করোনা যুদ্ধ জয়ের দাবি নিউজিল্যান্ডের

সিলেট মিরর ডেস্ক


এপ্রিল ২৭, ২০২০
০৮:৩০ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২৭, ২০২০
০৮:৩৬ অপরাহ্ন



করোনা যুদ্ধ জয়ের দাবি নিউজিল্যান্ডের
নিউজিল্যান্ডে ব্যাপক হারে অ-শনাক্তকৃত কোন কম্যুনিটি সংক্রমণ নেই -জেসিন্ডা

কমিউনিটি পর্যায়ে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধ করতে সমর্থ হয়েছে দাবি করেছে নিউজিল্যান্ড। যে কারণে কার্যকরভাবে করোনাভাইরাস থেকে দেশটি মুক্তি পেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা এক অঙ্কে নেমে এসেছে দেশটির। গতকাল রবিবার নতুন করে মাত্র একজন আক্রান্ত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডান বলেছেন, তার দেশ এখনকার মত ‘এ যুদ্ধে জিতেছে’। খবর বিবিসি’র। 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নিউজিল্যান্ডে সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে নেওয়া কঠোর বিধি নিষেধ শিথিল করার কয়েক ঘণ্টা আগে এ খবর পাওয়া গেল। আজ মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে অত্যাবশ্যক নয় এমন কিছু ব্যবসায়িক খাত, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হবে। তবে করোনা ভাইরাস ঠেকাতে পাওয়া সাফল্য নিয়ে ‘আত্মপ্রসাদে’ যেন কেউ না ভোগেন, সে বিষয়ে কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন।

লকডাউন তুলে নেওয়া হলেও বেশিরভাগ মানুষকেই এখনো সারাক্ষণ বাড়িতেই থাকতে হবে এবং সব ধরণের সামাজিক মেলামেশা বন্ধ রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডান এক সরকারি ব্রিফিং এ বলেছেন, ‘আমরা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করছি, কিন্তু মানুষের সামাজিক জীবন এখনি আবার চালু করা হচ্ছে না।’ নিউজিল্যান্ডে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে ১ হাজার ৫০০ চেয়ে কম মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১৯ জন মারা গেছেন।

ভয়াবহ অবস্থা এড়ানো গেছে: নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অ্যাশলি ব্লুমফিল্ড বলেছেন, ‘গত কয়েক দিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কমে আসায় করোনা ভাইরাস দূর করার জন্য সরকার যে লক্ষ্য ঠিক করেছে, তা আমরা অর্জন করতে পেরেছি বলে আমাদের বিশ্বাস।’ তবে মিস আর্ডান এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক দুজনই সতর্ক করেছেন যে ভাইরাস নির্মূল হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার মানে এই নয় যে দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কেউ আর নতুন করে শনাক্ত হবেন না।

কিন্তু সে সংখ্যা হবে খুবই কম এবং সহজে সামাল দেওয়া যাবে। আর্ডান বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে ব্যাপক হারে অ-শনাক্তকৃত কোন কম্যুনিটি সংক্রমণ নেই। সে যুদ্ধে আমরা জিতেছি। কিন্তু আমাদের যেন অবস্থাটা এমনই রাখতে পারি সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’

কড়া ব্যবস্থা: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে নিউজিল্যান্ডে যখন মাত্র ডজনখানেক রোগী শনাক্ত হন, তখনি দেশটি স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং ভ্রমণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। দেশটির সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং দেশটিতে প্রবেশ করা সকল মানুষকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। এছাড়া কঠোর লকডাউন আরোপ করা হয়, এবং নমুনা পরীক্ষার হার বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে জোরদার করা হয় কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং এর ব্যবস্থাও।

প্রধানমন্ত্রী মিস আর্ডান বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরুর পর পরই যদি দ্রুত লকডাউন না দেওয়া হত, তাহলে দিনে এক হাজারের ওপর নতুন রোগী শনাক্ত হত। পরিস্থিতি কত খারাপ হতে পারত কেউ জানে না, কিন্তু ‘আমাদের আগাম পরিকল্পনায় আমরা সবচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতি এড়াতে পেরেছি।’

সোমবার মধ্যরাত থেকে দেশটিতে লেভেল ফোর পর্যায়ের লকডাউন থেকে লেভেল থ্রিতে নামিয়ে আনা হবে। এর মানে হচ্ছে, টেকঅ্যাওয়ে সরবারহের জন্য রেস্তোরাঁ খোলা রাখাসহ বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই কাজকর্ম শুরু করতে পারবে। কিন্তু মুখোমুখি দেখা সাক্ষাৎ হয়, এমন কোন কর্মকাণ্ডের অনুমোদন দেওয়া হবে না। বাসিন্দাদের আগের মতই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সংস্পর্শে থাকা এবং যেকোন মানুষের সঙ্গে দুই মিটার দূরত্বে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গণজমায়েত এখনো আগের মত নিষিদ্ধ থাকবে, শপিং সেন্টার বন্ধ থাকবে এবং অধিকাংশ শিশু স্কুলে যাবে না। নিউজিল্যান্ড সীমান্তও বন্ধ থাকবে।

 

এএফ/০৫