হাওরের ধান উঠছে গোলায়, কৃষাণ-কৃষাণীর মুখে হাসি

আলী আহমদ, জগন্নাথপুর


মে ০১, ২০২০
১০:০০ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ০১, ২০২০
১০:০০ অপরাহ্ন



হাওরের ধান উঠছে গোলায়, কৃষাণ-কৃষাণীর মুখে হাসি

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের হাওরাঞ্চলে এখন পুরোদমে ধান কাটা, মাড়াই দেওয়া আর ধান শুকানোর কাজ চলছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকের পাশাপাশি কৃষাণীরা প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে রোজার মধ্যে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ধান গোলায় তোলার কাজে। তাদের সহায়তা করছেন কৃষক পরিবারের অন্য লোকজন।

উপজেলার হাওরে হাওরে ধান কাটা, প্রতিটি খলা (ধান শুকানোর মাঠ), বাসা-বাড়ির উঠান, ছাদ এবং সড়কে ধান শুকানোর কাজ চলছে বিরামহীনভাবে। এমন দৃশ্য এখন জগন্নাথপুরের হাওরাঞ্চলজুড়ে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, জগন্নাথপুরে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) পর্যন্ত ৭৭ ভাগ ধান কাটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, আগামী দুই/তিনদিনের মধ্যে জগন্নাথপুরের সবক'টি হাওরে ধান কাটা সম্পন্ন হবে। আগাম বন্যার শঙ্কা অনেকটাই কেটে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে। উপজেলার ছোট-বড় ১৫টি হাওরে ২০ হাজার ৫শ হেক্টর বোরো ফসল চাষাবাদ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় কৃষকরা জানান, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে ছোট ছোট হাওরগুলোতে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবার করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দেশের অন্য এলাকা থেকে প্রথমদিকে শ্রমিক না আসায় ফসল কর্তন নিয়ে বিপাকে পড়েন কৃষকরা। এর মধ্যে শুরু হয় ঝড়, বৃষ্টি আর বজ্রধ্বনি। প্রশাসন থেকে প্রচার করা হয় আগাম বন্যার শঙ্কা রয়েছে। এজন্য পাকা ধান দ্রুত কাটতে হাওরজুড়ে মাইকিং করা হয়। ১৫ এপ্রিল থেকে প্রতিটি হাওরের ধান কাটা শুরু হয় স্বল্প সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে। হাওরের ধান কাটার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, বাইরের এলাকা থেকে শ্রমিক এলে তাদেরকে যাতায়াতে কোনো বাধা প্রদান করা হবে না। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধান কাটার শ্রমিক আসা শুরু হয়। বন্যার শঙ্কায় কৃষকের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জমির পাকা ধান স্বেচ্ছাশ্রমে কেটে দিচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশ সদস্যসহ স্বেচ্ছাসেবীরা।

শঙ্কার মাঝেই কষ্টার্জিত পাকা ফসল কাটতে পেরে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। নলুয়া হাওরপাড়ের কৃষক নেতা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, হাওরে এখন পুরোদমে ধান কাটার ধুম পড়েছে। গোলায় ধান তুলতে কৃষক, কৃষাণী ও কৃষি পরিবারের ছোট-বড় সব বয়সী মানুষ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বন্যার শঙ্কা কেটে যাওয়াতে প্রকৃতির হাসিতে কৃষকরাও হাসছেন।

জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজুল আলম মাসুম বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক হাওরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। খুব দ্রত পাকা ধান কাটা শেষ হবে। জগন্নাথপুরে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে।

 

এএ/আরআর