‘অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শতভাগ সফল হয় না’

নিজস্ব প্রতিবেদক


জানুয়ারি ০২, ২০২১
০৬:২৭ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ০২, ২০২১
০৬:২৭ পূর্বাহ্ন



‘অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শতভাগ সফল হয় না’
বই বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক

সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেছেন, ‘অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শতভাগ সফল হয় না। তারপরও করোনা মহামারিকালে শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে অনলাইনেই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।’ 

শুক্রবার সকালে সিলেট সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে বই বিতরণ কার্যক্রমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ বাতিল হওয়ায় এবার ভিন্ন আঙ্গিকে বই বিতরণ করা হচ্ছে। তাই স্কুলমাঠে থাকছে না শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের সেই চিরাচরিত ভিড়। কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থীরা নতুন বছরের শুরুর দিনেই বই পেয়েছে। তাই নতুন বই পেতে স্কুলে ছুটে আসতে ব্যাকুল থাকত শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এবার এ নিয়মের ব্যতিক্রম হচ্ছে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে।

জানা গেছে, এ বছর মাধ্যমিক স্তরে সপ্তাহে তিনদিন করে মোট ১২ দিনে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে। একেকটি ক্লাসের শিক্ষার্থী তিন দিনে পৃথকভাবে এসে বইগুলো নিয়ে যাবে। অপরদিকে, প্রাথমিকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকটি ভেবে তাদের অভিভাবকদের হাতে বই তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বই বিতরণকালে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা দুইভাবে শিখে, বই ও পারিপাশির্^ক পরিবেশের মাধ্যমে। কিন্তু বিদ্যালয়ে না এলে পরিবেশ থেকে শেখা যায় না। তাই আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শতভাগ সফল হয় না। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে আমাদের অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। তবে এখন শুধু শিক্ষা কার্যক্রমই নয়, অনলাইনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতাও হচ্ছে।’

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা শুধু লেখাপড়া করব না। খেলাধুলাও করতে হবে। তাতে আমাদের ইউমিনিটি বাড়বে, আর মনও ভালো থাকবে। লেখাপড়ার সঙ্গে সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং কো-কারিকুলাম এক্টিভিটিও বাড়াতে হবে।’

বই সঙ্কটের বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পর্যায়ক্রমে বিতরণের কারণে নির্ধারিত সময়ই সবার হাতে বই পৌঁছাবে। সিলেটে বইয়ের কোনো ঘাটতি থাকবে না।’

সিলেট সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক বাবলী পুরকায়স্থের সভাপতিত্বে ও বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কোহেলী রায়ের পরিচালনায় নতুন পাঠ্যবই বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অগ্রগ্রামী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিমা তাহসিন গতকাল বিদ্যালয়ে এসে বই সংগ্রহ করে। নতুন বই পেয়ে সে বেজায় খুশি। তাহসিন সিলেট মিররকে বলে, ‘অনেকদিন পর বিদ্যালয়ে আসতে পেরে আমরা খুবই খুশি। প্রায় দশ মাস পর বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে বেশ ভালো লাগছে। এছাড়া বছরের প্রথম দিন বই হাতে পেয়েও আমরা আনন্দিত।’ শিক্ষার্থী বিজিতা শিকদার বলেন, ‘স্কুল খুললে আরও অনেক ভালো লাগবে। নতুন বই নিয়ে স্কুলে আসতে ইচ্ছে করছে খুব।’

দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষিকারাও খুশি। সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক বাবলী পুরকায়স্থ বলেন, ‘মেয়েরা বিদ্যালয়ে না এলে ফাঁকা লাগে। বিদ্যালয় তো শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সব সময় মুখরিত থাকবে। কিন্তু করোনা সব বদলে দিয়েছে। আশাকরি দ্রুতই আমরা এই মহামারি থেকে রক্ষা পাব। আবারও শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হবে বিদ্যালয়।’

আরসি-০১