সড়কে গেল দুই প্রাণ : ওসমানীনগরের ধরখা গ্রামে শোকের মাতম

ওসমানীনগর প্রতিনিধি


ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১
১০:২৩ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১
১০:৩৭ অপরাহ্ন



সড়কে গেল দুই প্রাণ : ওসমানীনগরের ধরখা গ্রামে শোকের মাতম

সিলেটের ওসমানীনগরের সাদিপুর ইউনিয়নের ধরখা গ্রামে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রশীদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এই গ্রামের ২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। প্রিয়জনদের হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। এক সঙ্গে গ্রামের দুইজনকে হারিয়ে গ্রামবাসীও বাকরুদ্ধ। 

নিহতরা হলেন, মৃত মানিক মিয়ার ছেলে এনা বাসের চালক মঞ্জুর আহমদ মঞ্জু (৪০) ও মনসুর আলীর ছেলে এনা বাসের চালকের সহকারী জাহাঙ্গীর হোসেন (৩০)।

তিন ভাইয়ের মধ্যে মঞ্জুর আহমদ মঞ্জু স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকেন। বড় ছেলের বয়স ১৪ বছর, ছোট ছেলের বয়স ৫ বছর। মঞ্জুর প্রায়ই বলতেন, তিনি ছেলেদের উচ্চশিক্ষিত করতে যা যা প্রয়োজন সব করবেন। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গেও প্রায়ই পরামর্শ করতেন তিনি। কিন্তু একটা দুর্ঘটনা তার প্রাণের সঙ্গে কেড়ে নিয়েছে পুরো পরিবারের স্বপ্ন। পরিবারের একমাত্র চালিকাশক্তিকে হারিয়ে বার বার শোকে মুর্চ্ছা যাচ্ছেন স্ত্রী সুরমা বেগম। জ্ঞান ফিরলেই তিনি স্বামীকে খুঁজছেন। দুই শিশুসন্তান নির্বাক হয়ে মায়ের পাশে বসে রয়েছে।

অন্যদিকে জাহাঙ্গীররা ২ ভাই। এর মধ্যে ১ ভাই ঢাকায় থাকেন। মা, স্ত্রী, ১ ছেলে (৪) ও ১ মেয়েকে (২) নিয়ে জাহাঙ্গীরের সংসার। তার আয়ের উপর নির্ভর করেই চলত অভাবী পরিবার। শুক্রবার ভোরে দুর্ঘটনার খবরে পুরো পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েছে। কান্নারত কন্ঠে জাহাঙ্গীরের স্ত্রী মাজেদা বেগম বলেন, ‘এবার তিনি ডিউটিতে যেতে চাননি। পরিবারের অভাবের কথা ভেবে তাকে জোর করে পাঠিয়েছি। কে জানত আমাদের এমন সর্বনাশ হবে!’

মঞ্জুর আহমদ মঞ্জু ও জাহাঙ্গীর হোসেনের প্রতিবেশী ফয়েজ আহমদ বলেন, ‘এক সঙ্গে দুটো মানুষ চলে গেছে। তাদের পরিবারের দিকে তাকিয়ে গ্রামের কেউই সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’

তিনি জানান, শুক্রবার রাতে স্থানীয় আওরঙ্গপুর মাদরাসা প্রাঙ্গণে নিহতদের জানাজা শেষে ধরখা পঞ্চায়েতি গোরস্তানে তাদের লাশ দাফন করা হয়।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে লন্ডন এক্সপ্রেস ও এনা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে এনা বাসের চালক, সুপারভাইজার, চালকের সহকারী (হেলপার) সহ ৮ জন নিহত হন।

 

ইউডি/আরআর-১০