নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
০৭:৫৫ অপরাহ্ন
আপডেট : ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
০৭:৫৬ অপরাহ্ন
লকডাউনের পুরোটা সময় মানুষজন ঘরবন্দী ছিলেন। ঝুঁকি এড়াতে এখনো অনেকে প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে বেরোন না। এ অবস্থায় প্রযুক্তিই এখন সবার ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অফিসিয়াল বৈঠক থেকে শুরু করে নানা ধরনের অনুষ্ঠানাদিও এখন ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস ও পরীক্ষা অনলাইন পদ্ধতিতে হচ্ছে। করোনায় মানুষ ঘরে থাকায় গুরুত্বপূর্ণ জিনিস তো বটেই, টুথপেস্টের মতো সাধারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসও ক্রমবর্ধমানভাবে অনলাইনে বেচাকেনা হচ্ছে। চলতি বছর করোনার কারণে প্রযুক্তিকেন্দ্রিক মানুষের জীবনধারার বড় ধরনের এক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে।
একাধিক ব্যক্তি জানান, তরুণ প্রজন্মের অনেকেই অনলাইনকেন্দ্রিক তৎপর থাকলেও বয়স্ক ও মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিরা এক্ষেত্রে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না। করোনাভাইরাসের ফলে অনেকেই এখন প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। যাঁরা প্রযুক্তির নানা মাধ্যমে অপারেটিংয়ে দুর্বল ছিলেন, তাঁরাও এখন দারুণ গতিতে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিতে পারেন। নগরের একটি উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক জানান, তিনি অনলাইনে পটু ছিলেন না। কিন্তু সরকার যখন বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষার্থীদের ক্লাস অনলাইনে নিতে নির্দেশনা জারি করল, তখন তিনি অনলাইনে স্ট্রিম ইয়ার্ডের ব্যবহার শুরু করেন। শুরুতে তাঁকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তবে এখন তিনি এক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করে নিয়েছেন।
করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দী জীবনে অনেকেই টিভি ও মোবাইল গেমস নিয়ে সময় কাটিয়েছেন। এ সময়টাতে সিলেটের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ঘরবন্দী জীবনে নানাধর্মী বিনোদন নিশ্চিত করতে অনলাইনভিক্তিক নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এখনো অধিকাংশ সংগঠন ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। যেসব সংগঠন অনলাইনকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানে তৎপর ছিল, এর মধ্যে দর্পণ থিয়েটার, পাঠশালা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সিলেট জেলা শাখা, মৃত্তিকায় মহাকাল, চারুবাক, শ্রুতি, একদল ফিনিক্স, থিয়েটার কথন, নগরনাট, রেড টিভি, মাটির গান টিভি, পিকক এন্টারটেইনমেন্ট উল্লেখযোগ্য।
সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীরা জানিয়েছেন, করোনার সময়টাতে ঘরে বসে থাকতে থাকতে অনেকেই হাফিয়ে উঠেছিলেন। আবার অনেকে হতাশাগ্রস্তও হয়ে পড়েছিলেন। এ অবস্থায় এসব অনুষ্ঠান মানুষকে সুস্থ বিনোদন দিয়েছেন। শিশু-কিশোরেরা এসব অনুষ্ঠানে যুক্ত হওয়ায় তারা ঘরবন্দী হয়েও একঘেয়েমি থেকে দূরে থাকতে পেরেছে। এসব ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে আবৃত্তি, নৃত্য, গান, অভিনয়, তালবাদ্যযন্ত্র বাজানো থেকে শুরু করে নানা ধরনের ব্যতিক্রমী পরিবেশনা ছিল। দর্পণ থিয়েটারের উদ্যোগে আয়োজিত ও নাট্য-সংগঠক হুমায়ূন কবির জুয়েল সঞ্চালিত ‘থিয়েটার সংলাপ’ অনুষ্ঠান তো এরই মধ্যে দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। একইভাবে পাঠশালা আয়োজিত ভিন্নমাত্রার আয়োজিত নানা অনুষ্ঠানও সুনাম কুড়িয়েছে।
এএন/বিএ-১০