খেয়া পারাপারে লাগছে অস্বাভাবিক ভাড়া

বিশ্বজিত রায়, ধর্মপাশা থেকে ফিরে


মার্চ ০৬, ২০২১
০২:৩৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ০৬, ২০২১
০২:৫২ পূর্বাহ্ন



খেয়া পারাপারে লাগছে অস্বাভাবিক ভাড়া

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মুক্তারপুর এলাকায় খেয়া পারাপারে মালিকসহ গরু-বাছুরের ভাড়া হাঁকা হয়েছে ১৫০ টাকা। খেয়াঘাটে ভাড়া আদায় করতে বসা মো. আজহারুল ইসলাম গরুর মালিকের কাছে এই ভাড়া দাবি করেন। এ অস্বাভাবিক ভাড়া শুনে গরুর মালিক মো. উসমান গনি ভড়কে যান। একপর্যায়ে দু’জনের মাঝে মৃদু বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে এ প্রতিবেদক সেখানে নিজের পরিচয় গোপন রেখে প্রতিবাদ করায় গরু-বাছুরের ভাড়া ৯০ টাকায় গিয়ে ঠেকে।

গত মঙ্গলবার ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড়-রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের মুক্তারপুর অংশের সুরমা নদীর খেয়া পার হওয়ার সময় এমন বাস্তবতা চোখে পড়ে। খেয়া পাড় হয়ে বিপরীত পাড়ে আসা অনেকে এভাবে যাচ্ছেতাই ভাড়া আদায় করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে জানা যায়, মোহনগঞ্জের জোয়ালভাঙ্গা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে মো. উসমান গনি তার গরু-বাছুর নিয়ে সুখাইড়-রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বিনোদপুরে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সুরমা নদীর মুক্তারপুর অংশ পার হতে গিয়ে ভাড়া বিড়ম্বনায় পড়েন তিনি। সেখানকার খেয়াঘাটে ভাড়া উত্তোলন করা আজহারুল ইসলামের কাছে গরু-বাছুরসহ নিজের ভাড়া কত জিজ্ঞেস করলে তিনি ভাড়া ১৫০ টাকা দাবি করেন। এই অস্বাভাবিক ভাড়া শুনে গরুর মালিক এত বেশি ভাড়ার কারণ জানতে চান এবং ভাড়া কম রাখতে বলেন। তবে ভাড়াগ্রহীতা ১৫০ টাকাতেই স্থির থাকেন। একপর্যায়ে এ প্রতিবেদক (পরিচয় গোপন রেখে) এগিয়ে এসে ভাড়া আদায়ের চার্ট কোথায় জানতে চান। এ ব্যাপারে সন্তোষজনক কোনো উত্তর দিতে পারেননি খেয়ার ভাড়া আদায়কারী। তবে শেষ পর্যন্ত গরুর মালিক ১০০ টাকার একটি নোট দিলে তাকে ১০ টাকা ফেরত দেওয়া হয়। এ নিয়ে যাত্রীসাধারণকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।

অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এভাবে যার কাছ থেকে যত পারছে ভাড়া আদায় করছে তারা। কোনো নিয়ম-নীতি মানা হচ্ছে না। অপরিচিত হলে তো আর কথাই নেই। মুখে যত আসে, তত টাকা চাওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ না জেনেই অধিক ভাড়া দিয়ে যাচ্ছেন। আর কেউ কিছু বলতে চাইলেই তর্ক-বিতর্ক বেঁধে যাচ্ছে। অনেকসময় যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণও করা হচ্ছে।

গরুসহ মানুষের নির্ধারিত ভাড়া কত জানতে চাইলে ভাড়া আদায়কারী আজহারুল ইসলাম বলেন, 'দেড়শ কইলে ৫০ টাকা দিব। এইডার লাগি দেড়শ টাকা চাইছি।'

গরুর মালিক মো. উসমান গনি বলেন, 'এইডা কোনো কথা হইল? গরু আর মানুষে মিইল্যা দেড়শ টাকা! যেখানে বিশ-ত্রিশ টাকা হইলেও যথেষ্ট সেখানে আমার কাছে দেড়শ টাকা চাওয়া হইছে। এইভাবেই চলতাছে সবকিছু। যে যেভাবে পারতাছে লুটপাট কইরা খাইতাছে।'

এ ব্যাপারে সুখাইড়-রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমানুর রাজা চৌধুরী বলেন, 'এদের ভাড়া আদায়ের নির্ধারিত একটা চার্ট আছে। এই চার্টের বাইরে ১ টাকাও বেশি ভাড়া আদায় করার নিয়ম নেই। গরু-বাছুর বাবদ যে ভাড়া চাওয়া হয়েছে, সেটা অবশ্যই বেশি। আমি এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি এবং কেন বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে তাদেরকে জিজ্ঞেস করছি।'

 

বিআর/আরআর-০৮