সিলেটে গরম মসলার বাজার ঠান্ডা

নিজস্ব প্রতিবেদক


জুলাই ১৮, ২০২০
০২:০৬ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১৮, ২০২০
০২:০৬ অপরাহ্ন



সিলেটে গরম মসলার বাজার ঠান্ডা

পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর চাহিদা বাড়ে মসলা জাতীয় পণ্যের। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পায় দামও। তবে এবার ব্যাতিক্রম। তেমন দাম বাড়েনি মসলার। তবে দাম বেড়েছে সবজির।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। গত কয়েকমাস ধরে মসলার বিক্রি কম হয়েছে। অনেক ব্যবসায়ীর কাছে আগের অবিক্রির মসলা জমা রয়েছে। তাই এবার তেমন দাম বাড়েনি।

শুক্রবার (১৭ জুলাই) সিলেট নগরের কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা যায়, বাজারে দেশি পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৩২ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ২২ থেকে ২৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি ও আমদানি করা রসুন মানভেদে প্রতি কেজি ৭০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, হলুদ ১৪০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা, আদা ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, জিরা ৩৮০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা, দারুচিনি ৩৮০ টাকা থেকে ৪৬০ টাকা, লবঙ্গ ৭৫০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকা, এলাচ ২ হাজার ৭শ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা, শুকনো মরিচ ১৮০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা, তেজপাতা ১শ টাকা থেকে ১২০ টাকা ও ধনেপাতা ১শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত বছরের এই সময়ে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ মানভেদে ৩৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা, রসুন ১২০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা, হলুদ ১৮০ টাকা থেকে ২২০ টাকা, এলাচ ১ হাজার ২শ টাকা থেকে ১ হাজার ৬শ টাকা ছিলো। গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এবার পণ্যের দাম ১০ থেকে ৪০ শতাংশ কম।

নগরের বন্দরবাজার এলাকার ব্যবসায়ী তারিফ মিয়া বলেন, মসলা জাতীয় পণ্যের বাজার ক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণে। গত কয়েকবছর ঈদের আগের মাসে যে পরিমাণ বিক্রি হতো এবার তা নেই। করোনাভাইরাসের কারণে অনেকে কোরবানিই দিবে না। তাই মসলার বিক্রি কম।

একই বাজারের ক্রেতা তানভীদ আহমদ বলেন, এবার মসলা জাতীয় পণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। তবে এই কম টাকায় মসলা কেনার টাকাও আমাদের কাছে নেই। করোনার কারনে বেশিরভাগ মানুষের আয় রোজগার বন্ধ। 

এদিকে সিলেট নগরের কয়েকটি সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। তবে দাম বেশি। গতমাসে ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা থেকে ২শ টাকায়। এছাড়া বাজারে প্রতি কেজি কাঁকরোল ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঝিঙা ও চিচিঙা ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, আলু ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে জালি লাউ আকারভেদে ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মদিনা মার্কেট এলাকার সবজি বিক্রেতা সমছু মিয়া জানান, বন্যা ও সরবরাহ কম থাকায় সবজির দাম বেড়েছে।

বাজারে প্রচুর ফলের সরবরাহ দেখা গেছে, কেজিতে বিভিন্ন জাত ও মানের আম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পেঁয়ারা ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা, লটকন ৮০ টাকা থেকে ১শ টাকা, আপেল ১৪০ টাকা থেকে ২শ টাকা, মালটা ১৮০ টাকা থেকে ২শ টাকা ও প্রতি হালি আনারস আকারভেদে ১শ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

বাজারে কিছু বেড়েছে চালের দাম। প্রতি কেজি জিরা সিদ্ধ ৬০ টাকা, মিনেিকট ৫২ টাকা, কাজললতা ৫২ টাকা, কাটারী ৫৭ টাকা, পাইজম ৪৮ টাকা, সুপার মালা ৫০ টাকা ও চিনিগুড়া ১শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। 

নগরের রিকাবীবাজার এলাকার আল-মদিনার স্টোর এর স্বত্বাধিকারী জানান, প্রতি কেজি চালের দাম গড়ে ২ থেকে ৫ টাকা কেজিতে বেড়েছে।

ঈদকে গিয়ে কিছুটা কমেছে মাংসের দাম। চলতি মাসের শুরুতে ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫২০ টাকা কেজিতে। 

এছাড়া বাজারে প্রতি হালি মুরগির ডিম ৩৫ টাকা, হাঁসের ডিম ৪৫ টাকা, চিনি ৬০ টাকা, বড় দানার মসুর ডাল ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা, খোলা আটা ৩০ টাকা ও ময়দা ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এনএইচ/বিএ-০৬