শিগগির শুরু মধ্যনগর উপজেলার কার্যক্রম : এলজিআরডি মন্ত্রী

ধর্মপাশা প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
১১:০৭ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
১১:০৭ অপরাহ্ন



শিগগির শুরু মধ্যনগর উপজেলার কার্যক্রম : এলজিআরডি মন্ত্রী

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, হাওরবাসীর বহু বছরের দাবি ছিল মধ্যনগর উপজেলা হবে। এখন সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। খুব শিগগিরই নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলায় জনবল নিয়োগের মাধ্যমে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করা হবে। এ জন্য সর্বাত্মক কাজ চলমান রয়েছে।

সুনামগঞ্জের নবগঠিত মধ্যনগর থানাকে উপজেলায় উন্নীত করায় শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মধ্যনগরের মধ্যবাজারে মধ্যনগর উপজেলা বাস্তবায়ন পরিষদের ব্যনারে আয়োজিত গণসংবর্ধনা ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে নানাভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোসহ অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনা অপপ্রচার বরদাশত করা হবে না। এমনটি হলে আমরা তা কঠোর হস্তে দমন করব।

তিনি বলেন, এত সহজে বাংলাদেশে স্বাধীনতা আসেনি। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আন্দোলন ও নিরলস সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন একটি বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মতো এমন দেশপ্রেমিক একজন নেতা, যার সঙ্গে বাংলাদেশের আর কোনো নেতার তুলনা হয় না। তিনিই স্বাধীন বাংলাদেশের একমাত্র স্বপ্নদ্রষ্টা। হাওরাঞ্চলের প্রতি জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কোনোরকম কমতি নেই। তিনি হাওরের যাবতীয় সমস্যাকে তিনি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন। হাওরবাসীর প্রতি তাঁর আন্তরিকতার অভাব নেই বলেই নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলা বাস্তবায়নের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন তিনি বাস্তবে রূপ দিয়েছেন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, হাওর এলাকায় আমার জন্ম হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করেই আমি বড় হয়েছি। সেই ছোটবেলায় আমি অগণিতবার হাওরে গিয়ে মাছ ধরেছি। সব স্মৃতি এখনও আমার মনে আছে। 

তিনি বলেন, হাওরবাসীকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সুনজরে দেখেন। তাই হাওরবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলা বাস্তবায়নে তাঁর অবদান অপরিসীম। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় হাওরের রাস্তাঘাটসহ সবকিছুতেই ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শিশু, কিশোর, কিশোরী, বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের ভাগ্য কিভাবে পরিবর্তন করা যায় সেজন্য তিনি দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি বলিষ্ঠভাবে উচ্চারণ করেন, আমাদের কেবিনেটে কেউ অসৎ ও দুর্নীতিবাজ নেই।

এম এ মান্নান বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে এই বাংলাদেশে খাদ্যাভাব, শিক্ষাঙ্গণে অরাজকতা, সন্ত্রাসসহ মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও তাঁর বলিষ্ঠ পদক্ষেপে শিক্ষাঙ্গণে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে এসেছে। এখন খাদ্যাভাব নেই। তিনি দেশবাসীর অভিভাবক হিসেবে কাজ করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে দিয়ে দেশের উন্নয়নের কাজ করান। আমি একজন পেশকার হিসেবে দায়িত্বপালন করি মাত্র।

মধ্যনগর থানা যুবলীগের সভাপতি মোস্তাক আহমেদের সঞ্চালনায় গণসংবর্ধনা ও সুধী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মধ্যনগর উপজেলা বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ তালুকদার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, স্থানীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম শামীম, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বিলকিস, মধ্যনগর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক মোবারক হোসেন, মধ্যনগর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব ফারুকী, মধ্যনগর উপজেলা বাস্তবায়ন পরিষদের সহ-সভাপতি জহিরুল হক, কুতুব উদ্দিন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক অমরেশ চৌধুরী, বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ প্রমুখ। মঞ্চে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

এর আগে সকাল সোয়া ১১টায় ধর্মপাশা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মধ্যনগর থানা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের সঙ্গে নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন দুই মন্ত্রী। বেলা ৩টার দিকে অতিথিরা মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলার মধ্যনগর ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র প্রাঙ্গণে ৪টি কৃষ্ণচূড়া গাছের চারা রোপণ এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলায় গ্রামীণ পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই স্কিমের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।


এসএ/আরআর-০৪