী চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজীর সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে গেলে চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে বেলা ১২টায় পুনরায় তারা চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা এসে চাঁদা দাবী করে। শ্রমিকরা চাঁদা না দিলে তারা হামলা করে।

এদিকে ইজারাদারের পক্ষে আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, সরকারি নিয়মে আমরা বালু আহরণ করছি। গত কয়েক দিন হতে চক্রের সদস্যরা বেআইনি ভাবে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করছে। আজ সরাসরি তারা ইউএনও, এসিল্যান্ড, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর নাম জড়িয়ে শ্রমিকদের হুমকী দিয়ে চাঁদা আদায় ও দাবী করে। চাঁদা না দেওয়ার কারনে তারা হামলা করে। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। 

জৈন্তাপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার (লাবনী) বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছালে চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা পালিয়ে যায়। আমি চলে আসার পরে শুনেছি পুনরায় শ্রমিকদের উপর হামলা করা হয়। বিষয়টি উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। নিদের্শ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার মোহাম্মদ বদিউজ্জামান বলেন, এই বিষয়ে আমি অবগত নই, অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।





এএফ/০৩