টানা তিন টেস্টে সেঞ্চুরি করে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা পান আজহার

খেলা ডেস্ক


জুলাই ২০, ২০২০
০৬:০৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২০, ২০২০
০৬:২৩ পূর্বাহ্ন



টানা তিন টেস্টে সেঞ্চুরি করে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা পান আজহার

অভিষেকের টানা তিন টেস্টে সেঞ্চুরি করায় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজিব গান্ধী ফোন করে শুভেচ্ছা জানান আজহার উদ্দিনকে। ১৯৮৪ সালে দিল্লি টেস্টে বাজে পারফর্ম করার পর সেই সময়ের 'পোস্টার বয়' সন্দীপ পাতিলকে বাদ দেওয়া হয়। অধিনায়ক কপিল দেবের হাতে ঘরোয়া ক্রিকেটে তুখোড় ফর্মে খেলতে থাকা মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন ছিলেন অটোমেটিক চয়েস। তখন তার বয়স মাত্র ২১। দুর্দান্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক। ম্যাচ শুরুর ১ ঘণ্টা আগেও আজহার জানতেন না যে তিনি একাদশে থাকবেন।

ওই সময়ের স্মৃতিচারণ করে আজহার বলেন, 'ম্যাচ শুরুর ৪৫ মিনিট আগে হঠাৎ জানতে পারি আমি খেলব। শুরুতে একটু নার্ভাস থাকলেও, আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। তার আগে গত তিন চার মাস ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ ফর্মে ছিলাম। রনজি ট্রফিতে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সুযোগ পাই জাতীয় দলে। নির্বাচকরাও আমার উপর আস্থা রেখেছিলেন। প্রথম দুই টেস্টে দ্বাদশ ব্যক্তি হিসাবে দলে ছিলাম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে গেলে কেমন মানসিক প্রস্তুতি দরকার হয় সেটা তখন বুঝতে পারি। খেলা দেখে অনেক কিছু শিখেছি। আমি আসলে খুব ভালো পর্যবেক্ষক।'

কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ঐতিহাসিক টেস্ট অভিষেকের স্মৃতি এখনো পুঙ্খানুপুঙ্খ মনে রেখেছেন ফিক্সিংয়ের অভিযোগে নিষিদ্ধ এই তারকা ক্রিকেটার। তিনি বলেন, 'ডিসেম্বরের শেষ দিকে কলকাতায় বেশ ঠান্ডা ছিল। সেই প্রথমবার এত দর্শকদের সামনে খেলতে নেমেছিলাম। পরিস্থিতির সদ্ব্যবহার করে ইংলিশ পেসাররা দারুন সুইং করছিল। স্ট্রোক প্লেয়ারদের জন্য মোটেই সেই পিচ আদর্শ ছিল না। ১০ রানের মাথায় একবার বেঁচে গিয়েছিলাম। সেঞ্চুরি করতে ৩০০ র বেশি বল লেগে গিয়েছিল। অভিষেক টেস্টেই সেই সেঞ্চুরি অনেক তৃপ্তি এনে দিয়েছিল আমাকে।'

ইডেন আর আজহার- প্রেমপর্বের সেই শুরু। ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে ইডেনে ৭টা টেস্ট খেলেছেন হায়দরাবাদের এই তারকা। এর মধ্যে ৫টি সেঞ্চুরিসহ ১০৭.৫০ গড়ে করেছেন ৮৬০ রান। তার আগে স্কুল পর্যায়ে ক্রিকেট খেলতে এসেও ইডেনে হাফ সেঞ্চুরি করে যান তিনি। ইডেনের সেই টেস্ট ভারত জেতার পর সিরিজের চতুর্থ ম্যাচ হয় মাদ্রাজে। প্রথম ইনিংসে ৪৮ করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফেলেন। সেই টেস্টেই লালা অমরনাথের সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় ইনিংসে যথাক্রমে ১১০ ও ১৯০ রানের পার্টনারশিপ উপহার দেন আজহার।

শেষ টেস্টে কানপুরের গ্রিন পার্কেও আজহারের ব্যাট থেকে আসে সেঞ্চুরি। অভিষেকের পর টানা তিন টেস্টে সেঞ্চুরি করে ইতিহাস বইয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। ১১২ রানের ঝকঝকে ইনিংস নিয়ে আজহার বলেন, 'দিনের শেষে ৯৮ রানে ব্যাট করছিলাম। অনেকেই জিজ্ঞাসা করছিল, ঠিকমত ঘুমাতে পারবো কিনা। অবশ্যই আমি ভালোভাবে ঘুমিয়েছিলাম। রেকর্ড সম্পর্কে তখন কিছুই জানতাম না। লাঞ্চব্রেকের সময় ড্রেসিংরুম থেকে আমাকে কমেন্ট্রি বক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। আসলে আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চাইছিলেন রাজীব গান্ধী। তিনি আমাকে ফোনে শুভেচ্ছা জানান।'

এএন/০২