কমলগঞ্জে চর অপসারণে সরকারের গচ্চা সাড়ে ৪ কোটি টাকা

সজীব দেবরায়, কমলগঞ্জ


জুলাই ০৬, ২০২০
০৫:০৩ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ০৬, ২০২০
০৬:৪২ অপরাহ্ন



কমলগঞ্জে চর অপসারণে সরকারের গচ্চা সাড়ে ৪ কোটি টাকা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর অপরিকল্পিত চর অপসারণের খনন কাজের কারণে সরকারের সাড়ে ৪ কোটি টাকা গচ্চা দিতে হয়েছে। তবে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী এই গচ্চা যাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। 

জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার বুক দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদীর গুরুত্বপূর্ণ বাঁকসমূহে বালীর চর জমে নদীর নাব্যতা কমে গিয়েছিল। আঁকাবাঁকা ও ইউ আকৃতির ধলাই নদীতে অসংখ্য চর থাকার ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছিল। অল্প বর্ষণেই উজানের পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদী ফুলে ফেঁপে ওঠে। প্রবল স্রোতে বাঁক ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিত। নদীর ভাঙনের কারণে বাড়িঘর, ফসলি জমি ও গ্রাম্য রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়ে আসছিল। ফলে বিপুল সম্পদ, ফসল বন্যার পানিতে বিনষ্টসহ মানুষের বাড়িঘর নদীর ভাঙনের শিকার হতো। কমলগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার খাল, জলাশয় ও নদী পুনর্খনন প্রকল্পের (১ম পর্যায়ের) আওতায় মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা সমস্যা থেকে উত্তরণে ও ধলাই নদীর স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে বড় বড় ২২টি স্থান চিহ্নিত করে চর অপসারণ খনন প্রকল্প হাতে নেয়।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩টি প্যাকেজে ঢাকার আরাধনা এন্টারপ্রাইজ চর অপসারণ করার কাজ পায়। চর কাটার কাজের নির্দেশনাপত্র হলেও নানা জটিলতায় কিছুটা বিলম্বে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে আংশিক কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি কমলগঞ্জ পৌরসভার আলেপুর (উজিরপুর) এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে কাজের উদ্বোধন করেন কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সংসদীয় আসনের সাংসদ ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থানে ২২টি বড় চর অপসারণ কাজ করলেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অপরিকল্পিত চর খননের কারণেই অপসারণকৃত চর এলাকায় পুনরায় আগের চেয়ে আরও বড় আকারে চর জেগে উঠেছে। নতুন করে হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন নদীর পাড়ে বসবাসকারী ও স্থানীয় কৃষকরা। মাঝপথে সরকারের গচ্চা গেছে সাড়ে ৪ কোটি টাকার উপরে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রকৌশলী বলেন, চর অপসারণের সঙ্গে সঙ্গে যদি জ্যাম্প করা হতো, তবে এত তাড়াতাড়ি পুনরায় চর ভরাট হতো না।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড, মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তীর সঙ্গে আলাপ করলে তিনি বলেন, 'বর্ষা মৌসুম থাকায় এবং নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে কিছু কিছু স্থানে পুনরায় চর দেখা দিয়েছে। আমরা যতটুকু কাজ পাব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ততটুকুই বিল দেব। যার কারণে সরকারি টাকা গচ্চা যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে হ্যাঁ, যদি সঙ্গে সঙ্গে জ্যাম্প দেওয়া যেত, তবে দীর্ঘমেয়াদী সুফল পাওয়া যেত।'

 

আরসি-০৩