বিশেষ প্রতিনিধি
মার্চ ১৪, ২০২১
১০:৩২ অপরাহ্ন
আপডেট : মার্চ ১৫, ২০২১
০২:১০ পূর্বাহ্ন
হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের দেড় হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ পানির সংকট ও অস্বাস্থ্যকর পায়খানা ব্যবহারের দুর্ভোগ আর থাকছে না। ২০২৩ সালের মধ্যেই জেলার সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গভীর নলকূপ স্থাপন ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য দ্বিতল ওয়াশরুম নির্মাণের কার্যক্রম চলছে। প্রাইমারি অ্যাডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম-৪ (পিইডিপি-৪) প্রকল্পে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জেলায় এ কাজ শুরু হয়েছে। এ কাজ হয়ে গেলে হাওরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের বিশুদ্ধ পানি পান ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহারের পাশাপাশি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুনামগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বেশিরভাগ বিদ্যালয়েই বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানার সুব্যবস্থা নেই। এ সমস্যার সমাধান কল্পে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে এসব বিদ্যালয়ে গভীর নলকূপ বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগের সাধারণ নলকুপ কোনো প্রতিষ্ঠানেই আর থাকবে না। প্রথম দফায় ৩০০টি গভীর নলকূপ ও ২০০টি দ্বিতল ওয়াশব্লক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৯০টি স্কুলে গভীর নলকূপ ও ৬০টি স্কুলে ওয়াশব্লক নির্মাণের কাজ শেষ করা হয়েছে। বাকি বিদ্যালয়গুলোতে কাজ চলমান আছে। এই প্রকল্পের অধীনে জেলার সবগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়েই ২০২৩ সালের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নির্মাণের কাজ শেষ হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ৩০০টি গভীর নলকূপ স্থাপনে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও ২০০টি দ্বিতল ওয়াশ ব্লক নির্মাণে ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের প্রথম বরাদ্দের কাজ দ্রুত চলছে। এ কাজ শেষ হলে অবশিষ্ট বিদ্যালয়গুলোতেও কাজের বরাদ্দ আসবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
হাওর এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, হাওরাঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা এ সমস্যার কারণে সামান্য অসুস্থতার সময় বিদ্যালয়ে আসে না। ওয়াশব্লক না থাকায় ছাত্রীদের সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয়। ফলে বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার বিভিন্ন সময় কমে যায়। এ কাজ শেষ হলে বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাহিরপুর সোহালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম সরোয়ার বলেন, 'গভীর নলকূপ ও ওয়াশব্লক বিদ্যালয়ের জন্য খুবই জরুরি। আগে এ ব্যবস্থা না থাকায় নানা কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম থাকত। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে নলকূপ ও ওয়াশব্লক নির্মাণের পর এতে কিছুটা হলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বাড়বে।'
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সোলেমান মিয়া বলেন, 'বেশ আগেই আমাদের জেলায় গভীর নলকূপ ও দ্বিতল ওয়াশব্লক নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। এটা শিক্ষার্থীদের খুবই কাজে দিচ্ছে। কারণ আগে অধিকাংশ বিদ্যালয়ে এ ব্যবস্থা ছিল না। এতে বিশুদ্ধ পানির সংকটের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহারেরও সমস্যা ছিল। এখন ধীরে ধীরে এ সংকট কেটে যাচ্ছে।'
সুনামগঞ্জ গণস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, '২০২২ সালের মধ্যে হাওরের সবগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিশুদ্ধ পানির নলকূপ ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা তৈরির কাজ শেষ হবে। এ কাজ দ্রুত চলছে। এখন থেকে আর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমস্যা হবে না। কাজগুলোর গুণগত মান যাতে ভালো হয় সেদিকে আমাদের নজরদারি রয়েছে।'
এসএস/আরআর-০১