এমসি কলেজ প্রতিনিধি
মে ১৬, ২০২০
১২:২৮ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ১৬, ২০২০
১২:৩২ অপরাহ্ন
দুর্দিনে অসহায় কর্মচারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে সিলেট এমসি (মুরারীচাঁদ কলেজ) কলেজ ও সিলেট সরকারি কলেজ অ্যালামনাই এসোসিয়েশন। করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা কলেজের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য ফান্ড গঠন করে মানবিক সাহায্য দিচ্ছেন এসোসেয়েশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
কলেজ থেকে সাধারণত চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা মূল বেতন দেওয়া হতো তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের। মূল বেতন এবং পরীক্ষার দায়িত্ব, বিভিন্ন দিবস ও অনুষ্ঠানের সুবাদে যা পেতেন তা দিয়েই কোনোরকমে সংসার চলতো মাস্টাররোলে চাকরি করা এসব কর্মচারীর পরিবার। কিন্তু কলেজ বন্ধ থাকার ফলে তাদের সেই আয়ের পথ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে অসহায় হয়ে পড়েন তারা। যেসব শিক্ষার্থী টিউশনির টাকার ওপর নির্ভরশীল তারাও অসহায় হয়ে পড়ে।
সিলেট সরকারি কলেজ ও এমসি কলেজ এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন ইউএস এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। মাস্টাররোলে চাকরি করা কর্মচারীদের জন্য প্রায় তিনলক্ষ টাকার একটি সহায়তা ফান্ড গঠন করা হয়। যার ফলে এমসি কলেজসহ দেড়শোরও বেশি কর্মচারীর ঘরে চাল-ডালসহ ১৪টি আইটেমের খাদ্য পৌঁছে দেওয়া হয়। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কলেজের বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
এই কলেজের ১৩০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মকর্তা-কর্মচারী আগেই তাদের একদিনের বেতনের টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে এমসি কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক তৌফিক এজদানী বলেন, ‘কলেজ বন্ধ হওয়ার ফলে, মাস্টাররোলে চাকরি করা কর্মচারীরা বিপাকে পড়ে যান। তাদের জন্য কি করা যায়, সে বিষয়ে প্রথম থেকেই আমরা সচেতন ছিলাম। আমাদের বিভিন্ন সংগঠন, ও পরিচিত মহলের সাথে যোগাযোগ শুরু করি। ইতিবাচক সাড়াও পাই। অনেকে আবার নিজ থেকেই এগিয়ে আসেন। বিশেষ করে কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ সহযোগিতায় আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসেন। এছাড়াও ডিপার্টমেন্টের প্রধান ও স্টাফ কাউন্সিলের সদস্যরা ব্যক্তিগতভাবে অসহায় শিক্ষার্থী ও এসব কর্মচারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ঈদ পর্যন্ত সহযোগিতা কার্যক্রম চলবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বৈশ্বিক এই সংকটে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখিয়েছেন রুহেল বিন সাইয়্যেদ নামে এমসি কলেজের এক শিক্ষার্থী। দেশের এই সংকটে ইংলিশ অলিম্পিয়াড থেকে অর্জন করা নিজের মূল্যবান মেডেলটি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেন রুহেল। অনলাইনে চলা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মেডেলটা ৩৪ হাজারের বেশি টাকায় বিক্রি হয়ে যায়।
রুহেল বলেন, ‘দেশের এই সংকটে জীবনের সেরা অর্জনটি বিলিয়ে দিতে পেরেছি বলে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’ এমসি কলেজ মাস্টার্সে অধ্যয়ন করা, ইংরেজি সাহিত্যের এই ছাত্র বলেন, নিলামে উঠা টাকাসহ আরও কিছু মিলিয়ে আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে আশা করি একশরও বেশি মানুষকে সাহায্য করতে পারব।’
অসহায়দের আরও সহযোগিতা করছেন আজহার উদ্দিন শিমুল নামের মুরারিয়ান।
এএ-০১/এনপি-১৫