সিলেট মিরর ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২০
০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২০
০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট অফিসের ডাটা অপারেটর লাকী রাণী পালের মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তার শশুর জালালপুর সেনগ্রামের বাসিন্দা হলধর চন্দ্র পাল। রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সিলেট প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
হলধর চন্দ্র পালের অভিযোগ- শরীরে আগুন লেগেই লাকীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু অপমৃত্যুর এই ঘটনাকে হত্যা মামলায় রুপান্তর করতে অপপ্রচার ও নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন তার বোন প্রিয়াংকা রাণী পাল। সংবাদ সম্মেলনে হলধর পালের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তাঁর বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র পাল।
হলধর পাল বলেন, ‘আমার বড় ছেলে হিমাদ্রী পাল দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তাঁর সঙ্গে প্রায় ৩ বছর আগে সিলেট নগরের সোবহানীঘাট এলাকার বাসিন্দা দীপ পালের বড় মেয়ে লাকী রাণী পালের বিয়ে হয়। তাদের দেড় বছরের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবন বেশ ভালোই কেটেছে। তবে মেয়ের পরিবার আমার ছেলেকে তাদের বাসায় স্থায়ীভাবে একাধিকবার নিয়ে যেতে চাইলে আমি রাজি হইনি। এমনকি আমার ছেলের স্ত্রীর বেতনের টাকা পুরোটাই তারা নিয়ে নিতে চায়। এ নিয়ে মেয়ের বোনদের সঙ্গে আমার ছেলের একাধিকবার মনোমালিন্য তৈরি হয়েছে। তবে সেটা কোনো বিরোধে রুপ নেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘গত ৯ আগস্ট রাতে প্রতিদিনের মতো বউমা রান্নাঘরে মাটির চুলায় ভাত রান্না করছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে অসাবধানতা বশতঃ চুলার পাশে থাকা কুপি বাতি থেকে শাড়িতে আগুন লেগে যায়। চিৎকার শুনে প্রথমে আমি রান্না ঘরের দিকে ছুটে যাই। করিডোরে বউমার শরীরে আগুন দেখে আমি চিৎকার করি এবং কাথা কম্বল গায়ে জড়িয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। এক পর্যায়ে আমার স্ত্রী এবং পাশের বাসা থেকে আমার ছেলেরাসহ অন্যান্য লোকজন এগিয়ে আসেন। এক পর্যায়ে আগুন নিভে গেলে আমরা দ্রæত লাকীকে সিএনজিঅটোরিকশা দিয়ে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাই। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন রাতে লাকীর মৃত্যু হয়।’
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে নেওয়ার পর লাকী কর্তব্যরত চিকিৎসক, তাঁর বাবা প্রদীপ পালসহ অন্যদের সামনেই কুপি বাতি থেকে অগ্নিকাণ্ড'র ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে। পরে ওইদিনই প্রদীপ পাল এসএমপির মোগলাবাজার থানায় গিয়ে লিখিতভাবে মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ জানান। তিনি মেয়ের কাছ থেকে শোনা কথাই উল্লেখ করেন। এমনকি মেয়ের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় জানিয়ে এ বিষয়ে তাঁর কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই বলেও উল্লেখ করেন। পরে এ ঘটনায় মোগলাবাজার থানা পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে। প্রদীপ পাল একইভাবে ঘটনার বিবরণ দিয়ে বিনা ময়না তদন্তে লাশ সৎকারের জন্য সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করেন। কিন্তু লাকীর ছোট বোন প্রিয়াংকা রাণী পাল গত ১৭ আগস্ট মোগলাবাজার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩, যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানো ও সহায়তার অপরাধ এনে একটি মামলা (১২) দায়ের করেন। একটি অপমৃত্যুর ঘটনাকে হত্যা মামলায় রুপান্তর করতে প্রিয়াংকা অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। আর মোগলাবাজার থানা পুলিশ ঘটনার তদন্ত না করেই মামলাটি রুজু করেছেন।’
এ ঘটনা নিয়ে কিছু সংবাদ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর খবরও প্রকাশ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
বিএ-০৯