নিজস্ব প্রতিবেদক
জানুয়ারি ০১, ২০২১
০৯:৩৩ অপরাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ০১, ২০২১
০৯:৪১ অপরাহ্ন
যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া নতুন ধরনের করোনাভাইরাস বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির মধ্যেই বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে সিলেট ফিরেছেন আরও ২০৫ যাত্রী। সকাল সাড়ে দশটায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তারা। আজ শুক্রবার থেকে যারা যুক্তরাজ্য থেকে আসবেন তাদেরকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে।
ওসমানী বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ২৩৭ জন যাত্রী নিয়ে সিলেটে অবতরণ করে বিমানের বিজি-২০২ নম্বর ফ্লাইট। সিলেট বিমানবন্দরে নামেন ২০৫ জন যাত্রী। বাকি ৩২ জনকে নিয়ে ফ্লাইটটি ঢাকায় চলে যায়।
ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট মিররকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় লন্ডন থেকে ২০৫ জন যাত্রী সিলেটে আসেন। যাত্রীরা করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে আসায় বিমানবন্দরে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের অধিক সংক্রামক করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার লন্ডন থেকে ফেরা যাত্রীদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই রাতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লন্ডন থেকে আসা বিমানযাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নতুন বছরের শুরুর দিনে (আজ) এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্ধারিত হোটেলগুলোতে তারা নিজ খরচে থাকবেন। সংশ্লিষ্ট থানা তাদের দেখভাল করবে।
এদিকে, গত বুধবার লন্ডন থেকে আসা সব ফ্লাইট বন্ধের সুপারিশ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। যাত্রীদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে রাখারও সুপারিশ করা হয়।
যাত্রীদের কোয়ারেন্টিনে রাখার বিষয়ে গত মঙ্গলবার একটি সভা হয় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে। সভায় সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন বিআরডিটিআই ক্যাম্প এবং যাত্রীদের আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী বিভিন্ন হোটেলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। যারা কোয়ারেন্টিনের খরচ দিতে পারবেন না তারা থাকবেন সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকা সিলেটের শাহপরাণ এলাকার বিআরডিটিআই ক্যাম্পে। যারা টাকা দিয়ে মোটামুটি মানের হোটেলে থাকতে চাইবেন তাদের জন্য সে রকম ব্যবস্থা করা হবে এবং যারা ভালো হোটেলে থাকতে চাইবেন তাদের জন্য ভালো হোটেলের ব্যবস্থা করা হবে।
গত বুধবার সিলেট মিররকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান এনডিসি। তবে সেদিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য হোটেল নির্ধারণ করা হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের বিষয়ে জানতে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনও কোনো লিখিত নির্দেশনা আসেনি।’
এ বিষয়ে ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ সিলেট মিররকে বলেন, ‘লন্ডন থেকে আগামী ফ্লাইট আসবে সোমবার। সেদিন যারা আসবেন তাদের সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে। প্রাথমিকভাবে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকা কোয়ারেন্টিন সেন্টারে পাঠানো হবে। কোয়ারেন্টিনের বিষয়টি দেখছেন জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনী।’
জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও কোভিড-১৯ মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাম্মা লাবিবা অর্ণব বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য এখনও হোটেল চূড়ান্ত করা হয়নি। এ বিষয়ে হোটেল মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা চলছে। আগামী সোমবার যেহেতু পরবর্তী ফ্লাইট, আশাকরি এর আগেই সব নির্ধারণ করা হবে।’
এনএইচ/আরসি-০৯