বিয়ানীবাজারে আসছেন না মামুনুল হক

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি


ডিসেম্বর ২২, ২০২০
০৮:৪১ অপরাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ২২, ২০২০
০৮:৪১ অপরাহ্ন



বিয়ানীবাজারে আসছেন না মামুনুল হক

সিলেটের বিয়ানীবাজার আসা হচ্ছে না বিতর্কিত ধর্মীয় বক্তা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকের। আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিয়ানীবাজারের রামধা মাদ্রাসার বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলে তার অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও মাদ্রাসার মজলিসে শুরা তাকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার জামিয়া দ্বীনিয়া আসআদুল উলুম রামধা মাদ্রাসার মজলিসে শুরা তাকে বাদ দিয়ে পূর্ব নির্ধারিত তারিখে বার্ষিক জলসা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়।

মজলিসে শুরা সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশে আলোচিত ও বিতর্কিত এই বক্তাকে বাদ দিয়ে মাওলানা আমিনুল ইসলাম কাসিমি কে প্রধান অতিথি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাহফিলে মামুনুল হক ছাড়া অন্য অতিথিরা অপরিবর্তিত থাকছেন। 

মুফতি মো. মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মজলিসে শুরার এই বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা ইউসুফ আহমদ খাদিমানি, শায়খুল হাদিস আউলিয়া হোসেন, আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মামুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হেলাল চৌধুরী, ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।

আলীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির বলেন,‘আমি মাদ্রাসার সুরা আমেলার সদস্য, আমাদের মাদ্রাসায় মুমিনুল হক আসছেন না।’

মাদ্রাসার মুহতামিম ইউসুফ আহমদ খাদিমানী বলেন, ‘এই মাহফিলের জন্য দুই বছর আগে ওনার সম্মতি নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে গেছে। ’

আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, ‘কোনো অবস্থায় এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয় সেদিকে খেয়াল করে মাহফিলে মামুনুল হকের না আসার ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছি।’

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, ‘ওয়াজ মাহফিলে মামুনুল হক আসবেন না বলে তাকে অবহিত করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যকে মূর্তি আখ্যা দিয়ে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হলে সেটা ভেঙে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি ফয়জুল করিমসহ আরও কয়েকজন ধর্মীয় বক্তা। এনিয়ে সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এই সময়ে কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন একটা ভাস্কর্য ভাঙচুর করে কিছু দুর্বৃত্ত। 

ভাঙচুরের ওই ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা মাওলানা মামুনুলদের বক্তব্যে উদ্ধুব্ধ হয়েছেন বলে স্বীকারোক্তি দেয়। এরপর সারাদেশে মামুনুল হকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।

এদিকে, ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি একটি মাহফিলের আয়োজন করে। যাতে চরমোনাই পীর সৈয়দ মো. রেজাউল করীমের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। 

কিন্তু চরমোনাই পীরের বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ৬ ডিসেম্বর ছাত্রলীগ কর্মীরা মাহফিলের একটি ব্যানারে আগুন দিয়ে মাহফিল প্রতিহতের ঘোষণা দেয়। সেদিনই প্রশাসন ওই মাহফিলের অনুমতি বাতিল করে। 

মামুনুল হক, চরমোনাই পীরদের ভাস্কর্যবিরোধী এমন অবস্থানের সময়ে বিয়ানীবাজারের আলীনগর ইউনিয়নে মামুনুল হক প্রধান অতিথি হিসেবে আসছেন এমন ব্যানার-পোস্টার টানানো হলে ওই এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে মাদ্রাসার মজলিসে শুরা দ্বীনি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে মাওলানা মামুনুল হককে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

এস এ/ বি এন-৩