ওসমানীনগরের হাওর-বিলে ছড়িয়ে আছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল

ওসমানীনগর প্রতিনিধি


আগস্ট ২৬, ২০২০
০৭:৩২ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ২৬, ২০২০
০৭:৩২ অপরাহ্ন



ওসমানীনগরের হাওর-বিলে ছড়িয়ে আছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল
নেই প্রশাসনিক নজরধারী

ওসমানীনগরের হাওর, খাল-বিল ও জলাশয়ে মাকড়শার জালের মতো ছড়িয়ে আছে নিষিদ্ধ ঘোষিত কারেন্ট জাল। এক শ্রেণির লোভী শিকারী সরকারি বিধি-নিষেধের তোয়াক্কা না করে অবৈধ জাল দিয়ে মাছ ধরছে। উপজেলার অসংখ্য হাওরসহ খাল বিলে এসব জালে আটকে মারা যাচ্ছে ছোটবড় পোনা মাছ, ব্যাঙ, সাপ, কুচিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী।

স্থানীয়রা জানান,উপজেলা মৎস্য বিভাগের উদাসীনতা, জাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের গভীর সখ্যতায় প্রতিটা বাজারে দেদারছে ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত অবৈধ কারেন্ট জাল। বাজার থেকে কেনা অবৈধ এসব জাল ব্যবহার করে খালে-বিলে ও হাওরে নির্বিকারে করা হচ্ছে পোনা মাছ শিকার। দেশীয় প্রজাতির নানা প্রকার মাছের পোনাসহ ডিমওয়ালা মা মাছ এই জালের ফাঁদে আটকা পড়ে নিধন হওয়ায় দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ এখন ওসমানীনগরে বিলুপ্ত প্রায়।

হাওর পাড়ের একাধিক বাসিন্দারা জানান, কতিপয় অসাধু মাছ শিকারীদের অপতৎপরতায় প্রতিটা জলাশয় মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে।

উপজেলার কালাসারা, দয়ালং, মেরুয়া, বানাইয়া, মোক্তারপুর, পেকুয়া, হাউনিয়া, কালনী, রুনিয়াসহ প্রতিটা হাওর ও ছোট বড় জলাশয়ে প্রতিদিন নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ আহরণ করা হচ্ছে দেদারছে। জালে আটকে মা মাছ থেকে শুরু করে ছোট বড় মাছ, ব্যাঙ, সাপ, কুচিয়া, কাঁকড়াসহ সকল প্রকার জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। জলাশয় সমুহে কারো পক্ষে হাঁটা চলারও সুযোগ নেই। শুধু কারেন্ট জাল আর কারেন্ট জাল। ফলে জলজ পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি বয়ে আনছে।

মাদরাসা শিক্ষক মাওলানা আতিকুল হকসহ একাধিক ব্যাক্তিরা জানান, প্রতি বছর এভাবে জলাশয়গুলোর ঘনঘন স্থানে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল পোতা হলেও মাঝে মধ্যে উপজেলা মৎস্য বিভাগের পক্ষ লোক দেখানো অভিযান ছাড়া আর কিছুই হয় না। তাছাড়া হাটবাজারে প্রকাশ্যে এসব কারেন্ট জাল বিক্রি করা হলেও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে ব্যাপক হারে কারেন্ট জাল ও নদীতে অবৈধ বাঁশের খাঁটি বসানো শুরু হচ্ছে।

এদিকে উপজেলা মৎস্য বিভাগের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গত জুলাই মাসে ব্যক্তি মালিকানাধীন কয়েকটি পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করে দায়সারা গোছের ‘মৎস্য সপ্তাহ ২০২০’ পালন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিজেদের ব্যার্থতা ঢাকতে উপজেলা মৎস্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা স্থানীয় সাংবাদিকদের আড়ালে রেখে এ কর্মসূচি পালন করায় বর্তমান সরকারের দেশকে মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ করার এ উদ্যোগ জনগণের নিকট পৌঁছানোর বিষয়ে বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে।

অপরদিকে উপজেলা মৎস্য বিভাগের লোকজন খাতা কলমে নিজেদের দায়িত্বশীল দেখাতে মাঝে মাঝে অবৈধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হলেও এ বিষয়েও প্রকৃত সাংবাদিকদের যথা সময়ে সঠিক তথ্য প্রদানে নানা টালবাহানা। উপজেলা মৎস্য বিভাগের এমন লুকোচুরির কারনে সরকারের মৎস্য খাতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ডের সুফল বঞ্চিত হচ্ছেন ওসমানীনগরের বাসিন্দারা। 

ওসমানীনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. মাশরুফা তাসনিম বলেন, অবৈধ জালের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। বুধবারও উপজেলার পীরেরবাজার বাজার এলাকার ঝাপার খালে অভিযান পরিচালনা করে ৬টি অবৈধ জাল জব্দ করে পোড়ানো হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ইউডি/বিএ-০৫