গণপরিবহন বন্ধে বিপাকে মাধবপুরের চালক-শ্রমিকরা

এস এম রাকিব, মাধবপুর


এপ্রিল ২৬, ২০২০
০৯:৩৪ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২৬, ২০২০
০৯:৩৪ অপরাহ্ন



গণপরিবহন বন্ধে বিপাকে মাধবপুরের চালক-শ্রমিকরা

ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২৬ মার্চ থেকে দেশের সকল গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। সরকারি এ সিদ্ধান্ত মেনে হবিগঞ্জের মাধবপুরের পরিবহণ শ্রমিকরাও তাদের গাড়ি বন্ধ রেখেছেন।

তবে গাড়ির চাকা বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন উপজেলায় কয়েক হাজারের মতো পরিবহন শ্রমিক। প্রথমদিকে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ছিল গণপরিবহন। পরে পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় চার দফা বাড়িয়ে ছুটি ৫ মে পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়।

এদিকে ছুটির মেয়াদ যতই বাড়ছে ততই খাদ্য সংকটে পড়ছেন শ্রমিকরা। প্রথমদিকে খাদ্য সহায়তা পেলেও বর্তমানে তাও মিলছে না। এতে করে পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন উপজেলার শ্রমিকরা।

তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, সিএনজি অটোরিকশা ও অন্যান্য পরিবহন শ্রমিকদের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১০০ শ্রমিককে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে হয়তো আরও শ্রমিকদের সহায়তা দেওয়া হবে।

তবে শ্রমিকরা বলছেন, মাধবপুর মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নে (রেজিস্ট্রেশন নং- ১৪৪০) সদস্যই আছেন ৩০০ জন। এর বাইরে এ কাজে সম্পৃক্ত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫০০। এর বাইরেও উপজেলার বিভিন্ন গাড়ি আরও কয়েক হাজার শ্রমিক রয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই নিত্য রোজগার করে সংসার চালান। কিন্তু বর্তমানে গাড়ির চাকা বন্ধ থাকায় বন্ধ হয়ে যায় আয়ের পথ। অথচ এ আয় দিয়েই বেশিরভাগ শ্রমিকের ঘরের চুলায় আগুন জ্বলে।

মাধবপুর মাইক্রোবাস সমিতির সম্পাদক রোমান মিয়া বলেন, শ্রমিকের বিরাট অংশ পরিবহন বন্ধ থাকায় আজ অভুক্ত থাকছে। আমাদের প্রায় ৩০০ সদস্যসহ খেটে খাওয়া এ শ্রমিকদের বরাদ্দের জন্য আমাদের সভাপতি এবং সকলের মতে উপজেলা প্রশাসন বরাবর আমরা আবেদন করতে যাচ্ছি। করোনার প্রভাব শুরু হওয়া পর্যন্ত আমাদের শ্রমিক ভাইদের এখনও কোনো সহযোগিতা করা হয়নি। আমরা আশা করি বাংলাদেশ সরকার শ্রমিকদের সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দেবে।

মাধবপুর মাইক্রোবাস সমিতির সাবেক সম্পাদক মোহন মিয়া বলেন, বর্তমানে জরুরি অবস্থায় দেশজুড়ে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন ঘরে বসেই শ্রমিকরা দিন কাটাতে হচ্ছে। সরকারি নির্দেশে ও দেশের প্রয়োজনে ঘরে থাকতে গিয়ে শ্রমিকরা কর্মহীন হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। শ্রমিকরা আজ খাদ্যসামগ্রী সহায়তার আশায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দিকে তাকিয়ে আছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসনুভা নাশতারান বলেন, আমরা সম্প্রতি উপজেলার ১০০ শ্রমিককে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। যদি আমাদের কাছে কেউ খাদ্য সহায়তার জন্য আবেদন করেন, তাহলে আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। কারণ বিচ্ছিন্নভাবে খাদ্য সহায়তা দিলে দেখা যায় একজন কয়েকবার পায় আর কেউ একেবারেই পাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা শ্রমিকদের তালিকা করে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন। এছাড়াও বিভিন্নভাবে শ্রমিকদের সহায়তা করা হচ্ছে।

 

এসএম/আরআর