'মিথ্যা তথ্য' পরিবেশনের প্রতিবাদে দোয়ারাবাজারে সংবাদ সম্মেলন

দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০
১১:১৬ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০
১১:১৬ অপরাহ্ন



'মিথ্যা তথ্য' পরিবেশনের প্রতিবাদে দোয়ারাবাজারে সংবাদ সম্মেলন

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জড়িয়ে অসত্য ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য প্রদান করে সংবাদ পরিবেশন এবং ক্রয়কৃত ভূমি আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার বোগলাবাজারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের বোগলাবাজারের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে সম্প্রতি অনেক অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে একটি স্থানীয় পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে সংবাদ পরিবেশন করিয়েছেন, যাতে সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ অন্যান্যদের সম্মানহানি ঘটেছে। ওই সংবাদে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ আলী আপনকে ঘিরে বলা হয়েছে, তিনি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসতঘরের সীমানার সামান্য জমি দখল করেছেন এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসতবাড়ির কূপের নিকটবর্তী স্থানে খোলা ল্যাট্রিন ব্যবহার করছেন। এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং মৃত্যু সনদ সংক্রান্ত যে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে তাও বানোয়াট। একই ভাবে বোগলাবাজার ইউনিয়নের বোগলাবাজার গ্রামের সারফুল ও ধর্মপুর গ্রামের শাহজাহান কবির ইকবালের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, তারা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে অন্যদের দিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এটিও মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ওই পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানোর কোনো কারণ নেই। নিছক সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য আমাদের জড়িত করে কাল্পনিক সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বোগলাবাজারের বাসিন্দা মো. সুলতানের পুত্র মনির ও তার পরিবারের লোকজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ের বাসার রাস্তা বন্ধ করে বাসায় একাধিকবার হামলা ও এসিড নিক্ষেপ করে এবং মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন মাস্টারের নাতিদের হত্যার হুমকি দেওয়া, বাজারের সুলতানের পুত্র মনির, মৃত সেকান্দরের পুত্র মাসুদ মিয়া, নিলুফা ইয়াসমিন, রানোয়া আক্তার, সাহেদা আক্তার ইতোপূর্বে অনকেবার প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে তারা মুক্তিযোদ্ধার কন্যা শিল্পীর বাসায় হামলার পাশাপাশি তার উচ্চশিক্ষিত মেয়েদের উপর ইভটিজিং ও অকথ্য গালিগলাজ করাসহ এসিড নিক্ষেপ করে মারার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বানোয়াট।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০০৮ সালে সাবেক বৃহত্তর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের দুইবারের ইউপি সদস্য প্রয়াত সামছুল আলম বোগলাবাজার গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের স্ত্রী লতিফা বেগমের (বিমলা) নিকট থেকে ২ শতক ভূমি মৌখিক চুক্তি এবং সাক্ষী-প্রমাণের ভিত্তিতে নগদ দেড় লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন। পরবর্তীতে আকস্মিক মৃত্যুর কারণে জীবদ্দশায় সাফকাবলা রেজিস্ট্রার দলিল নিতে পারেননি। সামছুল আলমের মৃত্যুর পর তার উত্তারাধিকারীগণ জমির দখল ও রেজিস্ট্রারি চাইলে মুক্তিযোদ্ধার পরিবার তা দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে তৎকালে ৭ নম্বর লক্ষ্মীপুর ইউপির চেয়ারম্যান আমীরুল হকের নেতৃত্বে এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিচার সালিশে তৎকালীন ৮২ গ্রামের বিচারমন্ডলী উপস্থিত ছিলেন। ওই সালিশে সাক্ষী-প্রমাণ সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত হয় প্রয়াত সামছুল আলমের পরিবারকে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ২ শতক ভূমি সাফকাবলা মূলে রেজিস্ট্রারি করে দিয়ে দেবে। কিন্তু এর পরে তারা দেই, দিচ্ছি বলে রেজিস্ট্রারি করে দেয়নি। তারা বিভিন্নভাবে প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখিয়ে টাকা ও জমি কোনোটিই দেয়নি। সালিশ বিচারের রায়কে উপেক্ষা করে তারা উল্টো নানাভাবে হয়রানি করার পাঁয়তারা করে। জমি চাইলে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হুমকি-ধমকি দিতে থাকে এবং বিভিন্নভাবে মামলা-মোকদ্দমা করে হয়রানি করারও হুমকি দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বোগলাবাজার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আহমদ আলী আপন, বোগলাবাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সেক্রেটারি ছিদ্দিকুর রহমান, সাবেক সেক্রটারি শাহজাহান কবির ইকবাল, ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, বাজার ব্যবসায়ী ডা. হাফিজুল ইসলাম, মাসুদ মিয়া, সুলতান আহমদ, উজ্জল খাঁন, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

 

এইচএইচ/আরআর-০৮