সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
মার্চ ১৪, ২০২১
১১:০৬ অপরাহ্ন
আপডেট : মার্চ ১৪, ২০২১
১১:০৬ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের জগজীবনপুরে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে লোকায়ত উৎসব বন্ধ থাকায় এই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা উৎসবে রূপ নেয়। জেলা ও জেলার বাইরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ এতে দর্শক হিসেবে অংশ নেন। বিপুল সংখ্যক নারী দর্শককেও প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে দেখা গেছে।
আজ রবিবার (১৪ মার্চ) বেলা ৩টায় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জয় বাংলা নামের ঘোড়াকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছে ওয়ান ইলেভেন নামের একটি ঘোড়া।
জগজীবনপুর গ্রামের মাঠে গতকাল শনিবার (১৩ মার্চ) এই ঘোড়দৌড় উৎসব শুরু হয়। আজ রবিবার বিকেলে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শেষ হয় ঘোড়দৌড়। প্রতিযোগিতায় সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১২২টি ঘোড়া অংশ নেয়। অল্প বয়সী ঘোড়সওয়াররা ঘোড়ার লাগাম টেনে টেনে ঘোড়াকে পোষ মানিয়ে দৌড়ে তোলেন। দ্রুতগতিতে টানা তিন চক্কর শেষে যেটি এগিয়ে থাকে, সেটিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এভাবে ক্রমিক নম্বর ফেলে বিভিন্ন ধাপে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
আয়োজক গ্রামে প্রতিযোগিতার আগের দিনে ঘোড়া নিয়ে আতিথ্য নিয়েছিলেন ঘোড়ার মালিকরা। তাদেরকে খাবারের ও থাকার ব্যবস্থা করেন অতিথি গ্রামের লোকজন। প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা জয় বাংলা, ওয়ান ইলেভেন, ফাইটার, আর্মিসেনা, ক্রসফায়ার, সোনার পুতুল, হাসন রাজা, ফায়ার সার্ভিস, জয়মানিক, রূপসী বাংলা, মহিন রাজা, বাঘবাচ্চা, ইংল্যান্ড, দোয়েল পাখি, সিন্দাবাদ খান বাহাদুর, সোনার বাংলা, উড়ালপঙ্খি, শেরে বাংলাসহ নানা নামের ঘোড়া অংশ নেয়। বাহারি নামি ঘোড়ার দৌড় দেখতে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
রবিবার বেলা ৩টায় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় জয় বাংলা ও সোনার পুতুলকে পেছনে ফেলে বিজয়ী হয় ওয়ান ইলেভেন। বিজয়ী ঘোড়ার মালিককে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
আয়োজক কমিটির উপদেষ্টা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, 'গ্রাম বাংলার উৎসব হচ্ছে ঘোড়দৌড়। আমাদের এলাকায় এর আগে নিয়মিত হতো। দীর্ঘদিন পর আবারও ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় হাজার হাজার মানুষ গ্রামীন বিনোদন উপভোগ করেছেন। জুয়াসহ নানা অসামাজিক কাজ থেকে বিরত থেকে কেবল ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এমন উৎসব উপহার দেওয়ায় সবাই প্রশংসা করছেন। নতুন প্রজন্মও ঘোড়দৌড় দেখে ঐতিহ্য রক্ষায় উজ্জীবিত হয়েছে।'
এসএস/আরআর-০২