‘আমি ম্যাজিস্ট্রেট বলছি, বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দিন’

আলী আহমদ, জগন্নাথপুর


সেপ্টেম্বর ১২, ২০২০
১২:৪৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ১২, ২০২০
১২:৪৮ পূর্বাহ্ন



‘আমি ম্যাজিস্ট্রেট বলছি, বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দিন’
জগন্নাথপুরে ব্যবসায়ীদের প্রতারকের ফোন

‘আমি ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলছি। আপনাদের বাজারে অভিযানে আসছি। আপনি বিকাশে আমাকে ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। অন্যথায় আপনার দোকান এবং ফ্যাক্টরি সিলগালা করে দেওয়া হবে।'

গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা সদরের জগন্নাথপুর বাজারের এক ব্যবসায়ীকে মোবাইল ফোনে এসব বলা বলা হয়। একইভাবে বাজারের আরও কয়েকজনকে কল দিয়ে টাকা দাবি করেন ওই ব্যক্তি।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতিয়ার রহমানের নাম-পরিচয় দিয়ে একটি মোবাইল নম্বর (০১৯১৫৬৬৬৪৯৯) থেকে  পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে জানানো হয়, জগন্নাথপুর বাজারে ভোক্তা আইনে তারা অভিযানে আসছেন। তাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে। পরে পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক বিপলু রঞ্জন সরকারের নিকট থেকে বাজারের কয়েকটি মিষ্টির দোকানের মালিকের নাম ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে। এদিকে অভিযানের খবর বিপলু রঞ্জন সরকার কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জানান। 

জগন্নাথপুর বাজারের রিচমুন কনফেকশনারীর মালিক মিন্টু রঞ্জন ধর বলেন, 'দুপুর ১২টা ১৯ মিনিটে ০১৯১৫৬৬৬৪৯৯ নম্বর থেকে সুনামগঞ্জের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতিয়ার রহমানের পরিচয় দিয়ে আমাকে কল করে বলা হয়, আমরা অভিযানে আসছি। ভেজাল পণ্য রাখার অভিযোগে ৬ মাসের জন্য আপনার ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেওয়া হবে। এছাড়া ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। এজন্য বলছি, আমাকে ৫০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দিলে আমি আপনার এখানে আসব না। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে সরাসরি উৎকোচ চাওয়ায় আমার সন্দেহ হয়। পরে আমি ঢাকা, সিলেট ও সুনামগঞ্জের ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে জানতে পারি এই নামে কোনো কর্মকর্তা নেই। ওই ব্যক্তি প্রতারক হতে পারে। এরপর থেকে ওই প্রতারকের মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।'

জগন্নাথপুর পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক বিপলু রঞ্জন সরকার বলেন, 'নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেওয়ায় প্রথমে বুঝতে পারিনি। পরে জানতে পারলাম সে একজন প্রতারক।'

জগন্নাথপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র শফিকুল হক বলেন, 'বিষয়টি আমি জগন্নাথপুরের ইউএনওকে অবহিত করেছি।'

জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, 'এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে বলেছি।'

সুনামগঞ্জের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, 'আতিয়ার রহমান নামের কোনো লোক নেই আমাদের। কল দেওয়া লোকটি প্রতারক।'

 

এএ/আরআর-০৪