বোরো উৎপাদনে বাধা : বিশ্বনাথে ছয় গ্রামবাসীর প্রতিবাদ

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি


ডিসেম্বর ০৪, ২০২০
০২:২৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ০৪, ২০২০
০২:২৯ পূর্বাহ্ন



বোরো উৎপাদনে বাধা : বিশ্বনাথে ছয় গ্রামবাসীর প্রতিবাদ

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সর্ববৃহৎ হাওর চাউলধনী হাওরে পানি শুকিয়ে আসন্ন বোরো ধান উৎপাদনে বাধা প্রদানের প্রতিবাদে হাওরপাড়ের ৬টি গ্রামের মানুষের যৌথ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের পাড়ুয়া গ্রামের প্রবাসী শফিকুর রহমানের বাড়ির উঠানে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় ইউনিয়নের দৌলতপুর, হাসনাজি, পাড়ুয়া, মৌলভীরগাঁও, মীরগাঁও ও কালিটেকা গ্রামের বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। 

যানা গেছে, আগামী শনিবার হাওরের ৪টি পাড়ের মানুষের যৌথ উদ্যোগে বিশাল প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হবে। চাউলধনী হাওরের কৃষি ও কৃষকদেরকে বাঁচানোর লক্ষ্যে ওই যৌথ সভা থেকে এলাকাবাসী বৃহত্তর আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচি গ্রহণ করবেন। প্রভাবশালী ইজারাদাররা বিভিন্ন অজুহাতে এলাকার মানুষের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত চাঁদা আদায় করে এলেও কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। তবে এ বছর হাওরের পানি শুকিয়ে ফেলার কারণে চাউলধনী হাওরের ৪টি পাড়ের মানুষ একত্রে ফুঁসে উঠেছেন।

প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, চাউলধনী হাওর কোন শর্তে বা কিভাবে ইজারা দেওয়া হয়, তা আমরা জানি না। আমরা হাওরপাড়ের মানুষদের পরিবারগুলো বোরো ধান উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল। ইজারাদাররা তাদের অতীতের সকল অপকর্মের সীমানা ছাড়িয়ে এবার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইজারাদাররা মাছ শিকার করার জন্য হাওরের পানি শুকিয়ে ফেলেছে। ফলে এ বছর হাওরে বোরো ধানের আবাদ করা যাবে না। এতে করে হাওরপাড়ের কয়েক হাজার কৃষক বিপাকে পড়েছেন। ইজারাদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। তাছাড়া বর্ষার মৌসুমে ইজারাদাররা কৃষকের নিজস্ব জমিতে মাছ ধরায় বাধা প্রদান করেছেন। এলাকাবাসীর ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরে মাছ শিকার করতে হলে ইজারাদারকে দিতে হয় চাঁদা। এমনকি বাড়ির পাশের হাওরে এলাকাবাসীর হাঁস নামলে ইজারাদাররা সেগুলো ধরে নিয়ে যায়। সেই হাঁসের মালিককে ধরে নিয়ে যাওয়া হাঁস দেখিয়ে দেখিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে তা রান্না করে খায়। সর্বোপরি হাওরের সামান্য অংশ ইজারা দেওয়ার কারণে কৃষি ও আমিষ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাওরপাড়ের মানুষজন।

পাড়ুয়া গ্রামের প্রবীণ আশ্রব আলীর সভাপতিত্বে ও হাসনাজি গ্রামের জাহিদুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন, মৌলভীরগাঁও গ্রামের প্রবীণ মাওলানা ছমির উদ্দিন, পাড়ুয়া গ্রামের মাস্টার বাবুল মিয়া, প্রবাসী শফিকুর রহমান শফিক, দৌলতপুর গ্রামের রুহেল আহমদ কালু ও তাহের মিয়া। 

প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন, মৌলভীরগাঁও গ্রামের মাহমদ আলী, আব্দুল মতিন, মাহফুজুর রহমান, হোসেন আহমদ, আব্দুস সোবহান, হাসনাজী গ্রামের আব্দুল মালিক, মাসুক আলী, পাড়ুয়া গ্রামের হিরণ মিয়া, ফারুক মিয়া, লুৎফুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, শরিফ আলী, আব্দুর রাজ্জাক, দৌলতপুর গ্রামের রিপন মিয়া, আবু সালেহ, জামাল আহমদ, লিলু মিয়া, আজাম মিয়া, জুয়েল মিয়া, মীরগাঁও গ্রামের আব্দুল মুমিন, মুজিবুর রহমানসহ ৬টি গ্রামের বিপুল সংখ্যক মানুষ।

 

এমএ/আরআর-১৪