জৈন্তাপুরে মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি


ডিসেম্বর ৩০, ২০২০
০২:৫০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ৩০, ২০২০
০২:৫০ পূর্বাহ্ন



জৈন্তাপুরে মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ঢুপী পশ্চিম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদ পাখি ও সদস্য মাহমুদ আলীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, মসজিদের টাকা আত্মসাৎ ও হিসাব সংক্রান্ত খাতাপত্র কৌশলে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এনে জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

আজ মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস শুকুর।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ভাড়াটের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিভিন্ন সময়ে কমিটি ও গ্রামবাসীর যৌথ সভায় উপস্থিতি স্বাক্ষর নিয়ে কৌশলে রেজুলেশন খাতায় ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করে রেজুলেশন তৈরি করার অভিযোগ করা হয়। চলতি বছরের আগস্ট মাসে ঢুপী পশ্চিম জামে মসজিদের নিজস্ব মালিকানাধীন সম্পত্তি নিজপাট ইউনিয়নের চৈলাখেল মৌজার জেএল নম্বর-৩৬, দাগ নম্বর-৭, খতিয়ান নম্বর-১৫১ অর্ন্তগত ৯ একর বা ২৭ বিঘা তফসিল বর্ণিত ভূমি গোলাপগঞ্জ উপজেলার রস্তুমপুর গ্রামের মো. মাসুক মিয়ার পুত্র মো. আব্দুর রউফ গং মসজিদ পরিচালনা কমিটির সঙ্গে চুক্তিপত্র সম্পাদনপূর্বক বিভিন্ন শর্তে ভাড়ায় গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তারা ভাড়ার শর্ত লঙ্ঘন করে ভাড়াটেকে উচ্ছেদ সংক্রান্ত উকিল নোটিশ প্রদান করাকে কেন্দ্র করে বিরোধ দেখা দিলে আদালতে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। আদালতে মামলা চলাকালীন অবস্থায় আব্দুল হামিদ পাখি ও মাহমুদ আলী মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও মহল্লাবাসীকে অবগত না করে ৯ একর বা ২৭ বিঘা জমি গোপনে জনৈক ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তিপত্র সম্পাদন করে মসজিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে আসছে বলে জানানো হয়। সভাপতির অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কাজের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন বিগত ৬ নভেম্বর সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় সাবেক সভাপতি কমিটির ৩ সদস্যসহ গ্রামের ৫ নিরীহ মানুষের উপর আদালতে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। মহল্লাবাসী ঘটনার প্রেক্ষিতে পর পর কয়েকটি সভায় সভাপতিকে উপস্থিত হওয়ার জন্য বললেও তিনি উপস্থিত না হওয়ায় কমিটি ও মহল্লাবাসীর সর্বসম্মতিক্রমে আব্দুল হামিদ পাখিকে সভাপতি পদ হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। 

এদিকে গত ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও গ্রামবাসীর যৌথ সভায় মধ্যস্থতাকারী ১৭ পরগনা সালিশ সমন্বয় কমিটির সভাপতি আবু জাফর আব্দুল মৌলা চৌধুরী ও জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে ডাকা হলে সাবেক সভাপতি বৈঠকে উপস্থিত হননি। আদালতে মামলা থাকা অবস্থায় জনৈক ব্যক্তিকে সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যগণ ও মহল্লাবাসীকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানোসহ মামলা-হামলার অব্যাহত হুমকি দিয়ে আসছেন। সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদ পাখি ও সদস্য মাহমুদ আলীর বিরুদ্ধে গত ৮ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে কমিটির সদস্যরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন (স্মারক নম্বর ২৬৯৫, তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০)। পরবর্তীতে গত ১৫ ডিসেম্বর জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিন আলী ও ওসি (তদন্ত) ওমর ফারুকের মধ্যস্থতায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সকল সদস্য ও মহল্লাবাসীর উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের মাঝে আলাপ-আলোচনা করে সর্বসম্মতিতে ক্রাশিং জোনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করা হয়। পরবর্তীতে ১৯ ডিসেম্বব সন্ধ্যায় সালিশ বৈঠক আহ্বান করা হয়। কিন্তু বৈঠকে তিনি উপস্থিত না হয়ে মসজিদ পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস শুকুর ও জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক নূরুল ইসলামসহ নিরীহ মহল্লাবাসীর উপর মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রারি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।

তারা তাদের হুমকি ও ভয়-ভীতি অব্যাহত রাখায় মসজিদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তিরসমূহের ক্ষতিসাধন হওয়ার আশঙ্কা বিদ্যমান রয়েছে মর্মে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে মহল্লাবাসীর পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন, আবুল হাসনাত, মুহিবুর রহমান, মসজিদ পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমদ, অর্থ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, সদস্য আজির উদ্দিন, আব্দুল ওয়াহিদ বড়হুনা, বশির আহমদ, ফুরকান আলী প্রমুখ।

 

আরকে/আরআর-০৯