সুনামগঞ্জে যুদ্ধাপরাধীর স্বজনের হাতে বীরাঙ্গনা লাঞ্ছিত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি


মে ১৭, ২০২১
০১:০৭ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ১৭, ২০২১
০১:১০ পূর্বাহ্ন



সুনামগঞ্জে যুদ্ধাপরাধীর স্বজনের হাতে বীরাঙ্গনা লাঞ্ছিত

বীরাঙ্গনা বীর মুক্তিযোদ্ধা পিয়ারা বেগম ( ছবিতে ডানে)

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার উজানগাঁও গ্রামের বীরাঙ্গনা বীর মুক্তিযোদ্ধা পিয়ারা বেগমকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন শাহজাহান মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তি। এ সময় বীরাঙ্গনার বোনের ছেলে বুলবুল আহমদকেও মারধর করেছেন ওই ব্যক্তি। শনিবার (১৫ মে) রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। বীরাঙ্গনার পরিবার ওই রাতেই বিষয়টি শাল্লা থানার পুলিশকে অবগত করেছে।

বীরাঙ্গনার পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় শ্যামারচর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক আজিজুর রহমানের ছেলে অভিযুক্ত শাহজাহান মিয়া এলাকায় একজন বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তার কয়েকজন স্বজন একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তালিকাভুক্ত আসামি। শনিবার রাতে শ্যামারচর বাজার থেকে উজানগাঁওয়ে এসে কোনো কারণ ছাড়াই বীরাঙ্গনা পিয়ারা বেগমের বাড়িতে গিয়ে খিস্তিখেউড় শুরু করেন শাহজাহান। বীর মুক্তিযোদ্ধা পিয়ারা বেগম ঘরের বাইরে বেরিয়ে এর প্রতিবাদ করলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন শাহজাহান। এ সময় পিয়ারা বেগমের কাপড় ধরে টানাটানি করে তাঁকে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। তখন স্বজনরা এগিয়ে এসে তাঁকে রক্ষা করেন।

বীরাঙ্গনার পরিবার জানায়, এ সময় বীরাঙ্গনার বোনের ছেলে বুলবুল আহমদ বাধা দিলে তাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন শাহজাহান মিয়া। বীরাঙ্গনা পিয়ারা বেগম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ট্রাইব্যুনালের মামলায় সাক্ষী হওয়ায় তাঁকে গালিগালাজ করা হয়েছে বলে জানান তারা। পরে রাতেই বিষয়টি শাল্লা থানার ওসিকে মুঠোফোনে অবগত করেন বীরাঙ্গনার ছেলে শিমুল হাসান মুক্তি।

বীরাঙ্গনা পিয়ারা বেগম বলেন, রাতে আমার ঘরের দরজার সামনে এসে শাহজাহান কোনো কারণ ছাড়াই গালাগালি শুরু করে। আমি বেরিয়ে জিজ্ঞেস করলে অশ্লীল ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করে সে। একপর্যায়ে কাপড় ধরে টান দিয়ে আমাকে মাটিতে ফেলে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এর আগেও অনেকবার সে আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে।

বীরাঙ্গনার ছেলে শিমুল হাসান মুক্তি বলেন, শাহজাহান একাত্তরের মানবতাবিরোধী মামলার এক আসামির ভাগ্নে। এই মামলায় আমার মাসহ একাত্তরের শহীদ পরিবারের স্বজনরা সাক্ষী। এ কারণে তারা আমাদের প্রতি ক্ষুব্ধ। শনিবার রাতে আমাদের বাড়িতে এসে গালাগালি করে আমার মাকে লাঞ্ছিত করেছে শাহজাহান। আমি বিষয়টি পুলিশকে অবগত করেছি। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুল আলম বলেন, গভীর রাতে আমাকে বিষয়টি জানানোর পর আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে।

 

এএম/আরআর-০৬