বিশ্বনাথে কালভার্টে নেই সংযোগ সড়ক, দুর্ভোগ চরমে

মোহাম্মদ আলী শিপন, বিশ্বনাথ


আগস্ট ২৯, ২০২০
০৬:১৯ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ২৯, ২০২০
০৬:১৯ অপরাহ্ন



বিশ্বনাথে কালভার্টে নেই সংযোগ সড়ক, দুর্ভোগ চরমে

সিলেটের বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কালভার্ট অকেজো হয়ে দাাঁড়িয়ে আছে। কালভার্টের দুইপাশে মাটি না থাকায় সংশ্লিষ্ট এলাকার কয়েকটি গ্রামের জনসাধারণ এ কালভার্ট ব্যবহার করতে পারছেন না। কালভার্ট এর দুইপাশে রাস্তার নামমাত্র অস্তিত্ব দেখা গেলেও পর্যাপ্ত মাটি ভরাটের অভাবে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এছাড়া কালভার্টের দুইপাশের সংযোগ বা এপ্রোচ অংশে পর্যাপ্ত মাটি নেই। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

কালভার্টে এপ্রোচ সড়ক না থাকায় সর্বশেষ গত মঙ্গলবার একটি অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রী নিয়ে খাদে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা অটোরিকশার যাত্রীদের উদ্ধার করেন। অল্পের জন্য রক্ষা পান অটোরিকশায় থাকা যাত্রীরা।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্বনাথ সরকারি ডিগ্রি কলেজের ফটকের সামনে থেকে শুরু হওয়া প্রায় অর্ধ কিলোমিটার বিশ্বনাথ বাইপাস সড়কের সংযোগ ও দন্ডপানিপুর-মহরমপুর, মিনারপাড়া, রাজাপুর, সরুয়ালা, ভোগসাইলসহ কয়েকটি গ্রামের ভেতরে গিয়ে মিলিত হয়েছে। এই রাস্তার বিশ্বনাথ ডিগ্রি কলেজ থেকে প্রায় দুইশ গজ দূরে সরকারি প্রায় ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে কালভার্টের নির্মাণকাজ শেষ হলে চলতি বছরের মে মাসের দিকে কালভার্টটির কাজ সম্পন্ন হয়। কালভার্টের সংযোগ অংশে মাটি না থাকায় যানবাহনসহ জনসাধারণ চলাচল করতে পারছেন না। তবে বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করে আসছেন।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী এ সড়কে একটি কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অবশেষে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে চলতি বছরের শুরুর দিকে সরকারি অর্থায়নে কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু কালভার্ট নির্মাণ হলেও কালভার্টটির দুইপাশে মাটি না থাকায় লোকজন চলাচল করতে পারছেন না। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত লোকজন যাতায়াত করে আসছেন। কিন্তু কালভার্টে এপ্রোচ না থাকায় বয়স্ক-নারী-পুরুষকে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। সম্প্রতি স্থানীয়রা এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার জন্য কালভার্টে বাশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছিলেন।

এই কালভার্টে এপ্রোচ সড়ক না থাকায় গত মঙ্গলবার একটি অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রী নিয়ে খাদে পড়ে যায়। ফলে বাঁশের সাকোটিও ভেঙে যায়। ফলে এখন স্থানীয়রা এ সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। কালভার্টের দুইপাশে মাটি ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার জন্য এলাকাবাসী সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে রিকশাচালক ইসলাম উদ্দিন বলেন, 'কলেজের ফটকের ভেতর দিয়ে দন্ডপানিপুর, মহরমপুর গ্রামে যাত্রী নিয়ে আসা-যাওয়া করি। বেশ কয়েকমাস ধরে এ রাস্তায় কালভার্ট নির্মাণ হলেও রাস্তার দুইপাশে মাটি ভরাট না হওয়ায় যাত্রী নিয়ে অনেক পথ ঘুরে বাইপাস সড়ক দিয়ে যেতে হয়। ওই সড়কেরও বেহাল দশা।'

দন্ডপানিপুর গ্রামের একটি মসজিদের মোতাওয়াল্লী ইলিয়াস আলী বলেন, 'কালভার্ট নির্মাণ হওয়ায় এলাকাবাসী খুশি। কিন্তু কালভার্টের দুইপাশে মাটি ভরাট না হওয়ায় এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।'

এ রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াতকারী উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি কলমদর আলী বলেন, 'কালভার্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করেন। বর্তমানে কালভার্টে সংযোগ রাস্তা না থাকায় গাড়িও চলাচল করে না। এতে বেশি বিপাকে পড়তে হয় রোগী ও বয়স্ক মানুষদের।'

বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক বলেন, 'কালভার্ট নির্মাণ হওয়ায় স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের মানুষ উপকৃত হওয়ার কথা। কিন্তু এখনও কালভার্টের দুইপাশে মাটি ভরাট না হওয়ায় এলাকাবাসী চলাচল করতে পারছেন না। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশলী অফিসকে কয়েকবার অবহিত করা হয়েছে।'

এ ব্যাপারে কথা বলতে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 

এমএ/আরআর-০১