উচ্চতর গ্রেডে বেতন-ভাতা উত্তোলন : বৈষম্যের শিকার শিক্ষকরা

শামীম আহমদ, বালাগঞ্জ


জুলাই ২৮, ২০২১
০৬:৫০ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২৮, ২০২১
০৬:৫০ অপরাহ্ন



উচ্চতর গ্রেডে বেতন-ভাতা উত্তোলন : বৈষম্যের শিকার শিক্ষকরা

সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের চাকরিকাল সন্তোষজনকভাবে ১০ বছর পূর্ণ হলেও প্রথম উচ্চতর গ্রেডের বেতন-ভাতা উত্তোলনে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে তারা অভিযোগ করেছেন। উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার নিকট বার বার ধরনা দেওয়ার পরেও উচ্চতর গ্রেডের বেতন নির্ধারণ বিবরণী অনলাইনে প্রতিপাদন ও ইনক্রিমেন্ট নবায়ন করা হচ্ছে না। এতে করে ইসলাম ধর্মাবলম্বী শিক্ষকরা সদ্য শেষ হওয়া ঈদুল আজহার উৎসব ভাতাও উত্তোলন করতে পারেননি। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষকরা ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চাকরিতে যোগদান করেন। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একই পদে চাকরিকাল ১০ বছর পূর্তিতে সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলার ২৩ জন শিক্ষকের উচ্চতর গ্রেড মঞ্জুর করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ জুন উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে একটি চিঠির মাধ্যমে শিক্ষকদের তালিকাসহ চাকরির খতিয়ান বহি এবং অনলাইন বেতন নির্ধারণ ফরম উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে প্রেরণ করা হয়।

কিন্তু উচ্চতর গ্রেডের বেতন নির্ধারণ বিবরণী অনলাইনে প্রতিপাদন করা হয়নি। এতে করে ১.৭.২১ এর ইনক্রিমেন্ট অনলাইনে প্রদর্শিত হয়নি বলে শিক্ষকদের অভিযোগ। পরবর্তী সময়ে ৬ জুলাই উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে প্রেরিত একটি চিঠিতে যথাসময়ে ঈদুল আজহার উৎসব ভাতা পরিশোধের নিমিত্তে উচ্চতর গ্রেডের বেতন নির্ধারণ বিবরণী অনলাইনে প্রতিপাদন ও ইনক্রিমেন্ট নবায়নের জন্য বলা হয়। কিন্তু  উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা কোনো কাগজপত্র ছাড়াই শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেডে বেতন নির্ধারণী অনলাইনে বাতিল করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

উচ্চতর গ্রেডপ্রাপ্ত শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, সিলেট বিভাগের বেশ কয়েকটি উপজেলায় আমরা খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হয়েছি উচ্চতর গ্রেডপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ইতোমধ্যে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন। উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পলাশ দেব আর্থিক ফায়দা নেওয়ার হীন উদ্দেশে বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রকের দোহাই দিয়ে আমাদেরকে ঘোরাচ্ছেন। একেক সময় একেক ধরনের মনগড়া কথা বলে তিনি আমাদেরকে হয়রানি করছেন। শিক্ষা অফিস থেকে হিসাবরক্ষণ অফিসে দুই দফায় প্রেরিত চিঠির অনুলিপি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।

বালাগঞ্জ উপজেলার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পলাশ রায় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অন্যান্য উপজেলায় বেতন-ভাতা দেওয়া হলেও বিভাগীয় স্যারের নির্দেশ না পেলে আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।

বেতন-ভাতা প্রদান না করতে অফিসিয়াল কোনো নীতিমালা আছে কি না জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি কোনো নীতিমালা দেখাতে পারেননি।  

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিগত দুই সপ্তাহ যাবৎ সিলেট ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস হাফিজুর রহমান ভূইয়ার মুঠোফোনে ও অফিসিয়াল নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়ার পর খুদে বার্তা প্রেরণ করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। 

তবে সিলেটের ডেপুটি ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস নবদুলাল তালুকদার মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে আমার কথা বলা ঠিক হবে না। স্যারের সঙ্গে কথা বললে ভালো হতো। আমাদের অফিসের দোহাই দিয়ে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা আটকে রাখতে হবে- আমরা তো এ ধরনের কোনো বার্তা বালাগঞ্জ হিসাবরক্ষণ অফিসে দেইনি।


এসএ/আরআর-০৫