করোনাকাল : দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়েছে ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ

সিলেট মিরর ডেস্ক


মে ২৪, ২০২০
০৩:০৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ২৪, ২০২০
০৩:০৫ পূর্বাহ্ন



করোনাকাল : দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়েছে ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ
শহুরে মানুষের আয় কমেছে ৭৫ শতাংশ, গ্রামের ৬২ শতাংশ

মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে মানুষ ঘরবন্দি থাকায় থমকে গেছে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। এতে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে দরিদ্র-অতি দরিদ্র মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। দেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে শহরের ৭৫ শতাংশ ও গ্রামে ৬২ মানুষের আয়-রোজগার কমে গেছে। নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়েছে ৩ কোটি ৬৯ লাখ ৪৪ হাজার মানুষ।

যদিও দেশে আগে থেকে দরিদ্র ছিল ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। সবমিলিয়ে ৭ কোটি দরিদ্র মানুষ করোনার কারণে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। তাদের খাদ্যসহায়তা এবং অতি প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটাতে প্রতিমাসে ১০ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা প্রয়োজন।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) এক জরিপ প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

‘কোভিড-১৯ এর সময় জীবিকা ক্ষতি ও সহায়তা’ শীর্ষক গবেষণায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়। অতি দরিদ্র, দরিদ্র,ঝুঁকিপূর্ণ এবং ‘দারিদ্র্য সীমার বাইরে’ জনগোষ্ঠি এই চার শ্রেণীর ৫ হাজার ৪৭১ জন মানুষের ওপর জরিপ চালিয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। যার মধ্যে ৫১ শতাংশ মানুষ গ্রামের। এতে গত ফেব্রুয়ারির সঙ্গে এপ্রিলের তথ্য-উপাত্তের বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি হিসেবে দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। করোনাভাইরাসের কারণে এই সংখ্যা আরো ২২ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে হবে ৪৩ শতাংশ।

করোনার কারণে অতি দরিদ্র ৭৩ শতাংশ, মধ্যম দরিদ্র ৭৫ শতাংশ, দারিদ্র্য সীমার বাইরে কিন্তু ঝুকিপুর্ণ মানুষের ৬৭ শতাংশ এবং দারিদ্য্র সীমার বাইরের মানুষের রোজগার ৬৫ শতাংশ কমে গেছে। পেশাওয়ারি সবচেয়ে বেশি রোজগার কমেছে রেস্তেরাঁ কর্মীদের। তাদের রোজগার কমেছে ৯৯ শতাংশ।

রোজগার কমার ক্ষেত্রে এর পরের অবস্থানে আছে ভাঙারি ওয়ার্কাররা। তাদের রোজগার কমেছে ৮৮ শতাংশ। রিকশা চালকদের আয় কমেছে ৮৪ শতাংশ। দিনমজুর ও শিল্পী সমাজের আয় কমেছে ৮৩ শতাংশ। মালি ও কারখানা কর্মীদের আয় কমেছে ৮০ শতাংশ। এছাড়া দক্ষ শ্রমিকদের ৭৯ শতাংশ, কৃষি শ্রমিকদের ৭৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ৭৩ শতাংশ এবং দোকান, সেলুন ও পার্লারের কর্মীদের রোজগার কমেছে ৭২ শতাংশ।

পোশাক কর্মীদের আয় কমেছে ৪৯ শতাংশ,কৃষকের ৪৪ শতাংশ, পিয়ন ও নিরাপত্তারক্ষীদের ৪৩ শতাংশ, অফিসের আনুষ্ঠানিক কর্মীদের কমেছে ৩৩ শতাংশ এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের আয় কমেছে ২৭ শতাংশ। আয় কমে যাওয়ায় তারা খাবারের পিছনে ব্যয় কমাতে বাধ্য হয়েছেন।

সূত্র : বাসস